Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

নারায়ণী সেনার ‘চাপে’ উধাও অনন্ত

নারায়ণী সেনা নিয়ে চাপের মুখে পড়ে আপাতত গোপন ডেরায় চলে গিয়েছেন গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের (জিসিপিএ) অন্যতম উপদেষ্টা অনন্ত রায়।

অনন্ত রায়

অনন্ত রায়

কিশোর সাহা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৬ ০৩:৫৪
Share: Save:

নারায়ণী সেনা নিয়ে চাপের মুখে পড়ে আপাতত গোপন ডেরায় চলে গিয়েছেন গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের (জিসিপিএ) অন্যতম উপদেষ্টা অনন্ত রায়। জিসিপিএ সূত্রের খবর, বুধবার নারায়ণী সেনার অন্তত ১০ স্বেচ্ছাসেবককে নিয়ে তিনি অসমে চলে যান। কোকরাঝাড়ের রামফলবিলে কোচবিহারের ভারতভুক্তি দিবস পালনের প্রাথমিক অনুমতি মিলেছে। এখন সেখানেই মনোযোগ দিয়েছেন অনন্ত।

কোচবিহারের চকচকায় জিসিপিএ-র সদর দফতরের ছবিটাও পাল্টে গিয়েছে। সেখানে সাদা পোশাক, পাগড়ি, লাঠি, তরোয়াল হাতে নারায়ণী সেনাদের আর দেখা যাচ্ছে না। কোচবিহারের ভারতভুক্তি দিবস পালনের অনুমতি না মেলায় সবই যেন ভাঙা হাট। জিসিপিএ সূত্রের খবর, প্রায় দেড় বছর ধরে নারায়ণী সেনার কুচকাওয়াজ নিয়ে প্রচার, সেই সূত্রে চাঁদা তুলে বিশাল অঙ্ক জমা করা, সর্বোপরি ২৮ অগস্টের অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে (সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া) হাজির করানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরে তা যখন ভেস্তে গেল, তখন সংগঠনের অন্দরেই ক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করেছে। বেকায়দায় পড়ে অনন্তরা ‘রাষ্ট্রপতির শুভেচ্ছাপত্র, দিল্লির যোগাযোগ কাজে লাগানো হবে’ বলে অনুগামীদের আশ্বস্ত করেন। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি।

এখন অসমে দিনটি পালনের ছাড়পত্র পেয়েছেন অনন্ত। সেখানে গিয়ে অনুষ্ঠানটি করতে চাইছেন তিনি। যদিও কোচবিহারে জিসিপিএ-র সহ-সভাপতি গৌতম সিংহ এখনও বলে চলেছেন, ‘‘এখানে অনুষ্ঠানের জন্য বিশাল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এখনও কোচবিহার প্রশাসন অনুমতি দেয়নি। তবু হাল ছাড়ছি না। অনুমতির জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’’ তবে তার সঙ্গে তিনি যোগ করেছেন, ‘‘না হলে যেখানে অনুমতি মিলেছে, সেখানে হবে।’’ অনন্তদের প্রস্থান সম্পর্কে নবান্ন ওয়াকিবহাল। নারায়ণী সেনা নিয়ে এখনও কেন্দ্রের উপরে চাপ তৈরি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার কলকাতায় দলের ছাত্র সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবসে তিনি বলেছেন, ‘‘নারায়ণী সেনার নামে অশান্তি তৈরির চেষ্টা বরদাস্ত করা হবে না। বিএসএফ কেন এদের মদত দেবে! দিল্লিকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ রাজ্য প্রশাসনের বক্তব্য, কোনও ভাবেই ‘সেনা’ নাম সম্বলিত কোনও বেসরকারি সংগঠনের কুচকাওয়াজে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের উপস্থিত থাকাটা বাঞ্ছনীয় নয়। অহলুওয়ালিয়া অবশ্য বলেছেন, ‘‘জিসিপিএ-র দাবি তো অযৌক্তিক কিছু নয়। কোচবিহারের ভারতভুক্তির চুক্তিতে যা ছিল, তার রূপায়ণ চাইছেন ওঁরা। এতে দেশবিরোধী কিছু আমি দেখছি না।’’

এই টানাপড়েনের মধ্যে ২৮শের অনুষ্ঠান অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। জিএসিপিএ-র একাধিক ব্লক ও জেলা স্তরের নেতা একান্তে মানছেন, ঘরে-বাইরে এই চাপের মুখে পড়েই আপাতত ‘নিরালায়’ বসে ছক কষছেন অনন্ত ও তাঁর পারিষদেরা। দলের একাংশ চাইছেন, অনন্তবাবু দ্রুত দিল্লি গিয়ে বিজেপি নেতাদের হস্তক্ষেপ দাবি করুন। মনে করা হচ্ছে, নিরালায় বসে এই নিয়েও সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

narayan sena
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE