Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

রং না দেখে কাজ করার ডাক কেষ্টর

অনুব্রতর আগেই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ঠিক কোন রাস্তা নিতে হবে, বুথস্তরের নেতাকর্মীদের কাছে তার রূপরেখা তুলে ধরেন সভাধিপাতি বিকাশ রায়চৌধুরী, জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়, অভিজিৎ সিংহেরা।

সিউড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত

সিউড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:২১
Share: Save:

বুথ সম্মেলন থেকে রং না দেখে উন্নয়ন করার ডাক দিলেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত (কেষ্ট) মণ্ডল। পঞ্চায়েত ভোটের কথা মাথায় রেখে বুথ কর্মীদের গুরুত্ব কতটা, সেটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন কেষ্ট। তাঁর কথায়, ‘‘ওঁদের (বুথ কর্মী) গুরুত্ব অপরিসীম। তাই সম্মান তাঁদের প্রাপ্য।’’

শনিবার সকালে সিউড়ি মহকুমার অন্তর্গত এলাকার বুথভিত্তিক নেতাকর্মীদের সম্মেলন হয় সিউড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। সেখানে অনুব্রত বলেন, “মঞ্চে অনেক নেতা রয়েছেন। কিন্তু, ভুললে হবে না বুথ সভাপতিদের কথা। যাঁরা ভোট করেন। যাঁরা ভোট করান। তাঁরাই তো আসল কারিগর। আপনারা যেটা বলবেন, আমি শুনব।” সঙ্গে নীতি ও নির্দেশ মেনে না চললে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার পথও খোলা রাখা হচ্ছে। এই মর্মেও হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন কেষ্ট। নিচুতলার নেতা কর্মীদের অনুব্রতর সতর্কবাণী, “আবাস যোজনায় এ জেলা প্রায় ৬৯ হাজার বাড়ি পেয়েছে। আমি অঞ্চল সভাপতি, বুথ সভাপতিদের বলব, তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের কাউকে বাদ দেবেন না। কোন দল করে দেখার দরকার নেই। সব মানুষকে কাছে নিন। মানুষের উন্নয়ন করুন। মানুষ আপনার সঙ্গে থাকবে।”

আবাস যোজনায় দুর্নীতি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে যে অভিযোগ উপভোক্তা ও বিরোধী শিবিরের একাংশ থেকে উঠে এসেছে সেটা হল, বাড়ির পরিবর্তে টাকা চাইছেন শাসকদলের নেতারা। সেই প্রসঙ্গে অনুব্রতর হুঁশিয়ারি, ‘‘আমি ক্ষমা চেয়ে একটা কথা বলতে চাই। আবাস যোজনায় কোনও উপভোক্তার কাছ থেকে কেউ টাকা চাইবেন না। কেউ টাকা চাইলে ফোন নম্বরটা নোট করুন। চিন্তা নেই। আমি আছি তাঁকে জেলে ঢোকানোর দায়িত্ব আমি নেব। এ গরিব মানুষের বাড়ি। ১০ টাকাও কাউকে দেবেন না। কেউ চাইলে ফোন করবেন। তবে মিথ্যে অভিযোগ করবেন না।’’

অনুব্রতর আগেই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ঠিক কোন রাস্তা নিতে হবে, বুথস্তরের নেতাকর্মীদের কাছে তার রূপরেখা তুলে ধরেন সভাধিপাতি বিকাশ রায়চৌধুরী, জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়, অভিজিৎ সিংহেরা। এ দিন দুবরাজপুর, খয়রাশোল, রাজনগর, সাঁইথিয়া, সিউড়ি ১ ও ২ এবং মহম্মদবাজারের একটা অংশ যা সিউড়ি মহকুমার অন্তর্গত, তার প্রতিটি এলাকা থেকে বুথ স্তরের পাঁচ জন করে কর্মী এসেছিলেন। উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি ছিল মহিলা কর্মীদের।

কর্মীদের উদ্দেশে মন্ত্রী, নেতাদের বার্তা ছিল, ব্লক সভাপতিরা অঞ্চলে অঞ্চলে ঘুরুন। অঞ্চল সভাপতিরা বুথে বুথে খোঁজ নিন। বুথ সভাপতিরা আরও নিবিড় ভাবে মানুষের যোগাযোগ গড় তুলুন। কেননা, তাঁরাই সম্পদ। বুথ আছে বলেই অঞ্চল আছে, অঞ্চল আছে বলেই ব্লক আছে, ব্লক আছে বলে জেলায় তৃণমূল আছে, এমন মতও উঠে আসে। নেতারা বলেন, ‘‘কতগুলি ঢালাই রাস্তা পঞ্চায়েত করেছে। পঞ্চায়েত সমিতি কোন কাজ করেছে, জেলা পরিষেদ কোন কাজ করেছে। রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মসূচিই বা কী কী— সে সব বুথে বুথে প্রচার করুন। কোনও পরিবারের কাছে এমন সুযোগ না পৌঁছলে তাঁকে সরকারি সুবিধার আওতায় নিয়ে আসুন।’’ শুধু মানুষের কাছে উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দিয়েই বার্তা শেষ হচ্ছে না। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে এমন কাউকে চিহ্নিত করা, যাঁর এলাকায় গ্রহণযোগ্যতা ও সম্মান রয়েছে। বাড়িতে বসে প্রার্থী ঠিক না করার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

তবে কর্মসূচি ঠিক করে দেওয়ার সময় বিরোধীদের বৃদ্ধি রুখতেও সতর্কতা ছিল। নাম না করে হলেও লক্ষ্য মূলত বিজেপি। বুথস্তরের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তৃণমূল নেতাদের সাবধানবাণী, ‘‘কোথাও বিরোধী দলের ৫০টা লোকের মিছিল হলে সেখানে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৫০০, ১০০০ লোকের মিছিল করুন। এটা মনে করে বসে থাকবেন না, ওদের মিছিলে তো তেমন লোক হয়নি!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE