Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

জামিন-অযোগ্য ধারায় পরোয়ানা প্রসূনের নামে

প্রায় ছ’মাস আগে কর্তব্যরত ট্রাফিক কনস্টেবলের গায়ে হাত তোলার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। মামলাও দায়ের করেছিল বিধাননগর পুলিশ। শুক্রবার সেই মামলায় তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে জামিন-অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৫ ০৩:৪৪
Share: Save:

প্রায় ছ’মাস আগে কর্তব্যরত ট্রাফিক কনস্টেবলের গায়ে হাত তোলার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। মামলাও দায়ের করেছিল বিধাননগর পুলিশ। শুক্রবার সেই মামলায় তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে জামিন-অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।

এ দিন বিধাননগর এসিজেএম আদালতের অতিরিক্ত বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট অপূর্বকুমার ঘোষ ওই পরোয়ানা জারি করে নির্দেশ দেন, ১৭ জুলাইয়ের মধ্যে সাংসদকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করাতে হবে। রাতে প্রসূনবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘খবরটা শুনেছি। কিন্তু আদালতের নির্দেশ হাতে পাইনি। আমি জানি না, কী অপরাধ করেছি। তবে আইন আইনের পথে চলবে। আমি তাতে সব রকম সহযোগিতা করব।’’

পুলিশের খবর, গত ১৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় প্রসূনবাবু বাগুইআটি থেকে গাড়িতে ভিআইপি রোড ধরে উল্টোডাঙার দিকে আসছিলেন। লেক টাউনের কাছে পৌঁছে যান-বিধি ভেঙে ‘ইউ টার্ন’ করে তাঁর গাড়ি। কর্তব্যরত ট্রাফিক কনস্টেবল তারাগতি বিশ্বাস গাড়িটিকে থামান। চালকের সঙ্গে তাঁর বচসা শুরু হয়। অভিযোগ, প্রসূনবাবু গাড়ি থেকে নেমে ওই কনস্টেবলকে চড় মারেন, তাঁর কলার ধরে টানতে টানতে ট্রাফিক গার্ডে নিয়ে যান।

ট্রাফিক কনস্টেবলের কাজে বাধা দেওয়া, তাঁকে মারধরের অভিযোগে মামলা হয়। তদন্তের পরে পুলিশ আদালতে চার্জশিট পেশ করে। আদালতের নির্দেশে ওই সাংসদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি পুলিশের কাছে যাননি। ঘটনার পরেই প্রসূনবাবু অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। পুলিশকর্তারাও মুখে কুলুপ আঁটেন। উল্টে তারাগতিবাবুকে বারবার ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হলেও প্রসূনবাবু হাজির হননি বলে তদন্তকারীদের অভিযোগ। এই মর্মে আদালতে রিপোর্টও দেন তাঁরা।

পরোয়ানা তো জারি হল। ওই সাংসদকে গ্রেফতার করা হবে কি?

বিধাননগরের এডিসিপি দেবাশিস ধর বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ না-পেলে কিছু বলা সম্ভব নয়।’’ এ ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করেছেন আইনজীবীদের একাংশ। কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চৌধুরীর বক্তব্য, জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলাতেও সরকারি কৌঁসুলি জামিনের বিরোধিতা করছেন না। ফলে শাসক দলের নেতা-কর্মীরা বহু ক্ষেত্রেই জামিন পেয়ে যাচ্ছেন। ‘‘অনুব্রত মণ্ডল এবং তাপস পালের বিরুদ্ধে জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা হলেও সরকারি কৌঁসুলি জামিনের বিরোধিতা না-করায় দু’জনেরই জামিন মঞ্জুর হয়েছে,’’ উদাহরণ দেন তিনি। একই ঘটনা ঘটেছে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাঙচুরে অভিযুক্তদের ক্ষেত্রে। অভিযুক্ত সাত জনকে জামিন-অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু বারাসত আদালতে সরকারি কৌঁসুলি হাজির না-থাকায় তাঁরা জামিন পেয়ে যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE