Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না কেন, প্রশ্নের মুখে বাবুল

কাজটা ছিল পরীক্ষকের। কেন্দ্রের টাকায় উন্নয়নের নানা প্রকল্পের কাজ কতটা এগিয়েছে, কোথায় কত টাকা খরচ হয়েছে, তার হিসেব তলব করাই জেলা মনিটরিং ও ভিজিল্যান্স কমিটির চেয়ারম্যানের কাজ। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার কেন টাকা দিচ্ছে না, ক্রমাগত সেই প্রশ্ন তুলে তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা চাপে ফেললেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে। সেই সঙ্গে, বারবার আসানসোলের উন্নয়নের কথাই কেন তুলছেন সাংসদ, সেই প্রশ্ন তুলেও তাঁকে খোঁচা দিলেন বিরোধীরা।

বর্ধমানে জেলা মনিটারিং ও ভিজিল্যান্স কমিটির বৈঠকে (বাঁ দিক থেকে) বাবুল সুপ্রিয়, জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু, বর্ধমান (পূর্ব)-এর তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডল, জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন। শনিবার উদিত সিংহের তোলা ছবি।

বর্ধমানে জেলা মনিটারিং ও ভিজিল্যান্স কমিটির বৈঠকে (বাঁ দিক থেকে) বাবুল সুপ্রিয়, জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু, বর্ধমান (পূর্ব)-এর তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডল, জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন। শনিবার উদিত সিংহের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৫ ০৩:১৬
Share: Save:

কাজটা ছিল পরীক্ষকের। কেন্দ্রের টাকায় উন্নয়নের নানা প্রকল্পের কাজ কতটা এগিয়েছে, কোথায় কত টাকা খরচ হয়েছে, তার হিসেব তলব করাই জেলা মনিটরিং ও ভিজিল্যান্স কমিটির চেয়ারম্যানের কাজ। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার কেন টাকা দিচ্ছে না, ক্রমাগত সেই প্রশ্ন তুলে তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা চাপে ফেললেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে। সেই সঙ্গে, বারবার আসানসোলের উন্নয়নের কথাই কেন তুলছেন সাংসদ, সেই প্রশ্ন তুলেও তাঁকে খোঁচা দিলেন বিরোধীরা।

প্রথমবার সাংসদ নির্বাচনে জিতে কেন্দ্রের মন্ত্রী হয়েছেন বাবুল। তার ফলে জেলা মনিটরিং ও ভিজিল্যান্স কমিটির চেয়ারম্যানও হয়েছেন তিনি। শনিবারই প্রথমবার সেই বৈঠক ছিল, বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থা (বিডিএ) দফতরে। উপস্তিত ছিলেন বর্ধমানের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন, জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু-সহ অন্য আধিকারিকরা।

প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রথমেই মন্ত্রী জেলার বিভিন্ন জায়গায় জলপ্রকল্পের কাজে অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চান। মন্ত্রীর সাংসদ এলাকা কুলটিতে কেন্দ্র সরকার জলপ্রকল্পের অনুমোদন করলেও কাজ শুরু হয়নি কেন, তা-ও জানতে চান। কিন্তু আসানসোল-কুলটির প্রসঙ্গ বারবার তোলাতেই বর্ধমান (পূর্ব)-এর তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডলের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন মন্ত্রী। সভার অন্যরা যা দেখে খানিক হাসাহাসিও করেন। বৈঠক থেকে বেরিয়ে এসে সুনীলবাবু বলেন, “উনি জেলা কমিটির সভাপতি, আসানসোলের নয়। সেটাই মাঝে মাঝে মনে করিয়ে দিচ্ছিলাম।”

তবে কমিশনের যেটা প্রধান কাজ, টাকা খরচের হিসেব চাওয়া, সেখানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকেই পাল্টা চাপে ফেলেন তৃণমূল নেতারা। জলপ্রকল্প, সর্বশিক্ষা মিশনের মতো কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজ কেন আটকে আছে, তা নিয়ে প্রশ্ন করতে গেলে তাঁকে জানানো হয়, ১০০ দিনের কাজ, সর্বশিক্ষা অভিযান, প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনা, নির্মল মিশন নিয়ে বর্ধমান জেলা ৫০০ কোটি টাকা কেন্দ্রের কাছে পাবে। ওই টাকা যাতে বর্ধমান জেলা তাড়াতাড়ি পেতে পারে, তিনি বরং তার ব্যবস্থা করুন। মন্ত্রী কেন্দ্রের সঙ্গে পাওনা টাকা নিয়ে কথা বলবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

এ দিনের বৈঠকের পরে জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু সাংবাদিকদের বলেন, “কেন্দ্রের টাকা না পেলে কাজের অগ্রগতি হবে কী করে?”

বাবুল সুপ্রিয় অবশ্য বলেন, “কেন্দ্রের অর্থ এসে কোথাও পড়ে রয়েছে, কোথাও বা অর্থ ফিরে গিয়েছে বলে জানতে পারলাম।” চেয়ারম্যান হিসেবে তাঁর প্রথম দিনে তিনি সকলের কাছ থেকে সমস্যার কথা শুনেছেন, তা জানিয়েও তিনি বলেন, ‘‘বর্ধমান জেলায় উন্নয়ন নিয়ে অনেক সমস্যা রয়েছে। এই জেলা অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে।”

প্রথম দিন পরীক্ষা নিতে এসে পরীক্ষক তা হলে কত নম্বর পেলেন? তৃণমূল নেতারা বলছেন, ‘‘কাজের ইচ্ছে আছে, তবে শিক্ষানবিশ।’’ আর কী বলছেন বাবুল নিজে? ‘‘রাজনীতি বেশি দিন ধরে না করলেও চাপের মুখে আমি বরাবরই ভাল ব্যাট করি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

babul Supriyo money bjp trinamool tmc
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE