Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

আবার কালো পতাকা বাবুলকে, তরজা দুই দলে

বিজেপি-র সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতের আবহে শনিবার কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে ফের কালো পতাকা দেখাল তৃণমূল। মন্ত্রীও পাল্টা অভিযোগ করলেন, তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা জড়ো হলেও পুলিশের দেখা মেলেনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ ও কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:১১
Share: Save:

বিজেপি-র সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতের আবহে শনিবার কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে ফের কালো পতাকা দেখাল তৃণমূল। মন্ত্রীও পাল্টা অভিযোগ করলেন, তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা জড়ো হলেও পুলিশের দেখা মেলেনি। সব মিলিয়ে তৃণমূল ও বিজেপি-র পারস্পরিক ‘রণং দেহি’ মেজাজে মালদহ সরগরম রইল।

মালদহের টাউন হলে বিজেপি-র রাজ্য কমিটির দু’দিনের বৈঠক এ দিন শুরু হয়েছে। সেখানে যোগ দিতেই জেলার নতুন সার্কিট হাউসে ওঠেন বাবুল। সেই সময় তৃণমূলের জয় হিন্দ বাহিনী সার্কিট হাউসের সামনে গিয়ে বাবুলের উদ্দেশে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দেয় এবং তাঁকে কালো পতাকা দেখায়। পাল্টা বিক্ষোভ দেখান বিজেপি-র কর্মী-সমর্থকরাও।

এই পরিস্থিতিতে বাবুল টুইট করেন, ‘‘যে সার্কিট হাউসে আছি, তার দরজার বাইরে তৃণমূলের গুন্ডারা রয়েছে। যথারীতি কোনও পুলিশ নেই। নির্লজ্জ!’’ বাবুলের আরও অভিযোগ, ‘‘বিরোধীদের হেনস্থা করতে পারলে তৃণমূল নেত্রী কর্মীদের পুরস্কৃত করেন। এখন তৃণমূলের সংস্কৃতি এমনই হয়ে উঠেছে! পরিকল্পিত ভাবে আমার ঘরের জলও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাইরে থেকে জল নিয়ে এসে আমি ব্যবহার করেছি। অবশ্য তাতে আমার কোনও আক্ষেপ নেই।’’ জল-বিভ্রাটের জন্য দলের রাজ্য কমিটির বৈঠকে এক ঘণ্টা দেরিতে পৌঁছন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় এ দিন বৈঠকের ফাঁকে বলেন, ‘‘আমাদের স্লোগান অতিথি দেব ভব। আর এখানে ঘরের ছেলেকেই হেনস্থা করা হচ্ছে। জল দেওয়া হচ্ছে না।’’

জেলা প্রশাসনের কার্তাদের অবশ্য দাবি, যান্ত্রিক কারণে সার্কিট হাউসের জল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। মালদহের অতিরিক্ত জেলা শাসক আর ভিমলা বলেন, ‘‘পাম্পের মোটর বিকল হয়ে যাওয়ায় মিনিট দশেকের জন্য সার্কিট হাউসে জল বন্ধ ছিল। পরে তা মেরামত করে জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ বাবুলকে কালো পতাকা দেখানো প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনের বক্তব্য, ‘‘রাজ্যের উন্নয়ন দেখে বিজেপি নেতারা এমন প্রলাপ বকছেন। কাউকে হেনস্থা করা হয়নি। শান্তিপূর্ণ ভাবে আমাদের কর্মীরা আন্দোলন করেছে।’’

তবে বাবুল এ দিনই প্রথম তৃণমূলের বিক্ষোভের মুখে পড়েননি। ইদানীং কালে আসানসোল, দুর্গাপুর এলাকাতেও কয়েক বার তাঁকে তৃণমূলের হাতে হেনস্থা হতে হয়েছে।

এই প্রেক্ষিতেই এ দিনের বৈঠকে কৈলাস ও দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ তৃণমূলকে সূচ্যগ্র ভূমিও না ছেড়ে লড়াইয়ের পক্ষে সওয়াল করেন। পুলিশ-প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে কৈলাস বলেন, ‘‘সারদা-কাণ্ডে মালদহের এসপি জেলে যাবেন। সিবিআই দ্রুত তাঁকে ডাকবে। এ ছাড়া কলকাতার পুলিশ কমিশনার-সহ অন্য আমলাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করবে সিবিআই।’’ দিলীপবাবু বলেন, ‘‘তৃণমূল বিজেপি-কে ভয় পাচ্ছে বলেই সন্ত্রাস করছে। তবে সন্ত্রাস করে বিজেপি-কে রোখা যাবে না।’’

অন্য দিকে, প্রতারণার অভিযোগে ধৃত বিজেপি নেতা সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারকে এ দিন বিধাননগর আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। দলের রাজ্যসভা সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায় এবং সম্পাদক লকেট চট্টোপাধ্যায় এ দিন আদালতে যান। রূপা বলেন, ‘‘জয়প্রকাশবাবুর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। সরকারি আইনজীবীদের বক্তব্যে তথ্য নেই। বরং, তা অনেকটাই রাজনৈতিক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Babul Supriyo TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE