ফাইল চিত্র।
আদালতের রায়ে ডব্লিউবিসিএস অফিসার নিয়োগ বন্ধ গত অক্টোবর থেকে। অভিযোগ, তার পরেও নভেম্বরে ৯ জনকে নিয়োগের চিঠি পাঠায় রাজ্য। সে জন্য আদালত অবমাননার মামলা হয়েছে মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি, নিয়োগের অনুমতি চেয়ে রাজ্যের আর্জি মঙ্গলবার খারিজ করে দিল স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল (স্যাট)। ২৪ জানুয়ারি, মামলার পরবর্তী শুনানির দিন পর্যন্ত ডব্লিউবিসিএস (এগ্জিকিউটিভ) পদে নিয়োগ বন্ধ রাখতে বলেছে আদালত।
ডব্লিউবিসিএস অফিসার (গ্রুপ এ) নিয়োগের জন্য পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) ২০১৬ সালে যে পরীক্ষা নিয়েছিল, ২০১৭ সালে তার ফল প্রকাশিত হয়। কৃতকার্য হন ৬৭ জন। কিন্তু রাণা প্রতাপ সিংহ নামে এক জন অকৃতকার্য প্রার্থী স্যাট-এ অভিযোগ করেন, প্রার্থীদের উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য পিএসসি-র নিজস্ব উত্তরপত্রেই গলদ রয়েছে।
স্যাটে রাণা জানিয়েছেন, ডব্লিউবিসিএস ফাইনাল পরীক্ষায় মাল্টিপল চয়েস কোশ্চেন (এমসিকিউ) ছিল। সেই সব ছোট প্রশ্নের যে উত্তরপত্র তৈরি করেছে পিএসসি, তাতে ২৪টি উত্তর ভুল ছিল। তাই সঠিক উত্তর লিখেও তিনি কৃতকার্য হতে পারেননি।
পিএসসি-র উত্তরপত্রে যে ভুল আছে, কী করে বুঝলেন? রাণা জানান, তিনি আরটিআই করে পিএসসি-র এবং নিজের উত্তরপত্র দেখতে চান। পিএসসি তাতে রাজি হয়নি। স্যাটও তাঁর আবেদন নাকচ করে দেয়। এর পর হাইকোর্টের নির্দেশে উত্তরপত্র পাঠায় পিএসসি। তখনই ভুল ধরা পড়ে বলে রাণার দাবি। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের কাজের ধরন সংবিধানের ১৬৫ নম্বর ধারার অন্তর্গত। আমি তা-ই লিখেছি। অথচ পিএসসি-র নিজস্ব উত্তরপত্রে রয়েছে ১৮৫ নম্বর ধারা। এই রকম ২৪টি ‘ভুল’ দেখিয়ে আমার ৮ নম্বর কেটে নেওয়া হয়েছে।’’ এর পরেই গত বছর ১২ অক্টোবর স্যাট নির্দেশ দেয়, মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নিয়োগ বন্ধ রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: আয় কমলেও প্রকল্প চলবে, বললেন মমতা
রাণার আইনজীবী মনুজেন্দ্র নারায়ণ রায় জানান, স্যাটের নির্দেশের পরেও নভেম্বরে ৯ জনকে নিয়োগপত্র দিয়েছিল অর্থ দফতর। সে জন্য মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ করা হয়। আদালত মুখ্যসচিবের কাছে হলফনামা চেয়েছে বলে জানান সরকারি আইনজীবী গৌতম পাঠক বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন সূত্রে খবর, ওই ৯ জনকে ফের চিঠি দিয়ে কাজে যোগ দিতে বারণ করা হয়েছে।
রাজ্যের তরফে স্যাট-এ বলা হয়, রাণার বিষয়টি ‘আলাদা’ করে দেখা হবে। বাকিদের নিয়োগপত্র দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক। একই আবেদন করেছে পিএসসি-ও। কিন্তু এ দিন সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন স্যাটের বিচারক অমিত তালুকদার এবং স্যাটের সদস্য এ কে চন্দ্র। তাঁদের মন্তব্য, ‘‘এমন হলে তো গোটা পরীক্ষাটাই বাতিল করা উচিত।’’
পিএসসি-র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দীপঙ্কর দাশগুপ্তকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি বিচারাধীন, তাই মন্তব্য করব না।’’ যে বছরের পরীক্ষা নিয়ে অভিযোগ, তখনকার চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘‘ঘটনাটি সম্পর্কে আমি জানি না। মন্তব্য করা ঠিক হবে না।’’ মুখ্যসচিব মলয় দে-র সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁকে এসএমএস করা হলেও উত্তর মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy