Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

পিছিয়ে থাকা এলাকায় সভা মুখ্যমন্ত্রীর

মুখ্যমন্ত্রী নিজেই জানিয়েছেন, যাঁদের তিনি কোটি বার তোষণ করেন। আসলে পঞ্চায়েতের আগে মুখ্যমন্ত্রীর পাখির চোখ গ্রামীণ এলাকার আটপৌরে মানুষ। তাই জেলাসদর ছেড়ে মুখ্যমন্ত্রীও সে সব জায়গায় পৌঁছচ্ছেন হিসেব কষেই।

স্নেহ: পুরুলিয়ার কোটশিলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সুজিত মাহাতো।

স্নেহ: পুরুলিয়ার কোটশিলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সুজিত মাহাতো।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৫৩
Share: Save:

প্রশাসনিক সভায় হোক বা সরকারি সুবিধা বিতরণের অনুষ্ঠান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা এত দিন হয়ে এসেছে জেলা সদরে। গত ১১ ডিসেম্বর থেকে মুখ্যমন্ত্রীর জেলাসফরের গন্তব্য হল হাড়োয়া, গোসাবা, কাঁকসা, কোটশিলা, ইঁদপুর, দেদুয়া। রাজ্যের পিছিয়ে পড়া প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকা। যেখানে সংখ্যালঘু, তফসিলি ও আদিবাসীদের বাস।

মুখ্যমন্ত্রী নিজেই জানিয়েছেন, যাঁদের তিনি কোটি বার তোষণ করেন। আসলে পঞ্চায়েতের আগে মুখ্যমন্ত্রীর পাখির চোখ গ্রামীণ এলাকার আটপৌরে মানুষ। তাই জেলাসদর ছেড়ে মুখ্যমন্ত্রীও সে সব জায়গায় পৌঁছচ্ছেন হিসেব কষেই।

গত ১ ডিসেম্বর থেকে উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পশ্চিম বর্ধমান, পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার এই এলাকাগুলোয় একের পর এক জনসভায় মমতা সরকারি পরিষেবা প্রদানের মধ্য দিয়ে মানুষের মনোভাব বুঝে নিতে চাইছেন বলেও দলের একাংশ দাবি করেছেন। পঞ্চায়েত ভোট যতই এগিয়ে আসছে মুখ্যমন্ত্রীও গ্রামে গিয়ে পরিস্থিতি বুঝে নিতে চাইছেন। অনেকে আবার মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত প্রত্যন্ত এলাকায় ছিটেফোঁটা উন্নয়ন পৌঁছে দেওয়ার অছিলাও। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী গেলে তার আগে রাস্তাঘাট সারাই থেকে কিছু আটকে থাকা উন্নয়ন বা পরিষেবা প্রদানের কাজও হয়ে যায়। মঙ্গলবার পুরুলিয়ার ঝালদা-২ ব্লকের কোটশিলায় সভার শুরুতেই তিনি বলেছেন, ‘‘আমি এখানে আসার ফলে ৩০ হাজার মানুষ সরকারি পরিষেবা পাচ্ছে।’’ এই কোটশিলা আগে মাওবাদী অধ্যুষিত ছিল।

গত প়ঞ্চায়েত ভোটে বসিরহাটের জেলা পরিষদের আসন দখলে অনেকটাই পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। এ বার তা দখলে মরিয়া তৃণমূল। সে জন্যই হাড়োয়ার মতো সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় সভা করেছেন মমতা। একই ভাবে দুর্গম সুন্দরবন লাগোয়া গোসাবাও সংখ্যালঘু ও তফসিলি প্রধান এলাকা। তৃণমূলের প্রভাব থাকলেও সেখানে মাথাব্যথা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। আসানসোলের বদলে এ বার পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসায় প্রথম বার সভা করলেন মমতা। কাঁকসার একটা অংশ দুর্গাপুর-পূর্ব এবং অন্য অংশ গলসি বিধানসভার মধ্যে পড়ে। গলসি তৃণমূলের দখলে থাকলেও দুর্গাপুর-পূর্ব এখন সিপিএমের হাতে। কাঁকসা মূলত আদিবাসী প্রধান এলাকা। তৃণমূল সেখানেও প্রভাব বাড়াতে চায়। তাই মুখ্যমন্ত্রীর সভা।

আজ বুধবার বাঁকুড়ার ইঁদপুরে সভা মমতার। জঙ্গলমহল কাপের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন করার কথা তাঁর। ইঁদপুরের অধিকাংশ জায়গায় রাস্তা নেই, সেচের জলের অভাব। ছাতনা বিধানসভার অন্তর্গত ইঁদপুর। ছাতনার পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ দখলে থাকলেও গত বিধানসভা ভোটে ছাতনায় তৃণমূল হেরে গিয়েছেন।

আগামিকাল মুকুটমণিপুরের কাছে দেদুয়ায় সভা করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। এই এলাকা তৃণমূলের দখলে থাকলেও এখানে ধীরে ধীরে বিজেপির প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করছে। সে জন্যই এলাকায় বিজেপির ‘অনুপ্রবেশ’ ঠেকাতে আদিবাসী-প্রধান এই প্রত্যন্ত দেদুয়ায় মমতা সভা করতে আসবেন বলে তৃণমূলের একাংশের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE