পাঞ্চেত জলাধার থেকে ছাড়া হচ্ছে জল।— প্রতীকী ছবি।
ঝাড়খণ্ডে অতি ভারী বর্ষণের জেরে এ রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি আরও জটিল হল।
দক্ষিণবঙ্গের উপরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপটি সরে যেতে যেতেও দাঁড়িয়ে গেল ঝাড়খণ্ডের উপরে। যার ফলে মঙ্গলবার থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্মুখীন প্রতিবেশী রাজ্যটি। হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, দক্ষিণবঙ্গে এমনিতে বৃষ্টি কমতে শুরু করলেও ঝাড়খণ্ডের প্রবল জলরাশি নেমে আসছে ফের ওই দক্ষিণবঙ্গেই। যার ফলে চরম সতর্কতা জারি করা হয়েছে দুই মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি ও বর্ধমানে। আজ, বৃহস্পতিবারেও ঝাড়খণ্ডের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। তাতে দক্ষিণবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
রাজ্যের সেচ দফতর সূত্রের খবর, ঝাড়খণ্ডে প্রবল বৃষ্টির ফলে চান্ডিল ও গালুডি জলাধার থেকে জল ছাড়া হচ্ছে। জল ছাড়া হচ্ছে মাইথন, পাঞ্চেত ও তেনুঘাট জলাধার থেকেও। আর সেই জল সরাসরি এসে পড়েছে দক্ষিণবঙ্গে। ঝাড়খণ্ডের সেচমন্ত্রী চন্দ্রপ্রকাশ চৌধুরী বলেন, ঝাড়খণ্ডে এক নাগাড়ে বৃষ্টি চলায় ছোটবড় সব নদীই বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। এই অবস্থায় বাঁধগুলো থেকে জল না ছাড়লে আরও বড় বিপদ হবে। তবে জল ছাড়ার আগে পশ্চিমবঙ্গের সেচ দফতরের আধিকারিকদের জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন, পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক অবস্থানটা নৌকার মতো। উপরের দিকে জল ছাড়লে এ দিকে ভেসে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: টানা তিন দিন ধরে জলমগ্ন দক্ষিণবঙ্গ
এদিনই পাঞ্চেতের জলস্তর বিপদসীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে। সুবর্ণরেখা, কংসাবতী, অজয়, দামোদর, ময়ূরাক্ষী, মুণ্ডেশ্বরী নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। ফলে বীরভূম, বর্ধমানের জমা জল ওই সব নদীতে এসে পড়তে পারছে না। স্থানীয় বৃষ্টিপাত ও সমুদ্রে জোয়ারের ফলে প্লাবিত উত্তর ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকাও।
দিল্লি থেকে ফিরেই এদিন মমতা বন্যা পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রকে কটাক্ষ করেছেন। তাঁর অভিযোগ, ২০১২ সাল থেকে বারবার বলেও জলাধারগুলির ড্রেজিং হচ্ছে না। পলি তোলা হলে জলাধারগুলি আরও দু’লক্ষ কিউসেক জল ধরে রাখতে পারত। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘শুধুমাত্র বৃষ্টির কারণে ভেসে গেলে বুঝতাম প্রকৃতির ব্যাপার। কিন্তু জল যা ছাড়া হচ্ছে তাতে আরও দু-তিনটে জেলা ভেসে যাবে। লক্ষ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হচ্ছে।’’ রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘ঝাড়খণ্ডে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। তার সঙ্গে ডিভিসি অতিরিক্ত জল ছাড়ছে। এর ফলে হাওড়া হুগলি বেশি মাত্রায় প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ডিভিসি যে পরিমাণ জল ছেড়েছে তা ২০০৯-এর পরিমাণকেও প্রায় ছাড়িয়ে গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy