নির্বাচন কমিশন পঞ্চায়েতে মনোনয়ন পেশের মেয়াদ বাড়ানোর আদেশ দিয়েই তা প্রত্যাহার না করলে কলকাতা হাইকোর্টকে হস্তক্ষেপ করতে হত না। মঙ্গলবার এমনই ইঙ্গিত করেন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার।
এদিন তাঁর আদালতে পঞ্চায়েত মামলার শুনানি শুরু হতেই তৃণমূলের পক্ষে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় যুক্তি দেন পঞ্চায়েত আইনে ভোট নিয়ে রাজ্যের নির্বাচন কমিশনকে যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, এ নিয়ে কোনও প্রশ্ন বা বিতর্ক হলে প্রার্থী বা ভোটদাতা ভোট শেষ হওয়ার ৩০ দিনের
মধ্যে নির্দিষ্ট জায়গায় (প্রথম ধাপে সিভিল জজ জুনিয়র ডিভিশন এবং পরের ধাপে জেলা জজ) অভিযোগ জানাতে পারেন। কিন্তু কোনও অবস্থাতেই হাইকোর্ট ভোট প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করতে পারে না। ভোট প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশও জারি করতে পারে না।
এর পরেই বিচারপতি তালুকদার বলেন, সুপ্রিম কোর্ট ৯ এপ্রিল জানিয়ে দিয়েছিল, তারা রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটে হস্তক্ষেপ করতে চায় না।
একই সঙ্গে শীর্ষ আদালত এও জানিয়েছিল, হস্তক্ষেপ যেমন তারা করতে চায় না, তেমনই কমিশনের উচিত যে সব অভিযোগ উঠছে, তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া। ওই দিনই নির্বাচন কমিশন মনোনয়ন পেশের মেয়াদ বাড়িয়ে পরের দিন তা তুলে নেওয়ায় মামলা হয়েছে। বিচারপতির প্রশ্ন, কমিশন ওই ভাবে নির্দেশ প্রত্যাহার না করলে নির্বাচনে হাইকোর্টের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হত কি? নির্বাচন প্রক্রিয়ার উপরে স্থগিতাদেশ আজ বুধবারও জারি আছে। শুনানি আজও চলবে।
এর আগে বিচারপতি তালুকদার পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ দেওয়ায় তৃণমূল ও নির্বাচন কমিশন ডিভিশন বেঞ্চে যায়। বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার ও বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ সোমবার জানিয়ে দিয়েছে পঞ্চায়েত মামলা চলবে সিঙ্গল বেঞ্চেই। তার ভিত্তিতেই এ দিন থেকে ফের শুনানি শুরু হয়েছে।
তৃণমূলের সহ সভাপতি কল্যাণবাবু এ দিন মূলত সওয়াল করেন বিজেপি, সিপিএম, পিডিএস, সিপিআই ও কংগ্রেসের দায়ের করা মামলাগুলি আদৌ ধোপে টেকে কি না তা নিয়ে। তিনি দাবি করেন, বিজেপি নির্বাচন প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করেনি। তারা কমিশনের ১০ এপ্রিলের নির্দেশও (মনোনয়ন পেশের মেয়াদ প্রত্যাহার) চ্যালেঞ্জ করেনি। পিডিএস-এর আবেদন, নির্বাচন নিয়ে কমিশনের সব নির্দেশ বাতিল করা হোক। সিপিএম চাইছে, গোটা নির্বাচন প্রক্রিয়া বাতিল
করা হোক। নিয়োগ করা হোক নতুন নির্বাচন কমিশনার। ওই সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ চাইছে। কিন্তু উচ্চ আদালতের সেই এক্তিয়ারই নেই। সেই কারণেই এই সব মামলার যৌক্তিকতা নেই। সারবত্তা নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy