মানসরঞ্জন হাজরা
একই আসনে স্ত্রী এবং দাদার সঙ্গে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন তৃণমূলের এক বিদায়ী গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য। তা নিয়ে শোরগোল পড়েছিল পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারে। পাশাপাশি শুরু হয়েছিল জল্পনা—কার ভাগ্যে শেষমেশ দলের টিকিট জুটবে!
আদালতের নির্দেশে বদলে গিয়েছে পুরো ছবিটা। মানসরঞ্জন হাজরা নামে ওই প্রার্থী এ বার ভোটেই লড়তে পারবেন না বলে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এখন অভিযোগ উঠছে, কোপে পড়তে পারেন টের পেয়েই স্ত্রী ও দাদাকে দিয়ে মনোনয়ন জমা দিইয়েছিলেন মানসবাবু। তাহলে যে বকলমে পঞ্চায়েত আসনে তাঁরই প্রাধান্য বজায় থাকবে!
নন্দকুমারের সাওড়াবেড়িয়া জালপাই-১ গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে ২০১৩ সালের নির্বাচনে তৃণমূলের প্রতীকে জিতেছিলেন মানসবাবু। পরে পঞ্চায়েতে প্রধানও হন। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলে দলেরই একাংশ। প্রশাসনিক তদন্তের পরে প্রধান পদ হারাতে হয় মানসবাবুকে। তারপর তাঁর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করেন ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান নমিতা বর্মন। এ বার অভিযোগ, নিয়মমাফিক পঞ্চায়েতের সভায় হাজির থাকছেন না মানসবাবু। সে জন্য তাঁর পঞ্চায়েতের সদস্যপদ খারিজের আর্জি জানানো হয় হাইকোর্টে।
সেই মামলাতেই গত ৫ এপ্রিল হাইকোর্টের বিচারপতি অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দেন, মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মানসবাবু ভোট প্রক্রিয়ায় কোনওভাবে অংশ নিতে পারবেন না। আদালতের ওই নির্দেশের কথা নন্দকুমারের বিডিও মহম্মদ আবু তায়েব গত ১৭
এপ্রিল চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন মানসবাবুকে। বিডিও মানছেন, ‘‘নির্দেশ জানিয়ে মানসরঞ্জন হাজরাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’’
ইতিমধ্যে গত ৭ এপ্রিল গতবারের বিজয়ী আসনেই মনোনয়ন দাখিল করেছেন মানসবাবু। পাশাপাশি ওই আসনে মনোনয়ন দিয়েছেন তাঁর স্ত্রী মৈত্রেয়ী হাজরা এবং তাঁর দাদা বিশ্বরঞ্জন হাজরা। বিরোধী গোষ্ঠীর অভিযোগ, জেনেবুঝেই সব করেছেন মানসবাবু। পঞ্চায়েতের বিদায়ী উপপ্রধান নমিতাদেবীর কথায়, ‘‘৫ এপ্রিল হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে। মানসবাবুরা তিনজন মনোনয়ন দিয়েছেন তার পরে। এতেই বোঝা যাচ্ছে, প্রার্থী হতে পারবেন না বুঝেই স্ত্রী ও দাদাকে দিয়েও মনোনয়ন জমা করিয়েছিলেন মানসবাবু।’’
গোটা ঘটনায় রা কাড়তে চাননি মানসবাবু। তবে এমন পরিস্থিতিতে দৃশ্যতই অস্বস্তিতে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রের খবর, শেষমেশ হয়তো মানসবাবুর স্ত্রী-ই এই আসনে টিকিট পাবেন। মানসবাবু নিজে ও তাঁর দাদা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবেন। তৃণমূলের নন্দকুমার ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা স্থানীয় বিধায়ক সুকুমার দে বলেন, ‘‘হাইকোর্টের অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশের বিষয়টি শুনেছি। আলোচনার মাধ্যমেই ওই আসনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।’’
কার ভাগ্যে শিকে ছিঁড়বে! সাওড়াবেড়িয়া জালপাইয়ে জল্পনা চলছেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy