গণনার দিন সংঘাতে পড়ে আক্রান্ত হলেন এক মুমূর্ষু সন্তানের পিতা। ইসলামপুরের গুনজুরিয়ার বাসিন্দা আলি হোসেন বৃহস্পতিবার সকালে শিলিগুড়িতে ছেলের কাছে যাচ্ছিলেন। ছেলেকে বাঁচাতে রক্ত দিতে হবে। আত্মীয় পরিজনদের কেউ কেউ রক্ত দিতেও রাজি। কিন্তু ভোট গণনার দিন অন্য গাড়ি পাননি। পড়শিদের পরামর্শে তাই একটি অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করেছিলেন। কিন্তু তত ক্ষণে চোপড়ায় যে সংঘাত শুরু হয়ে গিয়েছে, এক কংগ্রেস কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, সে খবর জানতেন না। চোপড়ার কাছেই জাতীয় সড়কে তাঁদের গাড়িটি দাঁড় করান কয়েক জন। অ্যাম্বুল্যান্সে রোগী দেখতে না পেয়ে প্রথমে পাথর ছোড়া হয়, তার পরে সোজা গুলি। আলি হোসেনের কান ঘেঁষে বেরিয়ে যায় একটি গুলি। পাথরে আহত হন তাঁর দুই আত্মীয়।
আলি হোসেনের বক্তব্য, ‘‘আমি তো রাজনীতি করি না। কেন আমার সঙ্গে এমন হল?’’ কারা তাঁর দিকে গুলি চালিয়েছে, তা পুলিশ জানাতে পারেনি। কেউ গ্রেফতারও হয়নি। চোপড়ার বিধায়ক তৃণমূলের হামিদুল রহমানের দাবি, ‘‘আমরা ওই ঘটনা নিয়ে কিছুই জানি না। তবে ওই সময় জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছিল বিরোধীরা।’’ কংগ্রেসের পাল্টা দাবি, আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে শাসক দলেরই হাতে। তৃণমূল যা অস্বীকার করেছে।
ঘটনার সূত্রপাত এ দিন সকালে। কংগ্রেসের চোপড়া ব্লক সভাপতি অশোক রায়ের নেতৃত্বে একটি বাসে করে চোপড়া কলেজের ভোট গণনা কেন্দ্রে যাচ্ছিলেন কংগ্রেস প্রার্থীদের গণনা কর্মীরা। সামনের গাড়িতে ছিলেন বিজেপির গণনা কর্মীরাও। কাছাকাছি পৌঁছলে তাঁদের এগোতে বাধা দেওয়া হয়। বিজেপির গাড়িটি সেখানেই দাঁড়িয়ে পড়ে। কংগ্রেসের বাসটি আরও এগনোর চেষ্টা করে। সঙ্গে সঙ্গে সেই বাসে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। অশোকবাবু বলেন, ‘‘গণনা কেন্দ্রে পর্যন্ত ঢুকতে দেবে না। তৃণমূল কর্মীদের হাতে আমাদের তিন কর্মী আহত হন। এক জন গুলিবিদ্ধ হন।’’ তৃণমূলের হামিদুলের দাবি, ‘‘হেরে যাবে বলে বিরোধীরা অপপ্রচার করছে।’’ তবে তাঁর নিরাপত্তা রক্ষীও গুলি চালিয়েছেন বলে যে দাবি উঠেছে, তার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে হামিদুলই জানিয়েছেন। বিজেপির চোপড়া ব্লক সভাপতি অসীম ঘোষের বক্তব্য, ‘‘আমরা যখন আক্রমণের মুখে পড়ি, পুলিশ দেখিনি।’’ পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘ভুল কথা। যেখানে গোলমালের খবর শোনা গিয়েছে, সেখানেই পুলিশ গিয়েছে।’’
কিন্তু গণনা কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি অভিযোগ করে জাতীয় সড়কে বিরোধীরা যখন অবরোধ শুরু করেন, তখনও পুলিশের দেখা মেলেনি। সেখানেই আক্রান্ত হন আলি হোসেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy