Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ন’মাসের টানা ‘লড়াই’, তবু কি নামবে নতুন রেক

মেট্রো সূত্রে খবর, এই সব কারণেই ন’মাস ধরে চেষ্টার পরে নতুন রেক চালুর দিন-ক্ষণ প্রায় ঠিক হয়ে গেলেও, তা ঘোষণা করতে এখনও দ্বিধা রয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষের। মেট্রোকর্তাদের আশঙ্কা, এই বুঝি শুরুর আগেই নতুন সমস্যা হয়!

মেট্রোর নয়া রেক। নিজস্ব চিত্র

মেট্রোর নয়া রেক। নিজস্ব চিত্র

ফিরোজ ইসলাম
শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৮ ০২:০১
Share: Save:

গত বছর জুলাই মাসে চেন্নাই থেকে তাদের আনা হয়েছিল মহা সমারোহে। দাবি করা হয়েছিল, আধুনিক প্রযুক্তিতে সজ্জিত সেই দু’টি মেট্রো রেক চালু হলে অনেকটাই কমবে মেট্রো রেলের সমস্যা। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল, সমস্যা কমার বদলে বেড়েই চলেছে। কখনও প্রযুক্তিগত ত্রুটিতে থমকে গেল পরীক্ষামূলক দৌড়, কখনও আবার বালির বস্তা চাপিয়ে রেকের ভার বহন ক্ষমতা পরীক্ষা করতে গিয়ে একের পর এক ভেঙে গেল ঝাঁকুনি কমানোর জন্য কামরার চাকায় লাগানো ‘হেলিক্যাল স্প্রিং’। ন’মাস ধরে মেট্রো রেকের এমন হাজারো নিত্য নতুন অসুখ সামলানোর পর মেট্রো কর্তারা বলছেন, “একটা অভিজ্ঞতা হল বটে!”

মেট্রো সূত্রে খবর, এই সব কারণেই ন’মাস ধরে চেষ্টার পরে নতুন রেক চালুর দিন-ক্ষণ প্রায় ঠিক হয়ে গেলেও, তা ঘোষণা করতে এখনও দ্বিধা রয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষের। মেট্রোকর্তাদের আশঙ্কা, এই বুঝি শুরুর আগেই নতুন সমস্যা হয়!

বাংলা নববর্ষের দিনে নতুন রেক চালানোর পরিকল্পনা থাকলেও তা বাস্তবায়িত হবে কি না, নির্ভর করছে পরীক্ষামূলক দৌড় ভালয় ভালয় মেটার উপরে। সূত্রের খবর, অন্তত দু’দফায় রেকগুলির পরীক্ষামূলক দৌড় শুরু করার পরেও প্রযুক্তিগত কারণে তা বাতিল করতে বাধ্য হন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। জানুয়ারি মাসে ট্র্যাকে চলার সময় নতুন রেক কতটা ভার বইতে পারে, তা পরীক্ষা করার জন্য কামরায় বালির বস্তা রেখে ‘লোডটেস্টিং’ চলছিল। ওই পরীক্ষায় সফল হলে দোলের সময়েই সাধারণ মানুষের জন্য চালু করা যেত নতুন রেক দু’টি।

কিন্তু, ওই পরীক্ষা চলাকালীন ঝাঁকুনি কমানোর কাজে ব্যবহৃত সাসপেনশন নিয়ে সমস্যা শুরু হয়। ভাঙে হেলিক্যাল স্প্রিং। বাধ্য হয়ে পরীক্ষামূলক দৌড় স্থগিত করে দু’মাস ধরে দু’টি রেকের সব ক’টি কামরার চাকায় লাগানো ওই স্প্রিং বদলানোর কাজ করেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।

গত সপ্তাহের মাঝামাঝি থেকে ফের রেকগুলির পরীক্ষামূলক দৌড় শুরু হয়েছে। যাত্রা পথের পুরোটা প্রত্যেকটি কামরার চাকা ঠিকমতো পেরোতে পারছে কিনা তা দেখার জন্য ‘অ্যাক্সল-কাউন্টার’ পরীক্ষা করছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। ওই পরীক্ষায় ট্রেনের লাইনচ্যুত হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না তা ধরা যায়। সিগন্যালিং ব্যবস্থায় ট্রেন কেমন কাজ করছে তা দেখার জন্য ‘অডিও ফ্রিকোয়েন্সি ট্র্যাক সার্কিট’ পরীক্ষাও করছেন মেট্রো কর্তারা।

এর পরে রেকের গতি, দোলন ও তাপমাত্রা সংক্রান্ত পরীক্ষা বাকি থাকবে। কলকাতা মেট্রোর সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৫৫ কিলোমিটার। তার চেয়ে বেশি গতিতে রেক ছুটিয়ে দেখা হবে তা কেমন চলছে। ঝাঁকুনি কেমন ও ব্রেক কষার সময় কতটা তাপ উৎপন্ন হচ্ছে, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে। এই নতুন রেকগুলিতে ব্রেক কষার সময় শক্তি সাশ্রয় হওয়ার কথা। সব ঠিক থাকলে তবেই ‘কমিশনার অব রেলওয়ে’ সেফটির ছাড়পত্র মিলবে।

মেট্রোর এক কর্তা জানান, এত দিন কলকাতা মেট্রোয় যে ধরনের রেক চলেছে, এই রেকগুলি প্রযুক্তিগত ভাবে তার থেকে অনেকটাই আলাদা। আগামী দিনে এমন রেক নিয়েই কাজ করতে হবে। ফলে গোটা পর্বের অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে কাজে লাগবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE