Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

লন্ডন ডায়েরি

২০১৭-তে বেশ কয়েক বার টেলিভিশনের পরদায় দেখা গিয়েছে নীলকে; ওয়েস্টমিনস্টার ও লন্ডন ব্রিজ এবং পার্সনস গ্রিন স্টেশনে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর তিনি সাংবাদিকদের সামনে বয়ান দিয়েছেন।

দায়িত্বভার: নীল বসু

দায়িত্বভার: নীল বসু

শ্রাবণী বসু
শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৮ ০৬:০০
Share: Save:

ব্রিটেনে শান্তিরক্ষায় গুরুদায়িত্ব বাঙালির

ব্রিটেনে পুলিশের চাকরিতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেতে চলেছেন এক বাঙালি, নীল বসু। বাঙালি বাবা ও ইংরেজ মায়ের সন্তান নীল ২১ মার্চ স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডে কাউন্টার-টেররিজম বিভাগের নবনিযুক্ত প্রধান হিসাবে কাজ শুরু করবেন। গত তিন বছর ধরে তিনি ব্রিটিশ পুলিশের এই বিভাগে আছেন। ২০১৭-তে বেশ কয়েক বার টেলিভিশনের পরদায় দেখা গিয়েছে নীলকে; ওয়েস্টমিনস্টার ও লন্ডন ব্রিজ এবং পার্সনস গ্রিন স্টেশনে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর তিনি সাংবাদিকদের সামনে বয়ান দিয়েছেন। গত বছর ম্যাঞ্চেস্টার অ্যারিনার পপ কনসার্ট আর ফিন্সবেরি পার্ক মসজিদের বাইরে সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘটনার পর কাউন্টার-টেররিজমের কাজ ব্রিটেনে খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নীল বলেছেন, ‘কাউন্টার-টেররিজম বিভাগকে নেতৃত্ব দেওয়া খুব গর্বের। আমার কাছে এটা একটা চ্যালেঞ্জও। সবিনয়ে কাঁধে তুলে নিচ্ছি এই গুরুদায়িত্ব।’

অনন্য ইতিহাস

‘গুহা আর গোপন কুঠুরিতে লুকিয়ে রাখো ছবিগুলো, কোনও ভাবেই যেন একটা ছবিও দেশ ছেড়ে বাইরে না যায়।’ ১৯৪০-এ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ন্যাশনাল গ্যালারির মহামূল্যবান ছবিগুলো সম্পর্কে বলেছিলেন ব্রিটেনের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল। ’৪০-এর গ্রীষ্মে ফ্রান্স ও নেদারল্যান্ডসের পতন হয়, ব্রিটিশ সেনা ডানকার্ক-এ পিছু হটতে বাধ্য হয়। ব্রিটেনে জার্মান সেনার পা রাখা মনে হচ্ছিল শুধু সময়ের অপেক্ষা, তাই ন্যাশনাল গ্যালারির ছবিগুলো বাঁচানোর একটা পরিকল্পনা তৈরি আশু প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। কেউ বলেছিলেন, জাহাজে চাপিয়ে ছবিগুলো কানাডায় পাঠিয়ে দেওয়া হোক। ন্যাশনাল গ্যালারির তৎকালীন অধীক্ষক কেনেথ ক্লার্কের চিন্তার শেষ নেই, জাহাজও তো আক্রান্ত হতে পারে! ক্লার্ক দেখা করলেন চার্চিলের সঙ্গে, তিনি জাহাজের পরিকল্পনা শোনামাত্র বাতিল করলেন। ঠিক হল, গ্যালারির সব ছবি সরিয়ে ফেলা হবে ওয়েলস-এর স্নোডোনিয়াতে, মানড স্লেট খনিতে। কোনও কিছু লুকানোর জন্য সেটা আদর্শ জায়গা। বিস্ফোরক দিয়ে খনির প্রবেশপথ প্রসারিত করা হয়েছিল, যাতে বড় আকারের ছবিগুলো ঢোকাতে অসুবিধে না হয়। আর্দ্রতা ও তাপমাত্রার হেরফেরে যাতে ছবি নষ্ট না হয়, তাই খনির মধ্যে তৈরি করা হয়েছিল ইটের তৈরি কয়েকটা খুদে ‘বাংলো’। ট্রাকে চাপিয়ে ওয়েলস-এ নিয়ে যেতে বানানো হয়েছিল হাতির মতো বিরাটাকৃতি বাক্স। ’৪১-এর গ্রীষ্মের মধ্যেই সব ছবি মানড-এ চলে আসে, চার বছর সেখানেই ছিল তারা। এই বসন্তে ন্যাশনাল গ্যালারি তার আর্কাইভের ২৪টি আলোকচিত্র দিয়ে সাজানো এক প্রদর্শনীতে তুলে ধরেছে ছবি-স্থানান্তরের সেই অনন্য ইতিহাস। রবিন ফ্রেন্ড নির্দেশিত তথ্যচিত্র ‘উইংড বুল ইন দি এলিফ্যান্ট কেস’ও দেখানো হবে প্রদর্শনীতে।

হিংলিশ

ভারতের যুবসমাজে অনেকেই হিন্দি-ইংরেজি বা বাংলা-ইংরেজি মিশিয়ে কথা বলেন। ইংল্যান্ডে এই প্রথম একটি স্কুলে ‘হিংলিশ’ (হিন্দি+ইংলিশ) পড়ানো শুরু হল। দ্য পোর্টসমাউথ সিক্সথ ফর্ম কলেজ কর্তৃপক্ষ অন্যতম পাঠ্য বিষয় হিসাবে হিংলিশ অফার করছেন পড়ুয়াদের, যাঁদের অনেকেই হয়তো ভবিষ্যতে ব্রেক্সিট-পরবর্তী ব্রিটেনে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে চাইবেন। স্কুলের বয়ান, দক্ষিণ এশিয়ায় হিংলিশের ব্যবহার ব্যাপক হারে বাড়ছে, তাই এটা নিয়ে পড়াশোনা করলে পড়ুয়াদের পরে ভারতীয় সংস্থাগুলির হয়ে কাজ করতে সুবিধা হবে। এর মধ্যেই ১৮ জন পড়ুয়া হিংলিশ কোর্সে নাম লিখিয়েছে। অচিরেই ব্রিটিশদের মুখে হয়তো শোনা যাবে ‘চলো, শপিং চলতে হ্যায়’ বা ‘আই লাভ ইউ, মেরি জান!’

উৎসবের রুটি

সুস্বাদু: হট ক্রস বান

সামনেই ইস্টার, আর এই সময় যে খাবারগুলো খাওয়া হয় তার মধ্যে একটা হল হট ক্রস বান। এই খাবার নিয়ে একটা ছোটদের ছড়াও প্রচলিত: ওয়ান আ পেনি, টু আ পেনি, হট ক্রস বানস...। এ বছর অবশ্য হট ক্রস বানের দাম বাড়তে পারে, কারণ ক্যালিফর্নিয়ায় কিশমিশের কমতি। গত বছর দাবানলে ক্যালিফর্নিয়ার হাজার হাজার একর আঙুরখেত পুড়ে গেছে, আঙুর আর কিশমিশ দুয়েরই তাই অভাব, দামও চড়া। মনে করা হয়, সেন্ট আলবানস-এ জন্ম এই খাবারের, বানিয়েছিলেন ব্রাদার টমাস রক্লিফ নামের এক সাধু, ১৩৬১ সালে। মাখনের সঙ্গে এই রুটি গরম খাওয়াই চল।

নাম-মাহাত্ম্য

ব্রিটেন জুড়ে মোট ১০০৫টা রাস্তা আছে শেক্সপিয়ারের নামে। তার পরেই কবি লর্ড বায়রন, তাঁর নামে আছে ৬০৮টা জায়গা। ওয়ার্ডসওয়র্থের নামে ৪৮২, শেলির নামে আছে ৪২৩টা রাস্তা। বিশ্ব বই দিবসে রয়াল মেল জানাল এই তথ্য। ভারতে কতগুলো রাস্তার নাম রবীন্দ্রনাথের নামে, জানা যায়?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE