শোকার্ত: নিহত রঞ্জন বর্মনের পরিবার। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যের বাইরে কাজ করতে গিয়ে ফের মৃত্যু হল এক শ্রমিকের। আলিপুরদুয়ার শহর সংলগ্ন দমনপুরের বাসিন্দা রঞ্জন বর্মন (৩২) নামে ওই শ্রমিক ত্রিপুরার আগরতলায় কাজ করতে গিয়েছিলেন। শনিবার রাতে রেললাইনে তাঁর ছিন্নভিন্ন দেহ মেলে।
আগরতলার বিশালগড় মহকুমার বিশালগড় থানা এলাকার উত্তরব্রজপুর এলাকায় মৃতু হয় রঞ্জনের। স্থানীয় পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন রঞ্জন। সেই সময় রেল লাইন পার হতে গিয়ে ট্রেন কাটা পড়েন ওই যুবক। তবে এ ছাড়া আর কোনও কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মাস খানেক আগে রেলের ঠিকাদারের হয়ে কাজ করতে গিয়েছিল ওই শ্রমিক। পরিবারের দাবি খুন করা হয়ে থাকতে পারে ওই যুবককে। রঞ্জনের সহকর্মীদের দাবি, সম্প্রতি ঋণ নিয়ে চিন্তিত ছিলেন তিনি। তবে রঞ্জনের স্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁর স্বামীর কোনও ঋণ ছিল না।
মাস দু’য়েক আগে এই জেলারই নর্থ পয়েন্ট এলাকার এক শ্রমিক মধু সরকারের দেহ মেলে গুজরাতে। তাঁর মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার আভারু রবীন্দ্রনাথ জানান, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব। নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্ত করা হবে।
এ দিন রঞ্জনের বাড়িতে যান বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী। সৌরভবাবু মৃতের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য করেন। তিনি বলেন, “রঞ্জন দলের কর্মী ছিলেন। আগরতলায় নির্বাচনের ফল জেনে ফিরবেন বলে স্থানীয় নেতা নিরঞ্জন দাসকে জানিয়েছিলেন। নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন অস্বাভাবিক মৃতু হল ওই শ্রমিকের। আমাদের অনুমান তাঁকে খুন করা হয়েছে।”
মৃতের সহকর্মী তপন বর্মন আগরতলা থেকে ফোনে জানান, নির্বাচনের গণনার জন্য শনিবার তাঁদের কাজ বন্ধ ছিল। সন্ধ্যায় রঞ্জনের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। সেই সময় রঞ্জনের ক্যাম্প থেকে দু’জন লাইনের ধার ধরে অন্য ক্যাম্পে খেতে আসেন। রঞ্জনকে ডাকা হলেও তিনি যাননি। রাত ন’টা নাগাদ খেয়ে ফেরার সময় তাঁর সহকর্মীরা দেখেন, রেললাইনে রঞ্জনের দেহ পড়ে। তপন বলেন, “রঞ্জন সম্প্রতি ঋণ নিয়ে চিন্তিত ছিলেন।” অন্য সহকর্মী বাপ্পা দত্ত জানান, তাঁর আট জন শ্রমিক এক সঙ্গে গিয়েছিলেন লাইনের ধারে গার্ডওয়ালের কাজ করতে। দোলের আগে তাঁরা বাড়ি চলে আসেন। কিন্তু রঞ্জন জানিয়েছিলেন, কিছু টাকা জমিয়ে মাস খানেক পরে অষ্টমীর স্নানের সময় বাড়িতে ফিরবেন।
রঞ্জনের বাবা বৃদ্ধ। অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া মেয়ে ও আড়াই বছরের একটি ছেলে রয়েছে। স্ত্রী আলপনা বর্মন জানান, ‘‘ঘটনার সামান্য আগেই প্রায় পনেরো মিনিট ধরে স্বামীর সঙ্গে কথা হয় ফোনে। কোনও অস্বাভাবিকতা ছিল না। আমাদের খাওয়া হয়েছে কি না, সে খবরও নিয়েছেন। মেয়েকে পড়াশোনা করতে বলেন। তা হলে এমন হল কী করে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy