Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

‘মামলাবাজ’ জুটিতে নাস্তানাবুদ নবান্ন

কয়েক দশক আগে কলকাতার ফুটবল ময়দানে মুখে মুখে ফিরত কৃশানু-বিকাশ জুটির কথা। বাংলার রাজনীতির ময়দানে এখন মান্নান-বিকাশ জুড়িকে নিয়ে চর্চা!

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৭ ০৩:১৯
Share: Save:

কয়েক দশক আগে কলকাতার ফুটবল ময়দানে মুখে মুখে ফিরত কৃশানু-বিকাশ জুটির কথা। বাংলার রাজনীতির ময়দানে এখন মান্নান-বিকাশ জুড়িকে নিয়ে চর্চা!

ভোটে যদি না-ও পারি, কোর্টে মারব— এই লক্ষ্যে নিশানা স্থির রেখে একের পর মামলায় রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে জেরবার করে ছাড়ছেন কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান এবং সিপিএমের বিকাশ ভট্টাচার্য। কলকাতার প্রাক্তন মেয়র বিকাশবাবু নিজেই আইনজীবী। আর বিরোধী দলনেতা মান্নানের ভূমিকা তাঁকে পাস বাড়ানোর। কোন বিষয়ে রাজ্য সরকারের কাজ নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলা যেতে পারে, বিকাশবাবুদের সঙ্গে পরামর্শ করে তা নিয়ে মামলার পথে গিয়ে সরকারকে অস্বস্তিতে রেখেছেন মান্নান।

সারদা মামলায় তিনি নিজেই ছিলেন আবেদনকারী। নারদ-কাণ্ডে জনস্বার্থের মামলা দায়ের করেছিলেন কংগ্রেসেরই অমিতাভ চক্রবর্তী। কিন্তু সদ্য পেসমেকার বসার পরেও দিল্লিতে সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে পড়েছিলেন মান্নান। দায়ের করা হয়েছিল ‘ক্যাভিয়েট’, যাতে মূল আবেদনকারীদের বক্তব্য না শুনে সর্বোচ্চ আদালত রায় না দেয়।

তৃণমূলের নেতারা আড়ালে-আবডালে মান্নানকে ‘মামলাবাজ’ বলে থাকেন ইদানীং। আর বিকাশবাবুকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ— ‘সবজান্তা’! অবিচলিত মান্নান অবশ্য ঘনিষ্ঠ মহলে বলেন, ‘‘বিধানসভার ভিতরে-বাইরে এই সরকার তো গণতন্ত্র মানে না। কিন্তু আদালতে ছাড়ব না! হয়তো এর পরে আমি আর ভোটে দাঁড়াব না। কিন্তু এমন সব বিষয় আদালতে থাকবে, পরে হলেও তৃণমূলের বহু নেতাকে হাজতে যেতে হবে।’’

বিরোধী শিবির ছেড়ে যে ভাবে একের পর এক বিধায়ক তৃণমূলে নাম লেখানোর পরেও পদ খারিজ হয়নি, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই আইনি লড়াইয়ে চলে গিয়েছেন মান্নানেরা। দলত্যাগী প্রত্যেক বিধায়ককে নিয়ে বিরোধী দলনেতার চিঠি চালাচালি হয় বিকাশবাবুর আইনি পরামর্শ নিয়েই। বিকাশবাবুরও মত, রাজ্য সরকার গণতন্ত্র মানে না। নীতি-নিয়মেরও পরোয়া করে না। তাই আদালতে গিয়ে অধিকার আদায় করে আনতে হয়। সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়, লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মতো কিছু
ব্যক্তিত্বও বিকাশবাবুদের পাশে থেকে পরামর্শ দিচ্ছেন।

বিকাশবাবুদের উপরে ভরসা রেখেই সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, জনগণের করের টাকায় রাজ্য সরকার দুর্নীতির মামলায় সুপ্রিম কোর্টে গেলে পাল্টা মামলাও হবে। সর্বোচ্চ আদালতে রাজ্য ভর্ৎসিত হওয়ায় সূর্যবাবুর দাবি, মুখ্যমন্ত্রী এ বার প্রকাশ্যে ক্ষমা চান। আর মান্নান চান, সৎসাহস থাকলে মুখ্যমন্ত্রী অভিযুক্তদের সরিয়ে দেখান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bikash ranjan bhattacharya Abdul Mannan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE