Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

ভিডিও বার্তায় অস্তিত্ব প্রমাণে মরিয়া গুরুঙ্গ

শনিবার প্রায় সাত মিনিটের ওই ভিডিওয় গুরুঙ্গ দাবি করেছেন, ‘পাহাড়ের ৯৫% মানুষ তাঁর সঙ্গেই।’ ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে তাঁদের জবাব দেওয়ারও ডাক দিয়েছেন তিনি।

বিমল গুরুঙ্গ।

বিমল গুরুঙ্গ।

কিশোর সাহা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৮ ০৩:২৩
Share: Save:

পায়ের নীচের মাটি ক্রমশ সরছে। কবে পাহাড়ে ফিরতে পারবেন, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। সুপ্রিম কোর্টে তাঁর আর্জি খারিজ হওয়ার পরে এখন প্রকাশ্যে এলে গ্রেফতার হওয়ারও সম্ভাবনা। এই অবস্থায় আরও এক বার ভিডিও বার্তা পাঠিয়ে জনসমর্থন পাওয়ার মরিয়া চেষ্টা করলেন বিমল গুরুঙ্গ। যদিও একে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিনয় শিবির। তাঁদের দাবি, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর গুরুঙ্গের রাজনৈতিক জীবন অন্তিম পর্যায়ে বলে ধরে নিয়ে গুরুঙ্গ শিবিরের অনেকেই ফোন করছেন তাঁদের।

শনিবার প্রায় সাত মিনিটের ওই ভিডিওয় গুরুঙ্গ দাবি করেছেন, ‘পাহাড়ের ৯৫% মানুষ তাঁর সঙ্গেই।’ ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে তাঁদের জবাব দেওয়ারও ডাক দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের নানা স্তরে তাঁর নিরন্তর যোগাযোগ রয়েছে বলে দাবি করেছেন। তবে শীর্ষ আদালতের রায়ে দুঃখ পেলেও বিচার ব্যবস্থাকে সম্মান করে চলবেন বলেই জানিয়েছেন গুরুঙ্গ।

তবে এই বার্তায় পাহাড়বাসীদের কেউ সাড়া দেবেন না বলে দাবি করেছেন বিনয় তামাঙ্গ, অনীত থাপাদের শিবির। অনীত বলেছেন, ‘‘পাহাড়ে ১০৪ দিন বন্‌ধ ডেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন বলেই মানুষ ওঁর পাশে নেই। এখন রায়ের পরে গোপনে বিলাসবহুল দিনযাপনের পর্বও শেষ হবে। তাই ফের লোকসভা ভোটের কথা বলে দিল্লিতে আশ্রয় ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাইছেন তিনি।’’ শুধু তা-ই নয়, বিজেপি নেতা সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়াকে সমর্থন করে জেতানো হলেও কেন তিনি বন্‌ধের সময়ে এক দিনও পাহাড়ে পা দেননি সেই জবাবও গুরুঙ্গকে দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন অনীত।

জিটিএ-এর অন্দরের খবর, শুক্রবার দুপুরে বিনয় লালকুঠিতে সাংবাদিক বৈঠক করে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়ে গুরুঙ্গ অনুগামীদের উন্নয়নে সামিল হওয়ার আর্জি জানান। এর পর থেকে দুই নেতার কেউ ফোন ধরেননি। গুরুঙ্গ-অনুগামী অনেক নেতা বিনয়-অনীতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলার কথাই জানিয়েছেন। বিনয় শিবিরের দাবি, খোদ গুরুঙ্গের আত্মীয়
তথা ফেরার এক নেতাও বন্ধুকে দিয়ে ফোন করিয়ে শান্তি-উন্নয়নে সামিল হতে চেয়েছেন।

বিনয় বলেন, ‘‘বিমল গুরুঙ্গ এত দিন ভুল বুঝিয়ে রেখেছিলেন যাঁদের, তাঁদের অনেকেই এখন ফোন করছেন। আমরা পাহাড়ের শান্তি ও উন্নয়নে সবাইকে সামিল করব।’’

জিটিএ-এর ভাইস চেয়ারম্যান অনীত থাপা বলেন, ‘‘হিংসা, রক্ত ঝরিয়ে, আগুন লাগিয়ে দাবি আদায় হবে না। বরং, অন্যের ক্ষতি করে নিজের লাভ করতে গিয়ে আইনের বেড়াজালে পড়ার আশঙ্কা। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের নির্যাস ‘ভাইরাল’ হওয়ার পরে তাই গুরুঙ্গ-সঙ্গ ছাড়তে মরিয়া সকলেই। আমাদের মোবাইলে ‘ইনকামিং’ ফোন-এর বন্যা বইছে।’’

তাঁদের দাবি, গোপন ডেরায় সেই খবর পৌঁছতেই রায় ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মাথায় ‘ভিডিও-বার্তা’য় হাজির হয়েছেন গুরুঙ্গ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE