গত জুন মাসে শেষ বার দার্জিলিং পাহাড়ে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরে বন্ধ-আন্দোলন পেরিয়ে পাহাড় আবার অনেকটাই স্বাভাবিক। ৮ মাস বাদে আগামিকাল, মঙ্গলবার ফের সেখানে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে বিমল গুরুঙ্গপন্থীরা গোলমাল বাধাতে পারে, এই আশঙ্কায় নিশ্ছিদ্র করা হচ্ছে নিরাপত্তা।
গুরুঙ্গ নিজে এখন পাহাড় থেকে হাজার দেড়েক কিলোমিটার দূরে, দিল্লিতে। তাঁর ঘনিষ্ঠরা জানাচ্ছেন, তাঁদের নেতাও চান না মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরের সময়ে পাহাড়ে কোনও গোলমাল হোক। দল সূত্রের খবর, গুরুঙ্গ দিল্লি থেকে অনুগামীদের বার্তা পাঠিয়েছেন: মুখ্যমন্ত্রীর সফরের সময়ে কোনও গোলমাল হলে সুপ্রিম কোর্টে তাঁর স্থায়ী জামিন পেতে সমস্যা হতে পারে। বরং যে অহিংস আন্দোলন চালানোর কথা তিনি শেষ বিবৃতিতে বলেছেন, সেটাই যেন অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলা হয়।
প্রশ্ন হচ্ছে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গুরুঙ্গের অনুগামীরা কি পাহাড়ে গোলমাল বাধাতে পারেন? গোয়েন্দা সূত্রে দাবি, কনভয়ের কোনও গাড়ির দিকে ঢিল ছোড়ার মতো ছোটখাট হাঙ্গামা বাধাতে তো বেশি লোকের দরকার হয় না। উদাহরণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, অতীতে সুবাস ঘিসিঙ্গের আন্দোলন স্তিমিত হওয়ার পরে শাসক দলের নেতারা সফরে গেলে সফরসঙ্গী দু’-একটি গাড়িতে ঢিল ছোড়ার চেষ্টা হয়েছিল। তাই পাহাড়ে সাদা পোশাকের শতাধিক পুলিশকে নজরদারিতে নামানো হয়েছে। বিনয় তামাঙ্গ, অনীত থাপা বা মন ঘিসিঙ্গরা অবশ্য বলছেন, এখন পাহাড়ে গোলমাল বাধাতে এলে পাহাড়বাসীরাই রুখে দেবেন।
বিনয় তামাঙ্গরা একই সঙ্গে চাইছেন, মুখ্যমন্ত্রী এই সফরে এমন বার্তা দিন যাতে পাহাড়ে তাঁদের ভিত আরও শক্ত হয়। বিনয় বলেন, ‘‘পাহাড়বাসীর দাবি যে সাংবিধানিক, সেটা সকলেই মানেন। মুখ্যমন্ত্রীও আমাদের দাবির কথা শুনেছেন। আমাদের আবেগকে মর্যাদা দিয়েই উনি (মুখ্যমন্ত্রী) জিটিএ চালানোর সুযোগও দিয়েছেন। আশা করব, পাহাড়ের মানুষই যে পাহাড় চালাবেন, সেটা আবারও স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দেবেন তিনি।’’
সরকারি সূত্রের খবর, আজ, সোমবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়ি পৌঁছবেন। বিকেলে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে দলের উত্তরবঙ্গের সাত জেলার ছাত্র-যুব সমাবেশে যোগ দেবেন। রাতে সুকনা বনবাংলোয় থাকার কথা। সেখান থেকে পরদিন হেলিকপ্টার কিংবা সড়ক পথে দার্জিলিঙে যাবেন তিনি। বুধবার উত্তরবঙ্গে পুলিশ আয়োজিত হিমাল-তরাই ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার দেবেন। পরদিন রিচমন্ডে হিলে থেকেই নানা বোর্ডের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন। ৮ ফেব্রুয়ারি পাহাড় নিয়ে চতুর্থ সর্বদল বৈঠক হবে দার্জিলিঙে। পরদিন শিলিগুড়ি হয়ে তাঁর কলকাতায় ফেরার কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy