Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

জিটিএ-র দায়িত্বে বিনয় তামাঙ্গ

নবান্নে এই ঘোষণা করে মমতা বলেন, ‘‘জিটিএ-র সকলে ইস্তফা দিয়েছেন। কিন্তু পাহাড়ের উন্নয়ন, প্রশাসনের কাজে গতি আনতে হবে।’’ এত দিন জিটিএ সচিব বরুণ রায়কে দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছিল।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:৪৩
Share: Save:

পাহাড়কে সচল করতে জিটিএ-কেই এ বার কাজে লাগাতে চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার তিনি মোর্চার আলোচনাপন্থী নেতা বিনয় তামাঙ্গকে জিটিএ-র কেয়ারটেকার চেয়ারম্যান মনোনীত করলেন। বিনয়কে মাথায় রেখে একটি অস্থায়ী বোর্ডও গড়া হয়। তাতে রয়েছেন আর এক মোর্চা নেতা অনীত থাপা। আছেন মোর্চায় গুরুঙ্গপন্থী হিসেবে পরিচিত বিধায়ক অমর সিংহ রাইও।

এ দিন নবান্নে এই ঘোষণা করে মমতা বলেন, ‘‘জিটিএ-র সকলে ইস্তফা দিয়েছেন। কিন্তু পাহাড়ের উন্নয়ন, প্রশাসনের কাজে গতি আনতে হবে।’’ এত দিন জিটিএ সচিব বরুণ রায়কে দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছিল। তাতে কিছু সমস্যা হচ্ছিল বলে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সে জন্য পাহাড়ের প্রতিনিধিদের মনোনীত করা হয়েছে।’’

পাহাড়ের দলগুলির সঙ্গে আলোচনা শুরুর পরে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালাচ্ছে রাজ্য। কিন্তু বিনয়কে মাথায় রেখে অস্থায়ী বোর্ড গঠনের ফলে কি সেই কাজ গতি পাবে? এই প্রশ্নে পাহাড়ই এখনও দ্বিধা বিভক্ত। বিশেষ করে বিমল গুরুঙ্গপন্থীরা।

বিনয় দিল্লি যাচ্ছেন শুনে মঙ্গলবার তড়িঘড়ি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে দেখা করেছিলেন রোশন গিরি-সহ গুরুঙ্গপন্থী নেতারা। যাঁর বিরুদ্ধে ইউএপিএ-তে মামলা রয়েছে, লুকআউট নোটিস আছে, তাঁর সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাতে উষ্মা জানায় রাজ্য। এর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিনয়কে মাথায় রেখে কেয়ারটেকার বোর্ডটি গড়া হল।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, অস্থায়ী বোর্ড গঠনের কথা জানার পরে সঙ্গীদের মারফত গুরুঙ্গ কেন্দ্রকে নিজের আপত্তির কথা জানান। কিন্তু কেন্দ্র তাঁকে পাল্টা বার্তায় জানিয়েছে, এই ক্ষেত্রে সংবিধানগত ভাবে তাদের কিছু করার নেই।

রাজ্যের এই সিদ্ধান্তে বিরক্ত জিএনএলএফ। বোর্ডে রয়েছেন সুবাস ঘিসিঙ্গের ছেলে মন। কিন্তু জিএনএলএফ নেতা নীরজ জিম্বা জানান, মনকে বোর্ডে রাখা নিয়ে তাঁদের আপত্তি আছে। এই নিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথাও বলেনি রাজ্য।

রাজ্য প্রশাসন সূত্রে অবশ্য বলা হচ্ছে, এই সিদ্ধান্তে একাধিক লক্ষ্য পূরণে এগোলেন মমতা। প্রথমত, এ বারে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হলে পদাধিকার বলেই বিনয়রা তাতে যোগ দিতে পারবেন। দ্বিতীয়ত, আলোচনা শুরুর পর থেকে বিনয়দের নিরাপত্তা জোগাচ্ছিল রাজ্য। এ বার সেটা সরকারি ভাবেই পাবেন তাঁরা। তৃতীয়ত, পাহাড় থেকে গুরুঙ্গকে বিচ্ছিন্ন করতে এই সিদ্ধান্ত বড় ভূমিকা নিতে পারে। সর্বোপরি, তৃণমূলের দাবি, গুরুঙ্গকে বারবার গুরুত্ব দিতে চাইছে বিজেপি ও কেন্দ্র। তা যে রাজ্য ভাল চোখে দেখছে না, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সেই বার্তাও দেওয়া হলো।

বস্তুত, রোশনদের সঙ্গে রাজনাথের বৈঠক নিয়ে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ওর (রোশনের) নামে লুকআউট নোটিস আছে। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবিধানিক পদ। আমি হলে দেখা করতাম না।’’ জবাবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘বিনয়ের নামে মামলা থাকা সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে দেখা করলেন। তা হলে বিমলের সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেখা করতে পারবেন না কেন?’’

এই সব বিতর্কের মধ্যেও প্রশাসনের আশা, এ বার পাহাড়ে স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু হবে। পাহাড়বাসীরা কিন্তু এখনও সংশয়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE