প্রায় সত্তর বছরের পুরনো ভারত-নেপাল মৈত্রী চুক্তি খতিয়ে দেখার সময় এসে গিয়েছে বলে মনে করছেন বিনয় তামাঙ্গ। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে ‘সর্বোচ্চ স্তরে’ তিনি প্রস্তাবও দিয়েছেন বলে রবিবার সুকনায় একটি জনসভায় জানালেন জিটিএ-র চেয়ারম্যান। তবে চুক্তিটি সম্পর্কে তাঁর ঠিক কী বক্তব্য, তা পরিষ্কার করে বলেননি। সভা শেষের পরে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলেও বিস্তারিত কিছু বলতে চাননি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমার যা মনে হয়েছে, তা বলেছি। আর্ন্তজাতিক বিষয়ে এর থেকে বেশি বলা সম্ভব নয়।’’
বিনয় মুখ না খুললেও মোর্চা নেতাদের একাংশের ব্যাখ্যা, ১৯৫০ সালের ভারত-নেপাল চুক্তির সঙ্গে পাহাড়ের রাজনীতি জড়িয়ে গিয়েছে। সে কারণেই দলের সভা থেকে মোর্চার সভাপতি নেপাল চুক্তি প্রসঙ্গ তুলেছেন। এই চুক্তি অনুযায়ী দু’দেশের নাগরিকরা অবাধে যাতায়াত করতে পারেন। নেপালের নাগরিকদের একাংশ পাহাড় ও সমতল শিলিগুড়িতে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। গত বছরের মাঝামাঝি দার্জিলিং পুরসভার এক মোর্চা কাউন্সিলরকে পদ থেকে অপসারণও করা হয়। কারণ, তিনি নেপাল ও ভারতে দু’জায়গারই নাগরিক, এমন নথি পাওয়া গিয়েছিল। মোর্চার কিছু নেতার বক্তব্য, অবাধে যাতায়াতের সুযোগ নিয়ে অনেকে দার্জিলিং পাহাড়ে অশান্তি তৈরি করছেন।
এ দিনের সভায় বিনয় অভিযোগ করেছেন, তাঁকে চার বার খুনের চেষ্টা হয়েছে। তার মধ্যে একবার নেপাল থেকে দুষ্কৃতীরা এসেছিল বলে অভিযোগ। সিকিম থেকে দিল্লি পালানোর সময়ে গুরুঙ্গও নেপালের ‘করিডর’ ব্যবহার করেছিলেন বলে অভিযোগ। কাঠমান্ডু হয়েই গুরুঙ্গ দিল্লি পৌঁছন বলে রাজ্যের গোয়েন্দাদের সন্দেহ। শুধু তাই নয়, পাহাড়ে আন্দোলনের সময়ে কট্টরপন্থীরা বারবার নেপালে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে বলেও অভিযোগ। দু’দেশের মধ্যে অবাধ যাতায়াতের সুযোগ না থাকলে এর কোনটাই হত না বলে দাবি। সে কারণেই বিনয় চুক্তি খতিয়ে দেখার আর্জি জানিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। মোর্চার এক কেন্দ্রীয় কমিটির নেতার কথায়, ‘‘দু’দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব থাকুক। তা নিয়ে আমাদের আপত্তি নেই। তবে কোথাও একটা রাশ টানার ব্যবস্থা দরকার। কারণ, দু’দেশের নিরাপত্তাও জড়িত।’’
এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের নেতারা মন্তব্য করতে চাননি। তবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘আসলে বিনয় নিজেকে অসুরক্ষিত ভাবছেন। থানার সব পুলিশকে নিজের নিরাপত্তায় লাগিয়েছেন। কোনও জনসমর্থন নেই শুধুমাত্র নবান্নের দয়ায় ক্ষমতায় বসেছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy