Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

রাজ্যকে সাহায্য নয় আর, দিল্লিকে আর্জি দিলীপের

স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন পালনের মতো অরাজনৈতিক কর্মসূচিতেও রক্তাক্ত বাধা পেয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে ‘অসহযোগ নীতি’ নিল বিজেপি। কলকাতায় শুক্রবার মোটরবাইক মিছিল করতে গিয়ে তৃণমূলের আক্রমণে আহত হয়ে হাসপাতালে যেতে হয়েছে যুব বিজেপি-র কর্মীদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:০৮
Share: Save:

স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন পালনের মতো অরাজনৈতিক কর্মসূচিতেও রক্তাক্ত বাধা পেয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে ‘অসহযোগ নীতি’ নিল বিজেপি। কলকাতায় শুক্রবার মোটরবাইক মিছিল করতে গিয়ে তৃণমূলের আক্রমণে আহত হয়ে হাসপাতালে যেতে হয়েছে যুব বিজেপি-র কর্মীদের। এমনকী, হাইকোর্ট নিযুক্ত স্পেশাল অফিসার রবিশঙ্কর দত্তও আক্রমণ থেকে রেহাই পাননি। সিমলায় স্বামী বিবেকানন্দের বাড়িতে বিজেপি নেতাদের যেতে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ। এর প্রতিবাদে মেয়ো রোডে অবস্থানে বসে দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বলেছি, এই ঘটনার পরে কেন্দ্র যেন আর এ রাজ্যের সরকারের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক না রাখে, তাদের সাহায্যও না করে। মুখ্যমন্ত্রী সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা মানছেন না। শুধু অন্যদের তা মেনে ওঁর সরকারকে সাহায্য করে যেতে হবে, এটা হয় না!’’ ওই অবস্থানে যোগ দেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অর্জুনরাম মেঘাওয়ালও।

যাবতীয় ধুন্ধুমারের ঘটনা এ দিন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ এবং অন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের জানিয়েছেন দিলীপবাবুরা। তারই জেরে রাজ্য সরকারের বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে আসার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী বাতিল করেছেন বলে দিলীপবাবুর দাবি। রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে দেখা করেও সমস্ত ঘটনা জানিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। ঘটনার প্রতিবাদে আজ, শনিবার রাজ্যের সব থানার সামনে তিন ঘণ্টার অবস্থান-বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে বিজেপি।

তৃণমূল যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বিজেপি-র নাম না করে কটাক্ষ করেছেন, ‘‘যারা স্বামী বিবেকানন্দকে সামনে রেখে ক্ষমতায় এসেছে, তারা তাঁকেই অসম্মান করেছে। ছবি ছিঁড়েছে।’’ তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘বিজেপি বিবেকানন্দের জন্মদিন পালনের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। বাইরে থেকে লোক এনে ডান্ডাকে ঝান্ডায় পরিণত করেছে!’’

যুব মোর্চার যাত্রা বন্ধ করার জন্য রাজ্য সরকারের আবেদন খারিজ করে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল, মিছিল চলাকালীন অপ্রীতিকর কিছু ঘটলে স্পেশাল অফিসার সংশ্লিষ্ট পুলিশ-প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে তৎক্ষণাৎ তা বন্ধ করে দেবেন। ওই মিছিল ঘিরে গোলমালের সময় এ দিন রবিশঙ্করবাবুর গাড়িও ভাঙচুর হয়। তার জেরে এ দিন ফের মামলা গড়ায় হাইকোর্টে। আদালত ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত বাইক মিছিল মুলতুবি রাখার নির্দেশ দিয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন জানিয়েছে, পুলিশ, আদালত নিযুক্ত স্পেশাল অফিসার, বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে মিছিলের নির্দিষ্ট যাত্রাপথ নিয়ে আগাম সমন্বয় বৈঠক করতে হবে আয়োজকদের। ১৫ জানুয়ারি থেকে ফের মিছিল শুরু করা যাবে। আয়োজকেরা মিছিল ১৮ জানুয়ারি শেষ করতে চেয়েছিলেন। ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, প্রয়োজনে ২০ তারিখ পর্যন্ত মিছিল করা যাবে। তবে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সাহায্য ছাড়া মিছিল করা যাবে কি না, তা দেখতে হবে। যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতিও হাসপাতালে। এই অবস্থায় ফের মিছিল হবে কি না, তা বৈঠক করে ঠিক করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE