Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

টিভি নষ্ট! বিজেপিতে হাহাকার

ত্রিপুরা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা শুরু হতেই বিজেপি পার্টি অফিসের সামনে সবাই তাসা বাজিয়ে নাচতে নাচতে আবির খেলতে ব্যস্ত। ঠিক তখন সিপিএম অফিস ডুবে থাকল অন্ধকারে৷

থমথমে: সিপিএম পার্টি অফিস সুবোধ সেন ভবন। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

থমথমে: সিপিএম পার্টি অফিস সুবোধ সেন ভবন। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

পার্থ চক্রবর্তী
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৮ ০১:৫২
Share: Save:

এক দিকে, হোলির সময় থেকেই জমিয়ে রাখা লাল আবির৷ কিন্তু খেলার কেউ নেই৷

আরেক দিকে, বেলা বাড়তেই শুরু গেরুয়া আবিরের খোঁজ৷ দুপুর হতেই যা দিয়ে শুরু হয়ে গেল উচ্ছ্বাস৷

জলপাইগুড়ির ডিবিসি রোডে সামান্য ব্যবধানে দু’টি জেলা পার্টি অফিস অবস্থিত৷ একটি সিপিএমের, অন্যটি বিজেপির৷ ত্রিপুরা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা শুরু হতেই বিজেপি পার্টি অফিসের সামনে সবাই তাসা বাজিয়ে নাচতে নাচতে আবির খেলতে ব্যস্ত। ঠিক তখন সিপিএম অফিস ডুবে থাকল অন্ধকারে৷

অথচ এমনটা হবে, ভাবতে পারেননি ওঁরা কেউই৷

ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন সমীক্ষার ফল যা-ই বলুক না কেন, জলপাইগুড়ির রাজনীতিকদের অনেকেরই ধারণা ছিল, এ বারও ফের বামেরাই সেখানে ক্ষমতায় আসবে৷ খুব বেশি হলে তাদের সেই জয়ের প্রাসাদে খানিকটা আঘাত হানতে পারে বিজেপি৷ আর তাই সকাল থেকেই সিপিএম অফিসে দলের কয়েক জন নেতা টিভি খুলে সামনে বসে পড়েছিলেন৷ উল্টো দিকে বিজেপি পার্টি অফিসের টিভিটা নষ্ট থাকায়, তা ঠিক করারও ঝুঁকি নেননি দলের জেলা নেতারা৷ পাছে টিভি ঠিক করার পরই ত্রিপুরায় দলের হার দেখতে হয়!

কিন্তু ভোট গণনা শুরু হতেই পালা বদলের ইঙ্গিত আসতে শুরু করল। তখন ছবিটা একেবারে বদলে গেল৷ সুইচ বন্ধ হয়ে গেল সিপিএম পার্টি অফিসের ভেতরে থাকা টিভির৷ আর টিভি সারাই না হওয়ায় মাঝারি নেতাদের ধমকধামক শুরু করলেন বিজেপি পার্টি অফিসে থাকা জেলা নেতারা৷ অতি দ্রুত যে টিভি সারাই সম্ভব নয়, সে কথা বুঝতে পেরে শেষ পর্যন্ত হোয়াটস্‌অ্যাপে কিংবা নেটে ফল দেখতে থাকলেন তাঁরা৷ মোবাইলে একটি করে আসনের খবর আসে, আর চেঁচিয়ে ওঠেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা।

সিপিএম সূত্রের খবর, দোলের দিনই দলের এক যুব নেতা প্রস্তাবটা দিয়েছিলেন যে, শনিবার ত্রিপুরা জয়ের পর পার্টি অফিসের সামনেই আবির খেলা হবে৷ তার সেই প্রস্তাবে রাজি হয়েছিলেন বাকি যুব ও ছাত্র নেতারাও৷ কিন্তু এ দিন সেই নেতাদের কাউকেই পার্টি অফিসের সামনে দেখা যায়নি৷ দলের জেলা সম্পাদক সলিল আচার্য বলেন, ‘‘শনিবার ফের একটা অকাল হোলির পরিকল্পনা ছিল৷ সেটা শেষ পর্যন্ত হল না ঠিকই৷ কিন্তু তা বলে আমাদের নেতা-কর্মীদের মনোবল ভাঙবে না৷ কারণ যারা মানুষের সঙ্গে থাকে তাদের মনোবল ভাঙে না৷’’

সিপিএম নেতারা যখন এমন কথা বলছেন, তখন বিজেপির উত্তরবঙ্গের সহকারী আহ্বায়ক দীপেন প্রামাণিকের কথায়, ‘‘হাত-কে অনেক হারিয়েছি৷ এ বার কমিউনিস্টদেরকেও হারালাম৷ আর তাতে করেই আমাদের কর্মীরা পঞ্চায়েতে জোড়া ফুলকে হারানোরও অক্সিজেন পেয়ে গেলেন৷’’

যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ত্রিপুরা জয়ের পর বিজেপি নেতারা যদি মনে করেন তাঁরা এ রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনেও কিছু করে দেখাবেন, তা হলে বলব, ওঁরা মুর্খের স্বর্গে বাস করছেন৷ জলপাইগুড়ির বেশির ভাগ আসনে বিজেপি প্রার্থীই দিতে পারবে না৷’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE