Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

নারদ মামলা চোখ বন্ধ করে থাকা যায় কি, প্রশ্ন কোর্টেরই

ধরা যাক, নারদ-কাণ্ড সত্যিই ঘটেছে। নির্দিষ্ট কোনও কারণে কেউ কেউ টাকা নিয়েছেন। আমরা কি তা হলে চোখ বন্ধ করে থাকতে পারি?প্রশ্নটা কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:০৬
Share: Save:

ধরা যাক, নারদ-কাণ্ড সত্যিই ঘটেছে। নির্দিষ্ট কোনও কারণে কেউ কেউ টাকা নিয়েছেন। আমরা কি তা হলে চোখ বন্ধ করে থাকতে পারি?

প্রশ্নটা কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রের। বিধানসভা ভোটের আগে নারদ নিউজের স্টিং অপারেশনে দেখানো হয়, রাজ্যের বেশ কয়েক জন নেতা-মন্ত্রী প্রচুর টাকা নিচ্ছেন। সেই অভিযোগের সত্যতা যাচাই এখনও হয়নি। তবে সেই হুল অপারেশন নিয়ে তোলপাড় চলে দেশে। জনস্বার্থে মামলাও হয় বহু। সেই মামলায় বৃহস্পতিবার ওই প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি স্বয়ং।

সেই প্রশ্নের জবাবে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) জয়ন্ত মিত্র জানান, আদালত অবশ্যই চোখ বন্ধ করে থাকবে না। কিন্তু ওটা ‘ঘুষ নেওয়া’, নাকি চাঁদা নেওয়া— আগে তা যাচাই করা দরকার।

এজি বলেন, ‘‘ঘুষ নেওয়ার ক্ষেত্রে একই সঙ্গে চাওয়া আর পাওয়ার ব্যাপার থাকে। অর্থাৎ এক জন ঘুষ চাইবেন এবং এক জন তা দেবেন। এ ক্ষেত্রে কাউকেই টাকা চাইতে দেখা যায়নি।’’ এজি-র দাবি, যদি কোনও ব্যক্তিকে কারও কাছ থেকে টাকা নিতে দেখা যায়, সেটা পারিশ্রমিকও হতে পারে। তাকে ঘুষ বলা চলে না।

স্টিং অপারেশনে টাকার যে-লেনদেন হতে দেখা গিয়েছে, তা আদৌ আদালতগ্রাহ্য অপরাধ কি না, আগে তার নিষ্পত্তি হওয়া দরকার বলে আদালতে দাবি করেন এজি। তিনি বলেন, ওই স্টিং অপারেশনের পরে তা নিয়ে অন্য কোথাও কোনও অভিযোগ জানানো হয়নি। শুধু হাইকোর্টে তিনটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে।

স্টিং অপারেশনের ভিডিও ফুটেজ যে-পেন ড্রাইভে রয়েছে, তা বিকৃত হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করেন এজি। তাঁর বক্তব্য, আইফোনে ওই স্টিং অপারেশনের ভিডিও তুলে ফুটেজ রাখা হয়েছিল ল্যাপটপে। চণ্ডীগড়ের ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি সেই ফোন ও ল্যাপটপ থেকে কিছুই পায়নি। সেই ফুটেজ পরে পেন ড্রাইভে রাখা হয়। সেই কারণেই পেন ড্রাইভ বিকৃত করার সম্ভাবনা ষোলো আনা। পেন ড্রাইভ বিকৃত করা হয়েছে কি না, তা জানতে তদন্তের প্রয়োজন আছে কি— এজি-র কাছে জানতে চান বিচারপতি মাত্রে। এজি জানান, বিষয়টি আদালতই বিবেচনা করবে।

মামলার আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আদালতে জানান, রাজ্যের এজি যে-ভাবে সওয়াল করছেন, তা দুর্ভাগ্যজনক। এজি-র পাল্টা মন্তব্য, ‘‘অভিযোগ না-থাকলে তদন্ত হবে কেন।’’ তাঁর দাবি, কারও পক্ষ নিয়ে তিনি সওয়াল করছেন না। তিনি শুধু সরকারের বক্তব্য পেশ করছেন।

আজ, শুক্রবার ফের এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Narada sting operation High court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE