—ফাইল চিত্র।
দেশের শীর্ষ আদালতে এসে কার্যত মুখ পুড়ল রাজ্য সরকার এবং নারদ মামলায় অভিযুক্ত তৃণমূলের মন্ত্রী-সাংসদদের। কলকাতা হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরের বেঞ্চ জানিয়ে দিল, নারদ-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তই বহাল থাকবে। একই সঙ্গে হাইকোর্টের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলায় শীর্ষ আদালতের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে রাজ্যকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হয়েছে।
তবে হাইকোর্ট প্রাথমিক তদন্তের জন্য সিবিআইকে যে ৭২ ঘণ্টা সময় দিয়েছিল, সুপ্রিম কোর্ট তা বাড়িয়ে এক মাস করেছে। তৃণমূলের মন্ত্রী-সাংসদদের আইনজীবী কপিল সিব্বল, অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিরা আদালতে বলেন, হাইকোর্টের রায়ে অভিযুক্তদের কার্যত দোষী ঠাউরে ফেলা হয়েছে। এর পর ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক তদন্ত শেষ করতে হলে সিবিআই ভুল পথে চালিত হবে।
বিরোধীরা বলছেন, মোদী সরকার তথা বিজেপির সঙ্গে বোঝাপড়ায় যাওয়ার জন্যই বাড়তি সময় চেয়েছিল তৃণমূল। এ দিন তা পেয়েওছে। ফলে নারদ মামলা তারা ‘সামলে নিতে পারে’। যদিও আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের মতে, ‘‘সিবিআই এক মাস সময় পেয়ে আরও আটঘাঁট বেঁধে মামলা সাজাবে।’’
আরও পড়ুন: জুটির মাঝে আমি ঢুকে পড়েছিলাম, তাই হার হল: কটাক্ষ আদিত্যনাথের
তৃণমূল নেতৃত্ব মনে করছেন, সুপ্রিম কোর্টে তাঁদের দু’টি লাভ হয়েছে। এক, হাইকোর্ট দলের নেতাদের কার্যত দোষী সাব্যস্ত করে ফেলেছিল। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, হাইকোর্টের ওই সব সিদ্ধান্ত বা পর্যবেক্ষণের ছাপ যেন তদন্তে না পড়ে। দুই, সিবিআই এফআইআর দায়ের করার পরেও তার বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে মামলা করার দরজা খুলে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
তৃণমূল নেতাদের তরফে হাজির ছিলেন সিব্বল-মনু সিঙ্ঘভি-সিদ্ধার্থ লুথরার মতো আইনজীবীরা। অন্য দিকে হাইকোর্টে মামলাকারী ব্রজেশ ঝা-র তরফে হরিশ সালভে এবং আর এক মামলাকারী অমিতাভ চক্রবর্তীর তরফে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ছিলেন।
প্রায় পৌনে দু’ঘণ্টার শুনানির শুরুতেই প্রধান বিচারপতি বলেন, দু’টি বিষয় এখানে স্পষ্ট। এক, ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি ভিডিওগুলি আসল বলে রায় দিয়েছে। দুই, অভিযুক্তরা কেউই দাবি করেননি যে ভিডিওয় তাঁদের দেখা যায়নি। সিব্বল বলেন, হাইকোর্ট ভিডিও না দেখেই রায় দিয়েছে। খেহর হাসতে হাসতে বলেন, সবাই টিভিতে ওই ভিডিও দেখেছে। সিব্বল বলেন, তৃণমূল নেতারা কোনও সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেননি। যদি তাঁদের কাছে হিসেব বহির্ভূত নগদ টাকা থাকে, তা হলে সেটা আয়কর আইনের মামলা, দুর্নীতি দমন আইনের অপরাধ নয়। তা ছাড়া ভিডিও রাখা ছিল পেন-ড্রাইভে। আইফোন-ল্যাপটপ থেকে কিছুই মেলেনি। এই যুক্তি উড়িয়ে খেহর বলেন, আপনারা বলছেন, টাকা নেননি। কিন্তু ওই ভিডিও জাল, তা বলছেন না। সিব্বলের যুক্তি , বিধানসভা ভোটের সময় ভিডিও প্রকাশ হয়। তখন কেউ মন্ত্রী ছিলেন না। খেহর বলেন, ‘স্টিং অপারেশন’ তো হয়েছিল অনেক আগে। তখন সবাই প্রভাবশালী পদে ছিলেন।
উপায় না দেখে সিব্বল ও মনু সিঙ্ঘভি বলেন, যে কোনও পুলিশ তদন্ত করুক। সিবিআই নয়। এ কথা শুনে খেহর হাসতে হাসতে বলেন, উত্তরপ্রদেশের পুলিশকে তদন্ত করতে বলি? সিব্বলরা দাবি তোলেন, আদালতের নজরদারিতে এসআইটি গঠন করে তদন্ত হোক। সেই আর্জিও খারিজ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, তিনি সিবিআইকে সন্দেহের চোখে দেখতে পারেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy