Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ডায়াবেটিক পরীক্ষার্থী আছে? আঁধারে পর্ষদ

স্কুলপ়ড়ুয়াদের একাংশ টাইপ-১ ডায়াবিটিসে ভুগছে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। ঘনঘন মূত্রত্যাগ, খিদে পাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিচ্ছে ওই সব ছাত্রছাত্রীর মধ্যে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:৩১
Share: Save:

নির্দিষ্ট সময়ে বিশেষ খাবার আর ওষুধ না-পড়লে ডায়াবিটিস রোগীদের সমস্যা হতে পারে। তাই ওই রোগে আক্রান্ত পরীক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে পরীক্ষার হলেও বিশেষ নিয়ম চালু করেছে সিবিএসই বোর্ড। এমন পরীক্ষার্থী তাদের অধীন স্কুলে আছে কি না, তা নিয়ে ধন্দে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ! ডায়াবিটিস-আক্রান্ত পরীক্ষার্থী যে তাঁদেরও থাকতে পারে, সেটা জানাই নেই পর্ষদ-কর্তাদের।

স্কুলপ়ড়ুয়াদের একাংশ টাইপ-১ ডায়াবিটিসে ভুগছে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। ঘনঘন মূত্রত্যাগ, খিদে পাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিচ্ছে ওই সব ছাত্রছাত্রীর মধ্যে। ডাক্তারেরা বলছেন, নিয়ম মেনে খাবার কিংবা জল না-খেলে ওই সব পড়ুয়ার রক্তে শর্করা-মাত্রায় গুরুতর পরিবর্তন ঘটে যেতে পারে। যেটা তাদের শরীরের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকারক। তাদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবেই পরীক্ষা কেন্দ্রে বিশেষ নিয়ম তৈরি করেছে সিবিএসই বোর্ড। অথচ ডায়াবিটিস-আক্রান্তেরা কী ভাবে কয়েক ঘণ্টা পরীক্ষা দেবে, সঙ্গে কী রাখতে পারবে— তার কোনও পরিকল্পনাই নেই পর্ষদের।

সিবিএসই বোর্ডের খবর, দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় ডায়াবিটিসে আক্রান্ত পড়ুয়ারা কয়েকটি জিনিস রাখার বিশেষ অনুমতি পাবে। চকলেট, ক্যান্ডি, সুগারের ট্যাবলেট সঙ্গে রাখা যাবে। কলা, আপেল বা স্যান্ডউইচের মতো খাবারও সঙ্গে থাকতে পারে। এই সুবিধা পাওয়ার জন্য পরীক্ষার্থীকে স্কুলের অধ্যক্ষের কাছে তার ডায়াবিটিসের চিকিৎসার যাবতীয় নথি জমা দিতে হবে। পরীক্ষা চলাকালীন পড়ুয়ার কী ধরনের খাবার প্রয়োজন, সেই সম্পর্কে চিকিৎসকের লিখিত পরামর্শপত্র পেশ করতে হবে অধ্যক্ষের কাছে।

টানা কয়েক ঘণ্টা খাবার কিংবা প্রয়োজনীয় ওষুধ না-পেলে ডায়াবিটিস-আক্রান্ত ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা দিতে সমস্যা হয়। সিবিএসই-র নতুন ব্যবস্থায় তাদের সুবিধা হবে বলেই মনে করছেন সাউথ পয়েন্ট স্কুলের অধিকর্তা কৃষ্ণ দামিনী। তাঁর কথায়, ‘‘কোনও পড়ুয়ার ডায়াবিটিস থাকলে পরীক্ষা কেন্দ্রেও যাতে সে প্রয়োজনীয় সুবিধা পায়, সে-দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।’’

ডায়াবিটিসের মতো সমস্যা তো যে-কোনও বোর্ডের পরীক্ষার্থীরই থাকতে পারে। সে-ক্ষেত্রে আইসিএসই কিংবা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কোনও নির্দেশ আছে কি? তাঁদের স্কুলে ডায়াবিটিস-আক্রান্ত কোনও পরীক্ষার্থী আছে বলে জানা নেই মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের। তাঁর কথায়, ‘‘এমন কোনও পরীক্ষার্থী আছে বলে জানি না। তাই কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার প্রশ্ন নেই। ওই রোগে আক্রান্ত কোনও পরীক্ষার্থীর খোঁজ পেলে তখন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

আইসিএসই কাউন্সিলের স্কুল অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক নবারুণ দে-ও স্বীকার করছেন, ডায়াবিটিসে আক্রান্ত ছাত্রছাত্রীদের জন্য তাঁদের প্রতিষ্ঠানে আলাদা ভাবে কোনও লিখিত নির্দেশ নেই। ‘‘তবে মৌখিক ভাবে সব স্কুলেই অসুস্থ পড়ুয়াদের বিশেষ ভাবে যত্ন নিতে বলা আছে,’’ দাবি নবারুণবাবুর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE