বিমানবন্দরের নিরাপত্তা তাদের হাতে। সেই সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিওরিটি ফোর্স (সিআইএসএফ) বা শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী এ বার পড়ুয়াদের ‘নিরাপত্তা ও সুরক্ষা’র ব্যাপারে দেশের বিভিন্ন স্কুলকে পরামর্শ দেবে। সেই তালিকায় রয়েছে এ রাজ্যের দু’টি স্কুলও। ওই বাহিনীর পেশাদারি পরামর্শের জন্য নির্দিষ্ট হারে ফি গুনতে হবে স্কুলগুলিকে।
গত বছর গুরুগ্রামে রায়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে একাদশ শ্রেণির এক পড়ুয়ার হাতে এক খুদে ছাত্র খুনের পরে এ ভাবে সাহায্যের পরিকল্পনা করেন সিআইএসএফের শীর্ষ কর্তারা। ওই কেন্দ্রীয় আধা-সামরিক বাহিনীর তরফে দেশের বিভিন্ন স্কুলের কাছে এই মর্মে প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছে।
সিআইএসএফের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইনস্পেক্টর জেনারেল তথা জনসংযোগ আধিকারিক হেমেন্দ্র সিংহ বলেন, ‘‘সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকেই দেশের বিভিন্ন স্কুলের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ২৯টি স্কুল সাড়া দিয়ে আবেদন করেছে।’’ তালিকায় রয়েছে কলকাতার লা মার্টিনিয়ার ফর বয়েজ অ্যান্ড গার্লস স্কুল এবং সোদপুর সেন্ট জেভিয়ার্স ইনস্টিটিউশন। শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী সূত্রের খবর, অগ্নি সুরক্ষা ও নিরাপত্তার ব্যাপারে পরামর্শের জন্য স্কুলগুলিকে প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা ফি দিতে হবে। এই টাকা দিতে আপত্তি নেই স্কুলগুলির। লা মার্টিনিয়ার স্কুলের সচিব সুপ্রিয় ধর বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের উন্নত নিরাপত্তা অত্যন্ত প্রয়োজন। তাই কয়েক মাস আগে সিআইএসএফের কাছ থেকে প্রস্তাবটি আসতেই রাজি হয়ে যাই।’’
অনেক স্কুলেই এখন রক্ষী, সিসি ক্যামেরা এবং অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র রয়েছে। কিন্তু স্কুল-চত্বরের কোথায় কী রকম রক্ষী রাখা প্রয়োজন, কোনও লোকের গতিবিধি কী ভাবে বুঝবেন তাঁরা, গন্ডগোল হলে কী ভাবে মোকাবিলা করতে হবে, কোন জায়গায় কী ভাবে সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে নজরদারি করতে হবে, আগুন লাগলে কী ভাবে এগোতে হবে— এই সব বিষয়ে অনেকটাই অভিজ্ঞতার ফাঁক থেকে যায়, মত স্কুলকর্তাদেরও। সেন্ট জেভিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের পরিচালন সমিতির সাধারণ সম্পাদক জ্যোতিপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনেক খরচ করে স্কুলে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হলেও ফাঁক একটা থেকেই যাচ্ছে। সেখানে সিআইএসএফের মতো সংস্থার পরামর্শ পেলে অনেক উপকার হবে।’’ বাহিনী সূত্রের খবর, তাদের প্রতিনিধিরা প্রথমে স্কুলে গিয়ে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বিষয়ে সমীক্ষা চালিয়ে রিপোর্ট বানাবেন। যে-সব ঘাটতি ধরা পড়বে, কী ভাবে সেগুলো পূরণ করা যায় এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা কী ভাবে আরও উন্নত করা যায়, তার সবিস্তার পরামর্শ দেওয়া হবে। বাহিনীর এক কর্তা বলেন, ‘‘নিরাপত্তারক্ষীদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে অনুরোধ করলে সেটাও বিবেচনা করা যেতে পারে।’’ নিরাপত্তা বিষয়ে এমন পরামর্শ এই প্রথম নয় বলেই জানান সিআইএসএফের কর্তারা। সরাসরি বাহিনী মোতায়েন না-করলেও সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ১৭০টি সংস্থায় নিরাপত্তা সংক্রান্ত পরামর্শ দেয় সিআইএসএফ। এই খাতে ২০১৭-তে তিন কোটি দু’লক্ষ টাকা আয় করেছে কেন্দ্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy