Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
জাতীয় গ্রন্থাগার

ক্যামেরা নিয়ে দুর্নীতিতে অবিলম্বে শাস্তি চায় কেন্দ্র

আলিপুর জাতীয় গ্রন্থাগারে প্রায় কোটি টাকা দিয়ে ক্যামেরা কেনা ও তার দেখভাল নিয়ে বড়সড় দুর্নীতি হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক গ্রন্থাগারের ডিরেক্টর জেনারেল অরুণকুমার চক্রবর্তীকে জানিয়ে দিল।

প্রসূন আচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:৪৮
Share: Save:

আলিপুর জাতীয় গ্রন্থাগারে প্রায় কোটি টাকা দিয়ে ক্যামেরা কেনা ও তার দেখভাল নিয়ে বড়সড় দুর্নীতি হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক গ্রন্থাগারের ডিরেক্টর জেনারেল অরুণকুমার চক্রবর্তীকে জানিয়ে দিল। সিবিআই তদন্ত এবং ‘ইন্ডিয়ান অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস-এর রিপোর্টের ভিত্তিতে মন্ত্রকের উপসচিব লিখিত ভাবে জানান, দোষীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে। দীর্ঘদিন ব্যবস্থা না নেওয়ায় গ্রন্থাগারের ডিজি-র কড়া সমালোচনা করেছে সংস্কৃতি মন্ত্রক। গ্রন্থাগারটি এই মন্ত্রকেরই অধীন। অরুণবাবু বলেছেন, ‘‘মন্ত্রকের নির্দেশ পেয়েছি। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

জাতীয় গ্রন্থাগারে দুর্মূল্য পুঁথি ও নথির মাইক্রোফিল্ম তৈরি করতে ২০১০-এ ৯৫ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা দিয়ে একটি বিদেশি ক্যামেরা কেনা হয়েছিল সংস্কৃতি মন্ত্রকের নির্দেশে। দীর্ঘদিন সেটি ফেলে রাখার পরে ব্যবহার করতে গিয়ে দেখা যায়, যে যে বৈশিষ্ট থাকার কথা ক্যামেরাটিতে তা নেই। রঙিন ছবি তুলতে কেনা হয়েছিল ক্যামেরাটি। দেখা যায়, শুধু সাদা-কালো ছবিই তোলা যায় এতে। কেনার পরে ক্যামেরাটি গ্রন্থাগারের এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়িতে সরাতে গিয়েও প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে বলে দেখানো হয়। ওই খরচ নিয়ে ২০১২-র অডিটে প্রশ্ন তোলা হয়। তখন কেন্দ্রের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত শুরু হয়।

তদন্ত করে সিবিআই গ্রন্থাগারের তৎকালীন ‘লাইব্রেরি অ্যান্ড ইনফরমেশন অফিসার’ অশোক কুমার নাথ এবং গ্রন্থাগারের একাধিক অফিসারের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করেছিল। সেই সুপারিশ গ্রন্থাগারের তৎকালীন কর্তার কাছে পাঠানো হলেও তিনি ব্যবস্থা নেননি। নতুন ডিজি আসার পরে বিষয়টি নিয়ে হৈ চৈ শুরু হলে সংস্কৃতি মন্ত্রকের নির্দেশে ফের তদন্ত শুরু করে ‘ইন্ডিয়ান অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস’ দফতর। তারাও বড়সড় দুর্নীতির সন্ধান পায়।

২৮ নভেম্বর জমা পড়া রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রায় কোটি টাকায় কেনা ক্যামেরাটি ঠিক মতো ব্যবহার করা যায়নি। এটির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আরও ৩২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় দেড় কোটি টাকা কার্যত জলে গিয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পরে দিল্লির শাস্ত্রী ভবন থেকে ৭ ডিসেম্বর গ্রন্থাগারের বর্তমান ডিজি অরুণবাবুকে জানানো হয়, অবিলম্বে দোষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ প্রসঙ্গে অরুণবাবু বলেন, ‘‘কেন্দ্রের নির্দেশ মেনেই কাজ হবে। আইন আইনের পথে চলবে। দোষী ব্যক্তি শাস্তি পাবেন।’’ দোষীদের শাস্তি চেয়ে জাতীয় গ্রন্থাগারের কর্মী সংগঠনের সম্পাদক শৈবাল চক্রবর্তীর প্রশ্ন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যেখানে দুর্নীতি দূর করে স্বচ্ছ ভারত গড়ার কথা বলছেন, সেখানে এত দিন কেন দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হল না?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

National Library Camera Corruption
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE