Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
ভারতী-তল্লাশি চলছেই

অচল নোটে ১৮০ কেজি সোনা কার!

সিআইডি সূত্রের দাবি, ২০১৬-র নভেম্বরে নোটবন্দির পরে লালবাতি লাগানো পশ্চিম মেদিনীপুর পুলিশের গাড়ির ‘পাহারায়’ বাতিল নোট কলকাতা থেকে সেখানে পৌঁছত।

ভারতী ঘোষ

ভারতী ঘোষ

শুভাশিস ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:৪৩
Share: Save:

নোটবন্দির সময় বাতিল টাকা দিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের একাধিক স্বর্ণকারের কাছ থেকে ১৮০ কিলোগ্রাম সোনা কেনা হয়েছিল বলে দাবি করল সিআইডি। তাঁদের টোপ দেওয়া হয়েছিল, পরে এর বিনিময়ে দ্বিগুণ টাকা পাইয়ে দেওয়া হবে। স্রেফ পুলিশি ক্ষমতা ফলিয়েই জেলা পুলিশের এক শীর্ষকর্তা-সহ জনা কয়েক অফিসার ওই কীর্তি করেছিলেন বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন সিআইডি-র তদন্তকারীরা। সম্প্রতি মামুদপুরের এক যুবক সোনা কেনার নামে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করায় সন্দেহ আরও জোরালো হয়েছে। ওই জেলার বেশ কয়েক জন স্বর্ণব্যবসায়ীকে ইতিমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদও করেছেন গোয়েন্দারা।

সিআইডি সূত্রের দাবি, ২০১৬-র নভেম্বরে নোটবন্দির পরে লালবাতি লাগানো পশ্চিম মেদিনীপুর পুলিশের গাড়ির ‘পাহারায়’ বাতিল নোট কলকাতা থেকে সেখানে পৌঁছত। তা দিয়েই সোনা ‘কেনা’ হয়েছিল। কয়েক জন পুলিশ অফিসারের পরিবারকেও এ নিয়ে জেরা করেছেন গোয়েন্দারা।

পুলিশ কর্তাদের সোনা দিয়ে দ্বিগুণ তো দূর, দীর্ঘদিন অপেক্ষা করে প্রাপ্য টাকাও না পেয়ে দাসপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন চন্দন মাজি নামে এক স্বর্ণব্যবসায়ী। সেই মামলায় পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ-সহ কয়েক জন পুলিশ অফিসারের বাড়িতে তল্লাশি হয়েছে। বিমল ঘোড়ই নামে এক স্বর্ণব্যবসায়ী, সার্কেল ইন্সপেক্টর শুভঙ্কর দে এবং এসআই চিত্ত পালকে গ্রেফতারও করেছে সিআইডি। মাদুরদহে ভারতীদেবীর আবাসনের কেয়ারটেকার রাজমঙ্গল সিংহকেও গ্রেফতার করেছেন তদন্তকারীরা। একই সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে প্রচুর সোনার গয়না।

এক সিআই়়ডি কর্তার অবশ্য মন্তব্য, ‘‘এ তো হিমশৈলের চূড়া মাত্র! প্রচুর সোনা ইতিমধ্যেই হয় পাচার করা হয়েছে, নয় গলিয়ে ফেলা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।’’

আরও পড়ুন: ভারতীকে ধরতে জারি গ্রেফতারি পরোয়ানা

সোনা প্রতারণার মামলায় ইতিমধ্যেই ভারতী ঘোষ ও তাঁর দেহরক্ষী সুজিত মণ্ডলের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। ভারতীদেবীর বিরুদ্ধে সরাসরি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে খড়্গপুর লোকাল থানায় পৃথক একটি মামলাও রুজু হয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, ভারতীদেবীর মাদুরদহের আবাসনে তাঁর দেহরক্ষীর যাতায়াত ছিল। সেখানেই সোনা লুকিয়ে রাখা হত। তদন্তকারীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ভারতীদেবীর দাবি, বেআইনি ভাবে তল্লাশি চলছে। তিনি বলেন, ‘‘আমি উচ্চ থেকে উচ্চতর আদালতে যাব। সিআইডির সঙ্গে আদালতে দেখা হবে।’’ যদিও সিআইডির এক কর্তার পাল্টা মন্তব্য, ‘‘ফৌজদারি কার্যবিধি মেনেই তল্লাশি হয়েছে।’’

সিআইডি সূত্রের খবর, খড়্গপুর লোকাল থানার মামলায় নাম রয়েছে ভারতী ঘোষের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত খড়্গপুর গ্রামীণ থানার প্রাক্তন ওসি রাজশেখর পাইনের। রবিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর থানার রাধাকান্তপুরে রাজশেখরের শ্বশুরবা়ড়িতে তল্লাশি চালিয়েছেন গোয়েন্দারা। রবিবার সকাল থেকে
তল্লাশি করে ১২ জনের দল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE