Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

‘বেটি বচাও’ আদতে ‘তাড়াও’: মুখ্যমন্ত্রী

সোমবার মুর্শিদাবাদ সফরে প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী শুনিয়ে এলেন, ‘বেটি বচাও’ আদতে ‘বেটি তাড়াও প্রকল্প।’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

অনল আবেদিন
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৫২
Share: Save:

দিল্লির প্রকল্প ‘বেটি বচাও বেটি পড়াও’ রাজ্যের ‘কন্যাশ্রী’র তুলনায় অনেক ‘বড়সড়’ এবং ‘কার্যকর’ বলে বিতর্ক উস্কে দিয়েছিলেন রাজ্যপাল।

তার তিন দিনের মাথায়, সোমবার মুর্শিদাবাদ সফরে প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী শুনিয়ে এলেন, ‘বেটি বচাও’ আদতে ‘বেটি তাড়াও প্রকল্প।’

সঙ্গে জুড়ে দিলেন, বিজেপি সরকারের প্রতি তাঁর চেনা ভাষায় সমালোচনা। এ দিন বহরমপুরের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্টই জানিয়ে দিলেন, বেটি পড়াও’য়ের তুলনায় তাঁর নিজের মস্তিষ্কপ্রসূত কন্যাশ্রী কতটা ভাল, ব্যাখ্যা দিয়ে বললেন, ‘‘রাজ্যের কাছ থেকে ওরা (কেন্দ্রীয় সরকার) একটু শিখুক।’’ দলের শীর্ষ নেতারা মনে করছেন, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নিন্দার পাশাপাশি রাজ্যপালের বক্তব্যেরও এ দিন একটা উপযুক্ত জবাব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কারণ, কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা যারা পায় তাদের একটা বড় অংশই গ্রামীণ কন্যা এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে রাজ্যপাল ‘বেটি বচাও’কে ঠেলে দিয়ে কন্যাশ্রীর কার্যকারিতা তুলে ধরে রাজনৈতিক মাইলেজ’ই আদায় করে নিলেন মমতা। এই দুই প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য লড়াই বেশ পুরনো। পরিস্থিতি আরও জটিল হয় ১৬ ফেব্রুয়ারি সল্টলেকের এক অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী-র মন্তব্যে— ‘‘কন্যাশ্রী সীমিত আর্থিক সাহায্য। কিন্তু বেটি পড়াও দেশ ও সমাজের উন্নয়নে মেয়েদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে।’’

বহরমপুর স্টেডিয়ামের প্রশাসনিক সভায় কার্যত এর পাল্টা জবাব দিয়ে মমতা-র বক্তব্য, ‘‘আমি মনে করি, ওটা বেটি তাড়াও প্রকল্প। সারা দেশে ১৩০ কোটি জনসংখ্যা, আর ওরা ফান্ড কত দিচ্ছে? মাত্র ১০০ কোটি! এক-একটা রাজ্য ৩ কোটির বেশি পাবে না। ফলে এক-এক জন মেয়ের ভাগ্যে ৩০ পয়সাও জুটবে না।’’ এর পর কন্যাশ্রীর সুযোগসুবিধা উঠে আসে তাঁর বক্তৃতায়—‘‘আমরা ৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছি। প্রতি বছর ১২০০ কোটি বরাদ্দ হয়। কন্যাশ্রীরা ১৮ বছর পূর্ণ হলে ২৫ হাজার টাকা পায়। আমাদের সরকার জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষের পাশে আছে।’’ এত দিন কন্যাশ্রীর মেয়েরা বছরে ৭৫০ টাকা ভাতা পেত। সেটি এপ্রিল মাস থেকে ১০০০ টাকা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন মমতা।

আরও পড়ুন: রাস্তা খারাপ,পূর্ত কর্তাকে তোপ মমতার

রাজ্যপালের মন্তব্যের পরে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছিলেন, ‘‘রাজ্যপাল পদের মেয়াদ শেষে কেশরীনাথ কি বিজেপির রাজনীতিতে ফিরতে চান?’’ আর এ দিন মমতার মন্তব্যের পর রাজ্যের নারী-শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেছেন, ‘‘বেটি বচাও-এ সচেতনতা অভিযান ছাড়া আর কিচ্ছু নেই। আমাদের কন্যাশ্রীতে সচেতনতাও রয়েছে আবার ভাতা-ও রয়েছে। তা হলে আমরা খামোখা বেটি বাচাও চালু করতে যাব কেন?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE