Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

সৌমিত্রকে সম্মানিত করে ‘আপ্লুত’ মুখ্যমন্ত্রী

মমতার জমানায় সরকারি পুরস্কার আগেও নিয়েছেন তিনি। কিন্তু সংস্কৃতি তথা বিনোদন জগতের কাছের লোক হয়ে ওঠা মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলয়ের ত্রিসীমানায় কখনওই দেখা যায়নি তাঁকে।

সাক্ষাৎ: বঙ্গ বিভূষণ অনুষ্ঠানের মঞ্চে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার শহরে।

সাক্ষাৎ: বঙ্গ বিভূষণ অনুষ্ঠানের মঞ্চে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার শহরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৭ ০২:৪৯
Share: Save:

মমতার জমানায় সরকারি পুরস্কার আগেও নিয়েছেন তিনি। কিন্তু সংস্কৃতি তথা বিনোদন জগতের কাছের লোক হয়ে ওঠা মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলয়ের ত্রিসীমানায় কখনওই দেখা যায়নি তাঁকে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পূর্বসূরি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ‘কাছের লোক’ বলে পরিচিত সেই সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ই কার্যত বেশিরভাগ আলো কাড়লেন বঙ্গ-সম্মাননার আসরে। শনি-সন্ধ্যার নজরুল মঞ্চে রাজ্যের সর্বোচ্চ সম্মান বঙ্গবিভূষণ-এর স্বীকৃতি সৌমিত্রের হাতে তুলে দিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। ঘটনাচক্রে এই দিন অর্থাৎ ২০ মে, বামজমানার অবসানে প্রথম মমতা সরকারের শপথগ্রহণের দিনও বটে। এই ‘পবিত্র, মধুর’ দিনেই সৌমিত্রকে সম্মানিত করতে পেরে তাঁরা ‘আপ্লুত, সুরভিত’ হয়েছেন বলে উদ্বেল হলেন মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠান শেষে ফেরার সময় সৌমিত্রবাবুও মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, ‘‘আমি অভিভূত। আপনাকে ধন্যবাদ জানানোর ভাষা নেই আমার।’’

পথ দুর্ঘটনার শিকার হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সৌমিত্রর নাতি অভিনেতা রণদীপ বসুর কথাও এ দিন বলেন মমতা। পারিবারিক এই বিষাদের মধ্যেও সৌমিত্র অনুষ্ঠানে এসেছেন বলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। এর আগে পাঁচ বছর আগে উত্তমকুমারের মৃত্যু দিনে মহানায়ক সম্মান গ্রহণ করা ছাড়া একবারটি চলচ্চিত্র উৎসবের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে মমতার পাশে মঞ্চে দেখা গিয়েছিল সৌমিত্রকে। বঙ্গ সম্মাননার আসরে সৌমিত্রের নাম ঘিরে কদাচিৎ জল্পনা শোনা গেলেও সম্ভবত তিনি পুরস্কার নিতে রাজি হবেন না ভেবেই এর আগে এগোয়নি রাজ্য সরকার।

প্রেজেন্ট ম্যাডাম: বঙ্গবিভূষণ অনুষ্ঠানে আমলারা।

এ দিনের সৌজন্যের আবহে অবশ্য অতীতের ছায়া পড়েনি। তবে সাম্প্রতিক অতীতে রাজ্যে খানিকটা শক্তি বাড়িয়ে নেওয়া বিজেপির উদ্দেশেও ঘুরিয়ে বার্তা উঠে এসেছে। এ রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির আবহ মনে করিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জোর গলায় বলেন, ‘‘বাংলাই পারে সবাইকে নিয়ে চলতে!’’ স্বীকৃতি-প্রাপকদের তালিকায় দৃ্শ্যতই চোখে পড়ে বৈচিত্র্যের মিশেল।

মুখ্যমন্ত্রীর ‘প্রণম্য’ বর্ষীয়ান কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, কলকাতায় থেকেই ‘বিশ্বজয়ী’ আইটিসি-গোষ্ঠীর কর্ণধার যোগেশচন্দ্র দেবেশ্বর, বাংলাদেশের রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী রেজওয়ানা বন্যা চৌধুরী থেকে শুরু করে সম্মানিত ফকিরি গান, রাভা নৃত্য, প্রশাসন বা চিকিৎসাক্ষেত্রের বিশিষ্টরাও। পাহাড় থেকে জঙ্গলমহলের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য মেলে ধরা গানবাজনায় অতুলপ্রসাদী গানের বাণী সামান্য পাল্টে গাওয়া হয়েছে, ‘বাংলা আবার জগৎসভায় শ্রেষ্ঠ আসন লবে।’

ফেসবুকেও মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, ‘‘আজকের থিম ছিল, মিলনেই ঐক্য (ইউনিটি ইজ হারমনি)। নানা ধারার শিল্পীরা সুন্দর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেছেন।’’

ছবি: সুমন বল্লভ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE