Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

জঙ্গলমহলে সাঁওতালি ভাষায় বার্তা দিলেন মমতা

বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের বোঝালেন, আদিবাসী ভোটে অন্য কেউ থাবা বসাক, তা তাঁর পছন্দ নয়।

উপহার: প্রশাসনিক জনসভায় কন্যাশ্রীদের হাতে ফুটবল তুলে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুরে।  ছবি: অভিজিৎ সিংহ

উপহার: প্রশাসনিক জনসভায় কন্যাশ্রীদের হাতে ফুটবল তুলে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুরে।  ছবি: অভিজিৎ সিংহ

নিজস্ব সংবাদদাতা
মুকুটমণিপুর শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:০০
Share: Save:

এক বার সাঁওতালি ভাষায় বলছেন, পরক্ষণেই করে দিচ্ছেন বাংলা তর্জমা। বক্তব্যের অনেকটা জুড়ে কেন্দুপাতা, বিড়িপাতা, বাবুইঘাসের উপরে ভিত্তি করে চলা জঙ্গলমহলের অর্থনীতি, যে অর্থনীতির সঙ্গে জড়িত আদিবাসীরা। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের বোঝালেন, আদিবাসী ভোটে অন্য কেউ থাবা বসাক, তা তাঁর পছন্দ নয়।

প্রশাসনিক জনসভার গোড়াতেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি সাঁওতালি ভাষা ভালবাসি। কিন্তু বলতে পারি না।’’ যদিও এর পরেই তাঁর মুখে শোনা যায়, ‘‘আলেরেন সরকার... (আমাদের সরকার) বাংলার আদিবাসী ভাইবোনেদের জন্য যে পদক্ষেপ করেছে, তা প্রশংসনীয়।’’

বাম জমানা, মাওবাদী-সন্ত্রাসের আমল এবং তৃণমূল রাজত্বে জঙ্গলমহলের মানুষের জীবনযাত্রায় কী ফারাক, সে প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘৩৪ বছরে আদিবাসী উন্নয়নে কিছুই হয়নি। মাওবাদীরা শুধু অশান্তি করেছে। আর আমরা ছ’বছরে উন্নয়ন করে দেখিয়ে দিয়েছি, আদিবাসীদের জন্য কী করা যায়।’’ জঙ্গলমহলে আদিবাসীদের একটা বড় অংশের মানুষ কেন্দুপাতার উপরে নির্ভরশীল। সে প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘কেন্দুপাতা যাঁরা তোলেন, তাঁদের জন্য পেনশন চালু হয়েছে। ভাতা চালু হয়েছে। কেন্দু পাতার দাম বাড়ানো হয়েছে।’’ জঙ্গলমহলবাসীর জন্য ২ টাকা কিলো চালের গুরুত্ব খল্লেখ করার পাশাপাশি, জঙ্গলমহলবাসীর নিজস্ব ভাষাগুলিকে সরকার যে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে, সে কথা বোঝাতে তাঁর সংযোজন: ‘‘সাঁওতালি অ্যাকাডেমি, কুড়মালি অ্যাকাডেমি, মানভূম অ্যাকাডেমি গড়া হয়েছে। অলচিকিতে পড়াশোনাও চালু হয়েছে।’’ আদিবাসীপ্রধান পর্যটনকেন্দ্র ঝিলিমিলি, মুকুটমণিপুরে ‘হোম ট্যুরিজম’ চালু করে আদিবাসীদের আয় বাড়ানোর ইচ্ছের কথাও তিনি জানিয়ে দেন। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী আক্রমণাত্মক মেজাজে। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘এত করছি, আর কোনও সরকার করে না। তার পরেও এক দল লোক আছে, যারা শুধু মিথ্যা কথা বলে বেড়ায়। কুৎসা রটায়। অপপ্রচার করে বেড়ায়। তারা চায় না, জঙ্গলমহল ভাল থাকুক, বাংলা ভাল থাকুক।’’

আরও পড়ুন: গুজরাতে ভোট দিয়ে ‘রোড শো’ প্রধানমন্ত্রীর, অভিযোগ কংগ্রেসের

আক্রমণের নিশানা কারা তা-ও স্পষ্ট মমতার কথায়। বলেন, ‘‘নতুন একটা রাজনৈতিক দল এসেছে। দলিতদের মধ্যে ভাগাভাগি করে। হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে ভাগাভাগি করে। আদিবাসীদের মধ্যে ভাগাভাগি করে। ওদের কথায় ভুল করবেন না, ওদের কথা বিশ্বাস করবেন না। ওরা চক্রান্তকারী। মনে রাখবেন, বিজেপির কথা বিশ্বাস করবেন না। আদিবাসী, তফসিলিদের ভালবাসি। আদিবাসীদের মধ্যে নতুন জোয়ার এসেছে। নতুন ভোর এসেছে।’’ বিজেপি রুখতে মমতার বিধানও সাঁওতালিতে, বাংলায় যার অর্থ—‘‘এক জোট হয়ে দাঁড়ান।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE