কোনও দিনই প্রতিমা বিসর্জনে তাঁর আপত্তি নেই, কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করেই মহরমের দিন ভাসানে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন তিনি। শনিবার সুরুচি সঙ্ঘের পুজোর উদ্বোধনের পরে নিজের বক্তৃতায় এমনটাই বোঝাতে চাইলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমার তো কোনও দিনেই বিসর্জনে আপত্তি নেই। কিন্তু রাস্তায় যদি মহরমের ভিড় হয়। তা হলে কি তার মধ্যে দিয়ে বিসর্জনের মিছিল যেতে পারে? নাকি তার জন্য পুলিশ লাঠি-গুলি চালিয়ে জায়গা করে দেবে!’’
দুর্গাপ্রতিমার ভাসানকে কেন্দ্র করে গত ক’দিনে বিস্তর জলঘোলা হয়েছে এ রাজ্যে। মামলা গড়ায় আদালত পর্যন্ত। হাইকোর্টের রায় দেখে প্রথমে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা ভাবলেও পরে সিদ্ধান্ত বদল করেছে রাজ্য। নবান্নের কর্তাদের ব্যাখ্যা, হাইকোর্টের রায়ে বিসর্জনের রাশ প্রশাসনের হাতেই রয়েছে। একাদশীর দিন বিসর্জন দিতে চাইলে পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। এবং সে ক্ষেত্রে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। শাসক দলের শীর্ষ নেতাদের দাবি, প্রায় কোনও বারোয়ারি পুজোই ১ অক্টোবর, ভাসান দিতে চাইবে না।
আরও পড়ুন: রাজ্যের নিয়ন্ত্রণেই বিসর্জন
কিন্তু মহরমের দিনে ভাসান বন্ধ করে সরকার সংখ্যালঘু তোষণ করছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। সেই অভিযোগ এর আগেও খারিজ করার চেষ্টা করেছেন মমতা। জানিয়েছেন, শুধু বিসর্জন নয়, মহরমের আগে মহড়া হিসেবে যে মিছিল হয়, তা-ও নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এ দিন বাস্তব পরিস্থিতি বুঝিয়ে তোষণের অভিযোগ তিনি আরও এক বার খণ্ডন করতে চাইলেন বলেই অনেকের মত।
বিজেপির দিকে আঙুল তুলে তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের বক্তব্য, বিসর্জন নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এই শোরগোল ইচ্ছা করেই পাকানো হয়েছে। কারণ, বাম নেতারা ভুলে গেলেও তাঁদের আমলেও পরপর দু’বছর মহরমের দিনে বিসর্জন বন্ধ ছিল। তখন সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি এখনকার মতো উত্তেজক ছিল না, মনে করিয়ে দিয়ে ওই নেতারা বলছেন, ‘‘তখন কিন্তু ওই নির্দেশ নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠেনি। এখন রাজনীতির অঙ্ক কষে ইচ্ছাকৃত ভাবেই জলঘোলা করা হচ্ছে।’’
মহরমের দিন বিসর্জন নিয়ে ফেসবুকে নানা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মমতা। এ ব্যাপারে শুক্রবারই সতর্কবার্তা শুনিয়েছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি। মুখ্যমন্ত্রীও বলেন, ‘‘বসিরহাটের ঘটনার সময়ে যেমন ফেসবুকে কুৎসা ছড়িয়েছিল, এখনও সেটাই করা হচ্ছে। এর জবাব দিতে হবে। মহিলারাও ফেসবুকে এর জবাব দেবেন।’’ কোনও প্ররোচনায় পা না দিয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে উৎসবে সামিল হতে অনুরোধ করেছেন মমতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy