Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

হনুমান উৎসবেও গেরুয়া তাণ্ডব

অস্ত্র নিয়ে আর মিছিল হল না ঠিকই। কিন্তু বাংলায় রামনবমীর মিছিলে সাফল্য পেয়ে এ বার সর্বশক্তি দিয়ে হনুমান জয়ন্তী পালনে ঝাঁপাল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং আরএসএস। এই প্রথম পুলিশের সঙ্গে সংঘাতেও জড়ালেন তাঁরা।

ধুন্ধুমার: সিউড়িতে হনুমান জয়ন্তীর মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জ। মঙ্গলবার। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।

ধুন্ধুমার: সিউড়িতে হনুমান জয়ন্তীর মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জ। মঙ্গলবার। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৪২
Share: Save:

অস্ত্র নিয়ে আর মিছিল হল না ঠিকই। কিন্তু বাংলায় রামনবমীর মিছিলে সাফল্য পেয়ে এ বার সর্বশক্তি দিয়ে হনুমান জয়ন্তী পালনে ঝাঁপাল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং আরএসএস। এই প্রথম পুলিশের সঙ্গে সংঘাতেও জড়ালেন তাঁরা। এমনকী তাঁদের মদত জোগাতে দিল্লি থেকে বিজেপি নেতারা এসে এই হুমকিও দিয়ে গেলেন যে, ‘বানর সেনাদের’ গায়ে হাত দিলে ফল ভাল হবে না! তৃণমূলের লঙ্কা জ্বালিয়ে দেওয়া হবে!

উত্তরপ্রদেশে গেরুয়া ঝড়ের পর বাংলায় এ বার সুপরিকল্পিত ভাবে রামনবমী পালন করে সঙ্ঘ পরিবার ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। তাতে তারা যেমন বিপুল সমর্থন পায়, তেমনই সে দিন অস্ত্র হাতে গেরুয়া বাহিনীর আস্ফালন দেখে উদ্বেগে পড়ে যায় শাসক দলও। এতে
আরও উজ্জীবিত হয়েছেন সঙ্ঘ অনুগামী কর্মী সমর্থকরা। ফলে মঙ্গলবার দ্বিগুণ উৎসাহে বিভিন্ন জেলায় জেলায় হনুমান জয়ন্তী পালনে নেমে পড়েন তাঁরা।

তবে রামনবমীর মতো পুলিশ ও প্রশাসন এ দিন তাঁদের আর খোলা মাঠ ছাড়েনি। জেলায় জেলায় হনুমান জয়ন্তীর মিছিলে কমবেশি বাধা দেয় পুলিশ। নদিয়ায় পাঁচ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর-ও করে। পাল্টা জেদ ধরে গেরুয়া শিবিরও। সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়। সব থেকে বেশি উত্তেজনা ছড়ায় সিউড়িতে।

হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষে এ দিন সকালে সিউড়ির বড়বাগান থেকে মিছিল বের করেন শতাধিক মানুষ। এই মিছিলের জন্য পুলিশের অনুমতি ছিল না। বরং মিছিল যাতে না হয় সে জন্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষকে অনুরোধ পর্যন্ত করেছিল প্রশাসন। তা সত্ত্বেও মিছিল বেরোয়, এবং এক সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার উপক্রম হয়। তাই বাধা দেয় পুলিশ। মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে লাঠি চার্জও করা হয়।

এ ঘটনা নিয়ে উত্তেজনা শুধু সিউড়িতেই থেমে থাকেনি। তা সামনে রেখে রাজ্য জুড়ে কর্মী সমর্থকদের তাতানোর চেষ্টা করেন বিজেপি নেতারা। মঙ্গলবার বাংলার বুথ স্তরের কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করতে এসেছিলেন শাহনওয়াজ হুসেন, সুধাংশু ত্রিবেদী এবং দলের যুব সভানেত্রী পুনম মহাজন। সিউড়ির প্রসঙ্গ টেনে পুনম বলেন, ‘‘তৃণমূলের গুন্ডাদের সাবধান করছি, এখানে বিজেপির অনেক বানর সেনা রয়েছে। এদের কারও গায়ে হাত উঠলে বা লেজে আগুন লাগলে তৃণমূলের লঙ্কা জ্বালিয়ে দেব।’’

গেরুয়া শিবির মনে করছে, পুলিশ যত তাদের বাধা দেবে, ততই বাংলায় ধর্মীয় মেরুকরণের পরিস্থিতি ধারালো হবে। তাই উৎসব-পার্বণ উপলক্ষে এ বার ঘন ঘন এ ধরনের মিছিল-মিটিং করবে তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE