আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলে যোগ দিলেও এখনও বিধানসভার সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দেননি মানস ভুঁইয়া, তুষার ভট্টাচার্য সহ কংগ্রেসের পাঁচ বিধায়ক। একই ভাবে তৃণমূলে যোগ দিলেও বিধানসভা থেকে ইস্তফা দেননি গাজোলের সিপিএম বিধায়ক দীপালি বিশ্বাসও। তাঁদের বিধায়ক পদ খারিজের জন্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বাম-কংগ্রেসের তরফে আবেদন জানিয়েও লাভ হয়নি। ফলে বিহিত চেয়ে এ বার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন বিরোধীরা।
মঙ্গলবার এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন আইনজীবী প্রতীম কুমার সিংহ রায়। সর্বোচ্চ আদালতে পেশ করা আবেদনে তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চদশ ও ষোড়শ বিধানসভায় দলত্যাগ বিরোধী আইনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে অনেক বিধায়ক তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। সংবিধানের দশম তফসিল অনুযায়ী, এ ভাবে দলত্যাগী বিধায়কদের সদস্য পদ খারিজের এক্তিয়ার বিধানসভার স্পিকারের রয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, স্পিকার কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। তাই সুপ্রিম কোর্টের কাছে এই আবেদন জানানো হচ্ছে যে, দলত্যাগের জন্য আইনসভার সদস্য পদ খারিজের অধিকার আইন বদলে তুলে দেওয়া হোক রাষ্ট্রপতি অথবা মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের হাতে।
প্রতিমবাবু মামলাটি দায়ের করলেও এর নেপথ্যে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান। মামলার আবেদনে এও বলা হয়েছে, কোনও রাজনৈতিক দলের দুই-তৃতীয়াংশ বিধায়ক বা সাংসদ দল ছাড়লেও সেটিকে ‘বৈধ’ বলে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রথাও বিলোপ করা হোক। এ প্রসঙ্গে অরুণাচলে সাম্প্রতিক পালাবদলের উদাহরণ দিয়েছেন আবেদনকারীরা। তাঁদের বক্তব্য, অরুণাচলে গোটা শাসক দলই দলত্যাগ বিরোধী আইনের ধারার সুযোগ নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছে। এটা নির্বাচন প্রক্রিয়ার অবমাননা ছাড়া আর কিছু নয়। মামলাকারীর পক্ষে আইনজীবী শুভাশিস ভৌমিক বলেন,‘‘ভোটে জেতার পর নির্বাচিত প্রতিনিধিরা দল বদল করেন তাঁদের নিজস্ব স্বার্থে। তাতে জনমতকে অমর্যাদা করা হয়।’’
নভেম্বরের শেষ নাগাদ এই মামলার শুনানি শুরু হবে। তবে মামলার আসল লক্ষ্য হল, বিরোধী দলের বিধায়করা যেভাবে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন, তা ঠেকানো। আবেদনে এমন দু’ডজন বিধায়কের নাম দেওয়া হয়েছে, যাঁরা গত কয়েক বছরে বিরোধী দলের সঙ্গত্যাগ করে শাসক তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এর মধ্যে আবদুর রেজ্জাক মোল্লা, অসিত কুমার মাল, উদয়ন গুহ থেকে শুরু করে মানস ভুঁইয়ার নামও রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy