পাড়ার ইটের রাস্তা দিয়ে মাটি বোঝাই লরি চালানোর প্রতিবাদ করায় মাসতিনেক আগে এক দুষ্কৃতীর হুমকি শুনতে হয়েছিল জগদ্দলের বকুলতলার সিপিআই কর্মী সঞ্জীব মণ্ডলকে (৪৪)। রবিবার সকালে চায়ের দোকানে বসে ফের আপত্তি জানানোয় গুলি চালিয়ে তাঁকে খুনের অভিযোগ উঠল নিতাই বোগি নামে ওই দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। গুলিটি সঞ্জীববাবুর বুক ফুঁড়ে বেরিয়ে গিয়ে পিছনে দাঁড়ানো সমীরণ ওরফে খোকা নামে এক যুবকের মুখে বেঁধে। হাসপাতালের পথে সঞ্জীববাবু মারা যান। সমীরণকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে দুষ্কৃতীদের হাতে ওয়ানশটারের ছড়াছড়ি। সামান্য বচসা থেকে গুলি করে খুনও নতুন নয়। সঞ্জীববাবুকে খুনের ঘটনা সেই তালিকায় নতুন সংযোজন। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের কর্তারা দাবি করেন, শিল্পাঞ্চলে বেআইনি অস্ত্র সারা বছরই বাজেয়াপ্ত করা হয়। কিন্তু তার পরেও যে সহজেই দুষ্কৃতীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র চলে আসে, এ দিনের ঘটনা তার আর এক প্রমাণ। এক পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন, নিতাইয়ের বিরুদ্ধে আগেও খুনের অভিযোগ ছিল। সে জামিনে ছাড়া পেয়েছিল। এ দিন ঘটনার পরেই সে এলাকা ছেড়ে পালায়। তার খোঁজ চলছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ অনুযায়ী, এ দিন সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ সঞ্জীববাবু যখন বকুলতলায় বাড়ির কাছের ওই চায়ের দোকানে যান, তখন সেখানে বসে নিতাই মদ খাচ্ছিল। ভয়ে কেউ অবশ্য প্রতিবাদ করেননি। দোকানের সামনের রাস্তাটি ইটের। বাম আমলে সঞ্জীববাবুর স্ত্রী শিখাদেবী স্থানীয় কাউগাছি-২ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ছিলেন। তখনই রাস্তাটি তৈরি হয়েছিল। নিতাই মাটির ব্যবসা করে। তার মাটি বোঝাই লরি চলাচলের জন্য রাস্তাটি নষ্ট হচ্ছে দেখে সঞ্জীববাবু আপত্তি জানিয়েছিলেন। মাসতিনেক আগে শুনতে হয়েছিল হুমকি। এ দিন বচসার সময়ে আচমকা কোমরে গোঁজা ওয়ান শটার বের করে নিতাই গুলি চালিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। আচমকা গুলির শব্দে এবং দু’জনকে লুটিয়ে পড়তে দেখে লোকজন দোকান ছেড়ে পালিয়ে যান। নিতাইও চম্পট দেয়।
সঞ্জীববাবু বিমার এজেন্ট ছিলেন। তিন ছেলেমেয়ে এবং স্ত্রীকে নিয়ে ছিল তাঁর সংসার। পরিবারের লোকজন এ দিন কথা বলার অবস্থায় ছিলেন না। তবে পড়শিরা ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের মধ্যে অসীম সরকার, তাপস চক্রবর্তীরা বলেন, ‘‘কী এমন হল যে গুলি করে মেরে ফেলতে হল! পুলিশ কড়া পদক্ষেপ করুক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy