প্রতীকী ছবি।
এক ধাক্কায় জোড়া রীতিভঙ্গ!
ভাঙা সংগঠন এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনের বছর হওয়া সত্ত্বেও কিছু জেলায় মুখ বদলে দলকে চাঙ্গা রাখার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে সিপিএম। এ বারের সম্মেলন-পর্বে প্রায় আধ ডজন জেলার সম্পাদক পদে পরিবর্তনের প্রক্রিয়ায় হাত দিয়েছে তারা। উত্তরবঙ্গের দু’টি জেলায় নতুন সম্পাদক বেছে নেওয়া হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের গোটাচারেক জেলাতেও পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলছে দলীয় সূত্রে। নতুন সম্পাদকের বয়স যাতে বিদায়ী সম্পাদকের চেয়ে কম হয়, পরিবর্তনের সময়ে এই শর্তপূরণের উপরেই নজর দেওয়া হচ্ছে বেশি।
আগে পার্টি কংগ্রেসে সিপিএম সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, কোনও কমিটির সম্পাদক পদে কেউ টানা তিন বারের বেশি থাকতে পারবেন না। যদিও জেলা বা রাজ্য সম্পাদকের ক্ষেত্রে টানা কয়েক বছর কাজ করার সুযোগ দেওয়ারই পক্ষপাতী ছিলেন দলীয় নেতৃত্ব। কিন্তু এ বারের সম্মেলনে যে সব জেলায় সম্পাদক বদলের পথে হাঁটছে সিপিএম, তার কোনওটাতেই কেউ তিন বারের সর্বোচ্চ মেয়াদ শেষ করেননি। অর্থাৎ কোনও ক্ষেত্রেই বদল সাংগঠনিক নিয়মে অনিবার্য ছিল না। আলিমুদ্দিনের যুক্তি, দলের জেলা কমিটির গড় বয়স কমানোর লক্ষ্যে যেখানে যেমন পদক্ষেপ দরকার, তা-ই করা হচ্ছে।
এই বদল আনতে গিয়েই আবার অন্য একটি রীতি পাশ কাটাতে হচ্ছে সিপিএমকে! কলকাতায় ২০১৬ সালে সিপিএমের রাজ্য প্লেনামে ঠিক হয়েছিল— রাজ্য কমিটিতে নতুন মুখ হিসাবে অন্তর্ভুক্তির সময়ে তাঁরাই বিবেচিত হবেন, যাঁদের বয়স ষাটের নীচে। অন্তর্ভুক্তির বয়সের সীমা বেঁধে কমিটির গড় বয়স কমাতে চেয়েছিল দল। রীতিমাফিক জেলা সম্পাদকেরা সকলেই রাজ্য কমিটিতে জায়গা পান। কিন্তু এ বারের পরিবর্তনে যাঁরা নতুন জেলা সম্পাদক হচ্ছেন, তাঁদের কেউই প্রায় ষাটের কম নন! অর্থাৎ মার্চে রাজ্য সম্মেলনে নতুন রাজ্য কমিটিতে তাঁদের নেওয়ার সময়ে রীতি শিথিল করতে হবে আলিমুদ্দিনকেই!
দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য অবশ্য যুক্তি দিচ্ছেন, ‘‘এর কোনওটাই আবশ্যিক কোনও নিয়ম নয়। ক্ষেত্রবিশেষে তার অদলবদল করতে হতে পারে, এটা সেই সময়েই আলোচনা হয়েছিল। কমিটিগুলির গড় বয়স কমানোই এখন প্রধান লক্ষ্য।’’ তবে সিপিএমের ২০১৫ সালের কেন্দ্রীয় প্লেনামে বেঁধে দেওয়া লক্ষ্য ছিল, ২০১৮ সালের মধ্যে দলের মোট সদস্যের ২৫%-এর বয়স হতে হবে ৩১ বছরের মধ্যে। সেই লক্ষ্য স্পর্শ করতে আরও মেদ ঝরাতে হবে বঙ্গ সিপিএমকে!
কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারের দুই নতুন জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় ও মৃণালকান্তি রায় তাঁদের পূর্বসূরিদের তুলনায় তরুণ। হুগলিতে যাঁকে নতুন সম্পাদক করার ভাবনা আছে দলে, তিনিও তা-ই। তবে উত্তর ২৪ পরগনায় বিকল্প মুখেদের নিয়ে তেমন দাবি করা অসুবিধা। আবার কলকাতায় যে তিন জন নতুন সম্পাদকের দৌড়ে, তাঁদের মধ্যে দু’জন বয়সে তরুণ। অন্য জন নামে! হাওড়াতেও নেতৃত্ব বদলের দাবি আছে দলের অন্দরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy