Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কার্যালয়ে গেরুয়া ঝান্ডা, উদ্ধারে বাম দ্বারস্থ তৃণমূলের

মেদিনীপুর শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের তোড়াপাড়ায় সিপিএমের একটি শাখা কার্যালয় ছিল। সিপিএমের স্থানীয় নেত্রী ছায়া রায় সেটি দেখভাল করতেন। রবিবার ছায়াদেবী দলের আরও কিছু কর্মীকে নিয়ে বিজেপি-তে যোগ দেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪৭
Share: Save:

দলীয় কার্যালয়কে বিজেপি-র হাত থেকে মুক্ত করতে তৃণমূলের দ্বারস্থ হল সিপিএম! এমনই ‘অবিশ্বাস্য’ ঘটনা ঘটেছে মেদিনীপুরে।

মেদিনীপুর শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের তোড়াপাড়ায় সিপিএমের একটি শাখা কার্যালয় ছিল। সিপিএমের স্থানীয় নেত্রী ছায়া রায় সেটি দেখভাল করতেন। রবিবার ছায়াদেবী দলের আরও কিছু কর্মীকে নিয়ে বিজেপি-তে যোগ দেন। ফলে দলীয় পতাকা লাগিয়ে সিপিএমের ওই শাখা কার্যালয়ের দখল নেয় বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে তা উদ্ধারের জন্য তৃণমূলের সাহায্য চান স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব। তৃণমূলও সাহায্যের আশ্বাস দেয়। তাৎপর্যপূর্ণ হল, যারা এখন সিপিএমের কার্যালয় উদ্ধার করে দেওয়ার আশ্বাস দিচ্ছে, ২০১১ সালে পরিবর্তনের পরে তাদের বিরুদ্ধেই সবচেয়ে বেশি সিপিএমের কার্যালয় দখলের অভিযোগ উঠেছিল।

বস্তুত, রাজনৈতিক নেতা বা জনপ্রতিনিধিদের দলবদলের ফলে দলীয় কার্যালয়েরও রং বদলের ঘটনা নতুন নয়। এর আগে বিধায়ক উদয়ন গুহ ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়ায় কোচবিহারের দিনহাটায় প্রায় সব ফ ব দফতরই তৃণমূলের কার্যালয়ে পরিণত হয়েছিল। প্রাক্তন বিধায়ক মানস ভুঁইয়া কংগ্রেস ছে়ড়ে তৃণমূলে যাওয়ায় তাঁর তৎকালীন কেন্দ্র সবংয়ের কংগ্রেস কার্যালয়গুলিও রাতারাতি বদলে গিয়েছিল তৃণমূল কার্যালয়ে।

এ ক্ষেত্রে দলীয় কার্যালয় দখলের অভিযোগ সিপিএম নেতৃত্ব জানান মেদিনীপুরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অনিমা সাহাকে। এ প্রসঙ্গে সোমবার অনিমাদেবীর প্রতিক্রিয়া, “ওখানে সিপিএমের পার্টি অফিস বিজেপি দখল করেছে। এটা ঠিক নয়। সিপিএমের কার্যালয় তাদেরই থাকবে।” অনিমাদেবীর আরও দাবি, “আমাদের দলের কর্মীরাও ওই পার্টি অফিস দখল করতে চাইলে আপত্তি করব।” তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতিরও বক্তব্য, ‘‘আমরা দখলের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। প্রতিবাদটা সেখানেই। ওই কার্যালয় সিপিএম ফের দখল করুক। প্রশাসন নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেবে। দেখব কে বাধা দেয়!’’

সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বের অবশ্য বক্তব্য, বিজেপি-র মোকাবিলায় তৃণমূলের সাহায্য নেওয়ার নির্দেশ কখনওই দেওয়া হয়নি। এ সব কাণ্ড স্থানীয় স্তরে কেউ কেউ করেছেন। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যেখানে দলের কার্যালয় উদ্ধার করার সুযোগ আছে, সেখানে আমরাই সে কাজ করব। যে তৃণমূলই সবচেয়ে বেশি করে আমাদের কার্যালয় দখল করেছে, তাদের সাহায্য নিতে যাব কেন?’’ সিপিএমর জেলা কমিটির নেতা কীর্তি দে বক্সী বলেন, “এলাকার মানুষ আমাদের পাশে রয়েছেন। ওই অফিস আমাদেরই থাকবে। সর্বশক্তি দিয়ে বিজেপির ষড়যন্ত্র রুখব।”

তবে সিপিএমের পার্টি অফিস বেদখলে তৃণমূলের গোঁসায় অবাক বিজেপি। মেদিনীপুরের বিজেপি নেতা শুভজিৎ রায় বলেন, “তৃণমূলের এত গায়ে লাগছে কেন বুঝতে পারছি না! ওই পার্টি অফিসের যাঁরা বিজেপিতে এসেছেন, তাঁরা চেয়েছেন, অফিসটি বিজেপি-র হোক। তাই ওখানে দলের পতাকা লাগিয়েছেন। এতে অন্যায়ের কী আছে!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE