এক রবিবার কোচবিহারে উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইট খুলতেই দেখা গেল, জঙ্গি সংগঠনের স্লোগান ও ছবি। পরে জানা গেল, মার্কিন মুলুকের যে সংস্থাটির কাছে ওই সাইটের সার্ভার, সেটিতেই হামলা চালিয়েছে জঙ্গি সংগঠনের হ্যাকাররা। আবার সম্প্রতি রেলের তিনটি জোনের সাইটও হ্যাকিং করা হয়। এর পর যে সাইটে ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হয়, সেটির নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য বিশেষ একটি দল তৈরি করেছে রেল।
অর্থাৎ সাইবার দুনিয়ায় অপরাধ ক্রমেই বাড়ছে। এই পটভূমিকায় ‘সাইবার সিকিওরিটি সেন্টার অব এক্সেলেন্স’ তৈরি হতে যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। মঙ্গলবার নবান্নে এ কথা ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তথ্যপ্রযুক্তি দফতরকে এ জন্য কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে।’’
কেবল মামুলি সাইবার অপরাধ নয়, বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের দাপাদাপিও সাইবার দুনিয়ায়। আইএস যোগ থাকার অভিযোগে এখনও
পর্যন্ত রাজ্যের যে তিন যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে, সাইবার জগতেই মগজধোলাই হয়েছে তাদের। সাইবার অপরাধ দমনে যুক্ত অফিসাররা বলছেন— এই অপরাধ যেমন বাড়ছে, তেমন বদলে যাচ্ছে তার ধরনও। এ জন্য এই সমস্ত মামলা লড়তে সাইবার আইন বিশেষজ্ঞকে এক বিশেষ আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ করেছে রাজ্য। পুলিশ সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিশ ও সিআইডি-তে এথিক্যাল হ্যাকার ও তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করার প্রক্রিয়া চলছে। সরকারের একটি সূত্রের খবর, ওই সব আইনজীবী ও বিশেষজ্ঞকে মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবিত নতুন সেন্টারে কাজে লাগানো হতে পারে।
রাজ্য সাইবার মামলার বিশেষ আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলছেন, এই অপরাধ শুধু জালিয়াতি বা মহিলাদের হেনস্থায় সীমাবদ্ধ নয়। সাইবার অপরাধ ঠেকানোর নিত্যনতুন গবেষণা হওয়া প্রয়োজন। তাঁর কথায়, ‘‘কর্পোরেট জগতে সাইবার নিরাপত্তা পরিষেবা দিয়েও সরকার আয় বাড়তে পারে।’’ আর এক সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ আইনজীবী রাজর্ষি রায়চৌধুরী জানান, বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থা নিজেদের সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন। এই ধরনের সরকারি কেন্দ্র তাদের পরিষেবা দিতেই পারে। তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত অনেকে বলছেন, রাজ্য তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়াতে চাইছে। সে ক্ষেত্রে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে সরকারি সংস্থা কাজ করলে রাজ্যের ভাবমূর্তিও ভাল হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy