ঘুরতে ঘুরতে। নিজস্ব চিত্র
দার্জিলিং পাহাড় থেকে আলিপুরদুয়ার— বনধ-আন্দোলনের ধকলে কিছুটা ঝিমিয়ে পড়েছিল সবই। শীত পড়তেই ফের বড় মাপের উৎসবের মাধ্যমে চাঙ্গা হতে চাইছে পাহাড়-ডুয়ার্স।
পাহাড়ের হাতিয়ার যদি হয় ‘দার্জিলিং ইন্টারন্যাশনাল ট্যুরিজম ফেস্টিভ্যাল’, তা হলে আলিপুরদুয়ারে হাতিয়ার ‘ডুয়ার্স উৎসব’। এবার সেই ডুয়ার্স উৎসবের মুকুটে জুড়ে যাচ্ছে নতুন বর্ণময় পালক ‘ডুয়ার্স-কন্যা’। নবগঠিত আলিপুরদুয়ার জেলার ঝাঁ চকচকে সাত তলা প্রশাসনিক ভবনের নাম দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীই।যা কি না সব দিক থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গের সচিবালয় উত্তরকন্যার সঙ্গে জমিয়ে পাল্লা দিতে পারে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।
সরকারি সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর আসার ব্যাপারে দিনক্ষণ ঠিক হলেই একযোগে উৎসবে মেতে উঠতে কোমর বাঁধছে টাইগার টু বক্সা পাহাড়। আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী, জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোহন শর্মা দুজনেই এখন কলকাতায়। মোটামুটি একটা দিন ঠিক করেই ফিরতে চাইছেন ওঁরা। শনিবার রাতে বিধায়ক ও পরিষদের সভাধিপতি পূর্ত মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে দেখাও করেছেন। যিনি প্রদেশ তৃণমূলের তরফে আলিপুরদুয়ার জেলার দলীয় পর্যবেক্ষকের দায়িত্বেও রয়েছেন। শীঘ্রই মুখ্যমন্ত্রীর হাতে ‘ডুয়ার্স কন্যা’র উদ্বোধন করার ব্যাপারে মোহনবাবু ও সৌরভবাবু দুজনেই আশাবাদী।
ঘটনাচক্রে, জিটিএয়ের কেয়ারটেকার বোর্ডের চেয়ারম্যান বিনয় তামাঙ্গ ও সপার্ষদ কলকাতায় গিয়েছেন। পাহাড়ের ফেস্টিভালের দিনক্ষণ চূডান্ত করার আগে মুখ্যমন্ত্রীর সফরসূচি বুঝে নিতে চান তাঁরা। বিনয়রা ডিসেম্বরের শেষেই উৎসব শুরু করে দিতে চাইছেন। মুখ্যমন্ত্রী সেখানে উপস্থিত থাকুক বিনয়রা চান। কিন্তু, জানুয়ারির গোড়ায় মুখ্যমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর রয়েছে। তার উপরে ফি বছর জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে নেতাজির জন্মজয়ন্তীর রাজ্য পর্যায়ের অনুষ্ঠানে হয় দার্জিলিঙেই। এবারও হওয়ার কথা। ফলে, সেই সময়েই পাহাড়-ডুয়ার্স একযোগে সফর হতে পারে বলে অনেকের ধারনা।
কিন্তু, একটি সরকারি সূত্র বলছে, মুখ্যমন্ত্রী দু-দফায় পাহাড়-ডুয়ার্সের অনুষ্ঠানেও যেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ডুয়ার্স কন্যার উদ্বোধনের জন্যই একবার মুখ্যমন্ত্রী যেতে পারেন। কারণ, ৫০ কোটি টাকা নির্মিত আলিপুরদুয়ারের প্রশাসনিক ভবন কবে চালু হবে তা নিয়ে এলাকায় বেশ উদ্মাদনা রয়েছে। ওই ভবনের একেক তলায় ২২ হাজার বর্গফুট জায়গা রয়েছে। ৪টি লিফট। আপাতত দুটি চালু হচ্ছে। বড়-ছোট মিলিয়ে ৪টি কনফারেন্স হল। ছাদে ৪৪টি জালাধারে ৮৮ হাজার লিটার জল ধরার ব্যবস্থা। ৫০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। আসবাবপত্র ও অন্যান্য বাবদ আরও অন্তত কয়েক কোটি টাকা খরচ হবে। ২০১৬ সালের গোড়ায় কাজটি শুরু হয়েছিল। পূর্তমন্ত্রী একাধিকবার সরেজমিনে পরিদর্শন করে কাজে গতি বাড়ানোয় ডুয়ার্স-কন্যা এখন পুরোপুরি তৈরি। তাই সকাল থেকে সন্ধ্যে সেখানে দার্ড়িয়ে এখন ‘সেলফি’ তোলার হিড়িক।
সব মিলিয়ে পাহাড়-ডুয়ার্সে প্রস্তুতি সম্পূর্ণ। সবুজ সঙ্কেত মিললেই বেজে উঠবে ‘উইন্টার ফেস্টিভ্যাল’-এর বাদ্যি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy