Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার প্রাক্তন সিপিএম বিধায়কের মেয়ের

পুলিশে না জানিয়ে দাহর চেষ্টা

গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হওয়া মেয়েকে সরাসরি শ্মশানে নিয়ে গিয়ে দাহ করা হচ্ছে। খবর পেয়ে চিতা থেকে আধপোড়া দেহ তুলে নিয়ে এল পুলিশ। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে সোনামুখী থানার ধুলাই এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতা তনুশ্রী বাগদি (১৬) ধুলাই গার্লস হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী।

শববাহী গাড়ির ভিতরে রয়েছে মৃতার আধপোড়া দেহ। —নিজস্ব চিত্র।

শববাহী গাড়ির ভিতরে রয়েছে মৃতার আধপোড়া দেহ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সোনামুখী শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৫ ০১:৫৮
Share: Save:

গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হওয়া মেয়েকে সরাসরি শ্মশানে নিয়ে গিয়ে দাহ করা হচ্ছে। খবর পেয়ে চিতা থেকে আধপোড়া দেহ তুলে নিয়ে এল পুলিশ। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে সোনামুখী থানার ধুলাই এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতা তনুশ্রী বাগদি (১৬) ধুলাই গার্লস হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। শনিবার বিষ্ণুপুর হাসপাতালে ওই আধপোড়া দেহ ময়না তদন্ত করে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে পুলিশ। জেলার এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘গ্রামবাসীদেরহ কাছ থেকে খবর পেয়ে দেহটি উদ্ধার করেছে। এই ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে পুলিশ একটি স্বতঃস্ফূর্তভাবে মামলা দায়ের করে। এটাই নিয়ম।’’ এ ক্ষেত্রে কী হয়েছে তা অবশ্য জবাব মেলেনি। আদালতের নির্দেশ পেলে তনুশ্রীর পরিবারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলার এক পুলিশ কর্তা।

পুলিশ ও মৃতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তনুশ্রীর বাবা সোনামুখীর প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নীরেশ বাগদি। তার দাদা সংগ্রাম বাগদি ধুলাই হাইস্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক দিয়েছিল। ভাল নম্বর নিয়ে পাশও করেছে সে। কিন্তু তনুশ্রী পড়াশোনায় ভাল ছিল না। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, দাদার তুলনায় সে পড়াশুনায় খারাপ ছিল বলে বাড়িতে প্রায়ই বকুনি খেত তনুশ্রী। শুক্রবার রাতেও এমনই একটি ঘটনা ঘটে বাড়িতে। আর তাতেই অভিমানে নিজের ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল তনুশ্রী। পরে বাড়ির লোকজন তাকে বারবার ডাকাডাকি করলেও সে দরজা খোলেনি। দরজা ভেঙে তার অভিভাবকেরা বাড়িতে ঢুকে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। এর পরিবারের লোকেরা গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা করে পুলিশকে কিছু না জানিয়েই গ্রামেরই একটি মাঠের শ্মশানে নিয়ে গিয়ে দাহ পর্ব শুরু করে দেওয়া হয়।

মাঝরাতে ঘটনার কথা জানতে পেরে পুলিশ শ্মশানে যায়। ততক্ষণে তনুশ্রীর শরীরের বেশির ভাগ অংশই পুড়ে গিয়েছে। পুলিশ জল দিয়ে চিতা নিভিয়ে আধপোড়া দেহ তুলে নিয়ে আসে। পুলিশকে না জানিয়ে তাঁর মেয়ের দেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়া ঠিক হয়নি বলেই অভিমত নীরেশবাবুর। ঘটনার সময় তিনি বাড়িতেও ছিলেন না দাবি ওই সিপিএম নেতার। তিনি বলেন, ‘‘আমি বাড়ি ফেরার আগেই মেয়ের দেহ শ্মশানে নিয়ে চলে যাওয়া হয়েছিল। কেউ পুলিশকে জানায়নি।’’ তিনি বলেন, “পরীক্ষায় কেন ভাল ফল করতে পারছে না সেটুকুই শুধু প্রশ্ন করেছিল ওর মা। তাতেই এই পদক্ষেপ নিল মেয়ে! আবেগের বশে জীবনটাই শেষ করে দেবে আমরা কোনও দিন ভাবিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE