Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

জুহিকে সমর্থন দিলীপেরও, অস্বস্তি দলে

শিশু পাচারে অভিযুক্ত দলীয় নেত্রী জুহি চৌধুরীর পাশে দাঁড়িয়ে বুধবার মুখ খুলেছেন বিজেপির রাজ্যসভা সাংসদ তথা মহিলা মোর্চার সভানেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। তার পরে ২৪ ঘণ্টাও কাটল না, জুহির সমর্থনে জোর গলায় বিবৃতি দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

জলপাইগুড়ির কর্মিসভায় দিলীপ ঘোষ। ছবি: সন্দীপ পাল।

জলপাইগুড়ির কর্মিসভায় দিলীপ ঘোষ। ছবি: সন্দীপ পাল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:৩৪
Share: Save:

শিশু পাচারে অভিযুক্ত দলীয় নেত্রী জুহি চৌধুরীর পাশে দাঁড়িয়ে বুধবার মুখ খুলেছেন বিজেপির রাজ্যসভা সাংসদ তথা মহিলা মোর্চার সভানেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। তার পরে ২৪ ঘণ্টাও কাটল না, জুহির সমর্থনে জোর গলায় বিবৃতি দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। শুধু তা-ই নয়, শিশু পাচার-কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত চন্দনা চক্রবর্তীর সঙ্গে শাসক দলের অনেকের যোগাযোগ রয়েছে বলে অভিযোগের তির উল্টে তৃণমূলের দিকেই ঘুরিয়ে দিতে চেয়েছেন তিনি।

পাচারে জুহির নাম জড়ানোর পর থেকে দিলীপবাবু বলে আসছিলেন, এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হতে পারে। দল তদন্ত করবে। গোয়েন্দারাও তদন্ত করছেন। জুহি দোষী প্রমাণিত হলে দল থেকে বাদ পড়বেন এবং আইনত যা শাস্তি প্রাপ্য, তা পাবেন। কিন্তু জলপাইগু়ড়িতে বৃহস্পতিবার কর্মিসভার পরে সাংবাদিক বৈঠকে দিলীপবাবু জুহির পক্ষ নিয়ে সরাসরি বলেন, ‘‘কারও সঙ্গে দিল্লি যাওয়াটা অপরাধ নয়। কাউকে অনৈতিক ভাবে লাভ করিয়ে দেওয়া বা কারও থেকে অনৈতিক ভাবে লাভ নেওয়াটা অপরাধ। যেটা প্রমাণসাপেক্ষ। জুহিকে নিয়ে দলের অন্দরে তদন্ত করছি। দোষ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত দল জুহির পাশে রয়েছে। দল পুরো ‘সাপোর্ট’ দেবে।’’

দিলীপবাবুর আরও অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের অনেক নেতার সঙ্গেই চন্দনার যোগযোগ রয়েছে। কিন্তু তা নিয়ে চর্চা হচ্ছে না। এত দিন হোমে এত অনৈতিক কাজ হলেও কাউকে ধরা হয়নি। এখন জুহিকে ধরা হচ্ছে। এর পিছনে রাজনৈতিক চক্রান্ত রয়েছে।’’

আরও পড়ুন: ভর্ৎসনা ঋতব্রতকে, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে সতর্কতা

জুহির প্রশ্নে দিলীপবাবুর অবস্থান নিয়ে রাজ্য বিজেপি অবশ্য দ্বিধাবিভক্ত। দলের একাংশের মতে, শিশু পাচার অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। এই কাণ্ডে অভিযুক্ত জুহি ও তাঁর বাবা রবীন্দ্রনারায়ণ (নাড়ু) চৌধুরী নির্দোষ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত নেতৃত্বের তাঁদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা উচিত। না হলে দল সম্পর্কে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে। দলের ওই অংশের আরও বক্তব্য, আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে নাড়ুবাবুকে বহু দিন আগেই রাজ্য এবং জেলার গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সরানো হয়েছিল। জুহিও যুব মোর্চার এক জন সাধারণ সদস্য ছাড়া অন্য কিছু ছিলেন না। কিন্তু দিলীপবাবু সভাপতি হওয়ার পর তাঁকে সন্তুষ্ট করেই নাড়ুবাবু জুহিকে মহিলা মোর্চার রাজ্য সম্পাদক পদে ঢোকান।

রাজ্য বিজেপির একাংশের বক্তব্য, দিলীপবাবুকে খুশি করে আর এক জন ব্যক্তিও দলে নিজের গুরুত্ব বাড়াতে শুরু করেছিলেন। তিনি চিকিৎসক দিলীপ ঘোষ। তাঁরও নাম শিশু পাচার কাণ্ডে জড়িয়েছে। দলের অনেকের আশঙ্কা, দিলীপবাবুর বদান্যতায় দলে ঠাঁই পাওয়া আরও অনেকের বিরুদ্ধেই এর পর বিভিন্ন সমাজবিরোধী কাজের অভিযোগ উঠতে পারে। শিশু পাচারের মতো কাণ্ডে জড়িতদের দলে গুরুত্ব দেওয়া-সহ কয়েকটি অভিযোগ তুলে ইতিমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন বিজেপি নেতা কৃশানু মিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Juhi Chowdhury Dilip Ghosh BJP Child Trafficking
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE