Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ছ’ইঞ্চি পেট কেটে বেরোল সাত সূচ

খবর পেয়ে হাঁফ ছেড়েছে বাচ্চাটির উপরে অত্যাচার চালানোয় অভিযুক্ত সনাতন গোস্বামীর ছেলেদের পরিবার। অভিযুক্তের দুই পুত্রবধূ— রিঙ্কি এবং রিনার কথায়, ‘‘বাচ্চাটা সেরে উঠুক, এটুকুই চেয়েছি ঠাকুরের কাছে। মনে হচ্ছে, তিনি আমাদের কথা শুনেছেন।’’

শিশুটির দেহের ভিতরে ছিল এই সাতটি সূচ।

শিশুটির দেহের ভিতরে ছিল এই সাতটি সূচ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা ও পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৭ ০৪:১৮
Share: Save:

ঘণ্টা তিনেকের অস্ত্রোপচারে সাতটি সুচ বেরোল পুরুলিয়ার নির্যাতিতা শিশুর ছোট্ট শরীর থেকে। মঙ্গলবার এসএসকেএম হাসপাতালের অধিকর্তা অজয় রায় বলেন, ‘‘অস্ত্রোপচার সফল। তবে বিপদমুক্ত হতে আরও ৭২ ঘণ্টা সময় দরকার।’’ তিনি জানান, শিশুটিকে ‘পেডিয়াট্রিক ইনটেন্সিভ কেয়ার ইউনিট’ (পিকু)-এ বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

খবর পেয়ে হাঁফ ছেড়েছে বাচ্চাটির উপরে অত্যাচার চালানোয় অভিযুক্ত সনাতন গোস্বামীর ছেলেদের পরিবার। অভিযুক্তের দুই পুত্রবধূ— রিঙ্কি এবং রিনার কথায়, ‘‘বাচ্চাটা সেরে উঠুক, এটুকুই চেয়েছি ঠাকুরের কাছে। মনে হচ্ছে, তিনি আমাদের কথা শুনেছেন।’’

হাসপাতাল সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ শিশুটিকে ‘অপারেশন থিয়েটার’-এ নিয়ে যাওয়া হয়। পেডিয়াট্রিক-সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ঋষভদেব পাত্রের নেতৃত্বে শুরু হয় অস্ত্রোপচার। বেলা দেড়টা নাগাদ চিকিৎসকেরা জানান, মেয়েটিকে অজ্ঞান করে নাভির উপরে আড়াআড়ি প্রায় ছ’ইঞ্চি কেটে যকৃত, অন্ত্র, অগ্ন্যাশয় ও যোনি থেকে সুচ বার করা হয়েছে। ডাক্তারেরা জানিয়েছেন, সবচেয়ে বেশি সুচ (৩টি) বেঁধানো ছিল যকৃতে। সুচগুলি ইঞ্চি চারেক লম্বা। বেশ কিছু দিন আগে বাচ্চাটির শরীরে ঢোকানো হয়েছে। বিভিন্ন অঙ্গে বিঁধে থাকলেও সুচগুলি শরীরের ভিতরে কোনও রক্তক্ষরণ ঘটায়নি।

আরও পড়ুন: জিএসটি কাঁটায় স্যানিটারি ন্যাপকিন, আঁচ স্বাস্থ্য প্রকল্পে

পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে জ্বর, সর্দি, কাশির উপসর্গ নিয়ে ভর্তি করানো হয় সাড়ে তিন বছরের মেয়েটিকে। পরীক্ষা করতে গিয়ে ডাক্তারেরা দেখেন, শরীরে বহু ক্ষত। মেয়েটির মা এই ব্যাপারে মুখ না খোলায় গড়া হয় মেডিক্যাল বোর্ড। এক্স-রে প্লেটে ধরা পড়ে সুচের অস্তিত্ব। শনিবার মেয়েটিকে এসএসকেএমে ভর্তি করানো হয়।

পুরুলিয়া মফস্সল থানার নদিয়াড়া গ্রামের বছর বাষট্টির সনাতন গোস্বামীর (ঠাকুর) বাড়িতে মেয়েকে নিয়ে থেকে মাসখানেক ধরে পরিচারিকার কাজ করছিলেন ওই শিশুর মা। সে-ই ওই শিশুর উপরে অত্যাচার করেছে বলে চাইল্ডলাইনের কর্মীদের কাছে মেয়েটির মা অভিযোগ করেন। সনাতনের খোঁজে পুরুলিয়া জেলা পুলিশের ছ’জনের দল ঝাড়খণ্ডে রওনা দিয়েছে। তবে রাত পর্যন্ত তার হদিস মেলেনি। সনাতনের উপরে ক্ষিপ্ত পরিবারের অন্যরাও। অভিযুক্তের দুই স্কুলপড়ুয়া নাতি-নাতনির কথায়, ‘‘দাদুকে পুলিশ ধরুক। কিন্তু ওই ছোট্ট মেয়েটা ভাল হয়ে যাক। আমরাও প্রার্থনা করেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE