অপেক্ষায়: আগের দিন থেকে শিবনাথ শাস্ত্রী কলেজে ভর্তির লাইনে অভিভাবক-পড়ুয়ারা। মঙ্গলবার রাতে গোলপার্কে। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী।
প্রায় ২৪ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে অনেকে যে-ভাবে শিবনাথ শাস্ত্রী কলেজে ভর্তি হয়েছেন, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাতে ক্ষুব্ধ। এই বিষয়ে ওই কলেজের কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠাচ্ছেন তাঁরা। সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) স্বাগত সেন বুধবার বলেন, ‘‘এই ভাবে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করার কোনও নির্দেশই দেওয়া হয়নি।’’
আগে এলে আগে ভর্তির এমন ব্যবস্থা কোনও মতেই চলবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ। স্বাগতবাবু জানান, কোনও কলেজ-কর্তৃপক্ষই যেন আগে এলে আগে ভর্তির পদ্ধতি চালু না-করেন। ভর্তির নিয়ম একটাই। সমস্ত আবেদন যাচাই করে মেধা-তালিকা প্রকাশ করতে হবে। তার পরে হবে কাউন্সেলিং। প্রথম কাউন্সেলিংয়ের পরে সব আসন পূরণ না-হলে আবার কাউন্সেলিং করা যাবে।
দক্ষিণ কলকাতার শিবনাথ শাস্ত্রী কলেজে বাণিজ্য শাখায় প্রথম বর্ষে ভর্তির জন্য অনলাইনে আসা আবেদনের মধ্য থেকে ১২০০ জনের মেধা-তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। সংরক্ষিত আসন মিলিয়ে ওই কলেজে বাণিজ্য প্রথম বর্ষে মোট আসন ৫০০টি। কলেজ-কর্তৃপক্ষ এ বার জানিয়ে দিয়েছিলেন, মেধা-তালিকাভুক্ত আবেদনকারীদের মধ্যে যাঁরা প্রথমে আসবেন, আসন পূরণ না-হওয়া পর্যন্ত তাঁদেরই নেওয়া হবে। আগে এলে আগে ভর্তির এই ব্যবস্থা নিয়ে আপত্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের।
শিবনাথ শাস্ত্রী কলেজের অধ্যক্ষা রুণা বিশ্বাসের বক্তব্য, গত বছর মেধা-তালিকার ভিত্তিতে ভর্তি প্রক্রিয়া চালানোর পরে দেখা যায়, ৭০টি আসন খালি পড়ে আছে। তাই এ বার ‘আগে এলে আগে ভর্তি’র নতুন নিয়ম চালু করা হয়েছে। কিন্তু তাতে পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, মঙ্গলবার সকাল থেকে আবেদনকারীরা কলেজে হাজির হয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে যান। কলেজ-কর্তৃপক্ষ শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার রাতে পুলিশে খবর দেন। অধ্যক্ষা বুধবার জানান, ভর্তি পর্ব সকাল ১০টার মধ্যে শান্তিতেই শেষ হয়েছে।
‘‘শিবনাথ শাস্ত্রী কলেজে কেন আগে এলে আগে ভর্তির ব্যবস্থা চালু করা হলো, সেই বিষয়ে আমরা ওই কলেজের কাছে রিপোর্ট চাইছি,’’ বলেন স্বাগতবাবু। রুণাদেবী জানান, তাঁরা ই-মেল করে উপাচার্যকে সব জানাচ্ছেন। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েও কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি ব্যাখ্যা করবেন তিনি।
শিবনাথ শাস্ত্রী কলেজের এই ঘটনার পাশাপাশি আশুতোষ কলেজের ছাত্র ভর্তি নিয়েও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বারে বারেই জানিয়েছেন, ছাত্র ভর্তিতে ছাত্র সংসদের কোনও ভূমিকা থাকবে না। কিন্তু আশুতোষ কলেজে টিএমসিপি-র নেতৃত্বাধীন ছাত্র সংসদের প্রতিনিধিরা ভর্তি হতে আসা পড়ুয়াদের বিভিন্ন ভাবে ‘সাহায্য’ করছেন বলে অভিযোগ। গত বছর যে-সব কলেজে অতিরিক্ত ছাত্র ভর্তির অভিযোগ উঠেছিল, তার মধ্যে আছে আশুতোষও। শিক্ষামন্ত্রীর নিষেধ সত্ত্বেও ভর্তিতে ফের ছাত্র সংসদের খবরদারির অভিযোগ উঠছে কেন? এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে অধ্যক্ষ দীপক কর বলেন, ‘‘এই কলেজে সম্পূর্ণ অনলাইনে ভর্তি হচ্ছে। কারও কোনও হস্তক্ষেপ নেই।’’ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদিকা পৌলোমী সামন্ত অবশ্য জানান, নতুন ছাত্রছাত্রীদের যাতে সংশ্লিষ্ট বিভাগে কোনও রকম অসুবিধা না-হয় এবং তাঁরা যাতে ‘ছাত্র সংসদের সঙ্গেই থাকেন’, সেই জন্য কথা বলা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy