Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

দেরি করে এল গৃহ প্রকল্পে কেন্দ্রের টাকা

কিন্তু যখন টাকা এল, তা ট্রেজারিতে ফেলে রাখা ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই বলে জানাচ্ছেন পঞ্চায়েত কর্তাদের একাংশ। কেন? তাঁদের বক্তব্য, যে অঞ্চলের বাসিন্দাদের বাড়ি তৈরির জন্য ওই প্রকল্প, সেই সব গ্রামীণ এলাকা এখন জলে ভাসছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দেবজিৎ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৭ ০৩:৪০
Share: Save:

কেন্দ্রের কাছে ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’ প্রকল্পে ১৬০০ কোটি টাকা পাওনা ছিল রাজ্যের। গত এপ্রিলেই তা হাতে পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কেন্দ্র টাকা না-দেওয়ায় এত দিন হাত গুটিয়ে বসে ছিল রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতর। অবশেষে বার তিনেক চিঠি লিখে, দিল্লিতে দরবার করে ওই প্রকল্পে ১১০০ কোটি টাকা আদায় করেছে রাজ্য। দিন ছ’য়েক আগে সেই টাকা নবান্নে পৌঁছেছে। রাজ্যের অভিযোগ, প্রকল্পের নাম বদলে দেওয়ার কারণেই কেন্দ্র টাকা আটকে রেখেছিল।

কিন্তু যখন টাকা এল, তা ট্রেজারিতে ফেলে রাখা ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই বলে জানাচ্ছেন পঞ্চায়েত কর্তাদের একাংশ। কেন? তাঁদের বক্তব্য, যে অঞ্চলের বাসিন্দাদের বাড়ি তৈরির জন্য ওই প্রকল্প, সেই সব গ্রামীণ এলাকা এখন জলে ভাসছে। মূলত অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল লোকজনকেই ওই অনুদান দেওয়া হয়। বাড়ি না বানাতে পারলে ওই টাকা অন্য খাতে খরচ করে ফেলার আশঙ্কা রয়েছে। তখন কেন্দ্রের কাছে কৈফিয়ত দিতে হবে।

এর মধ্যে ‌অবশ্য রাজনীতিই দেখছেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘ইচ্ছে করেই কেন্দ্র টাকা আটকে রেখেছিল। মাস খানেক আগে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী রামকৃপাল যাদব মেদিনীপুরে এসে বরাদ্দ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। সেটা যে কথার কথা ছিল না, টাকা আটকে রেখে তা বুঝিয়ে দিল কেন্দ্র।’’ নবান্ন সূত্রের খবর, যে ক’টি প্রকল্পে কেন্দ্র অনুদান কমিয়ে দেওয়ায় রাজ্য সেগুলির নাম বদলে দিয়েছিল, ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’ তার অন্যতম। এখন রাজ্যে সেটি ‘বাংলার গৃহ প্রকল্প’ নামেই পরিচিত। নবান্নের দাবি, নাম বদলানোর কারণেই কেন্দ্র টাকা আটকে রাখল।

আরও পড়ুন: লালুর পর নিশানায় মমতাই

রাজ্যের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের গ্রামীণ গৃহ প্রকল্প বিভাগের এক অফিসার। তিনি বলেন, ‘‘প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় জটিলতার জন্য টাকা ছাড়তে দেরি হয়েছে। বাকি টাকাও শীঘ্রই পৌঁছে যাবে।’’

এই প্রকল্পে বাড়ি-পিছু ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৭২ হাজার দেয় কেন্দ্র, বাকি ৪৮ হাজার রাজ্যের। দেড় বছর সময় দেওয়া হয় বাড়ি তৈরির জন্য। নিয়ম অনুযায়ী, অনুদানের ৫০% টাকা আর্থিক বছরের গোড়াতেই রাজ্যকে দিয়ে দেয় কেন্দ্র। পরের কিস্তির টাকা
বাড়ি তৈরি হলে দেওয়া হয়। সেই হিসেবেই ১৬০০ কোটি টাকা বকেয়া পড়ে ছিল দীর্ঘ দিন। এর ফলে বাড়ি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা থেকে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতর। এক পঞ্চায়েত কর্তা বলেন, ‘‘প্রতি বছর আমরা চার লক্ষের বেশি বাড়ি বানিয়েছি। কেন্দ্র আমাদের পুরস্কারও দিয়েছে। সেই সুনাম এ
বার বজায় রাখা যাবে কি না, তা নিয়েই সংশয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE