Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
State News

উত্তরবঙ্গের বন্যায় মৃত্যু ১০ জনের, ত্রাণ নিয়েও বাড়ছে ক্ষোভ

জেলায় পর্যাপ্ত সংখ্যক নৌকা না থাকায় বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিতে অসুবিধা হচ্ছে প্রশাসনের। প্রায় ছ’ফুট জলের তলায় চলে যাওয়া বালুরঘাট শহরের একাংশ এবং চকভৃগু, জলঘর, বোয়ালদার, ডাঙা ও ভাটপাড়া অঞ্চলের দুর্গম এলাকা।

জলমগ্ন ধূপগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা। ছবি: অমিত মোহান্ত।

জলমগ্ন ধূপগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা। ছবি: অমিত মোহান্ত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০১৭ ১৯:৫৫
Share: Save:

উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশই শোচনীয় হচ্ছে। বিপর্যস্ত রেল পরিষেবা। বিচ্ছিন্ন জেলার একাংশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাও। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে ত্রাণ নিয়ে বন্যার্তদের ক্ষোভ। গত শনিবার থেকে আজ, বুধবার পর্যন্ত মোট ১০ জন বন্যা কবলিত মানুষের মৃত্যু হয়েছে প্রশাসন সূত্রে খবর।

গঙ্গারামপুরে পুণর্ভবা এবং বংশীহারিতে টাঙনের নদের জল কমলেও বেড়েছে আত্রেয়ী নদীর জল। ফলে বিপদে পড়েছেন বালুরঘাটের মানুষজন। জেলা জুড়ে পানীয় জলের তীব্র অভাব দেখা দিয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরে অন্তত ১২ লক্ষ মানুষ জলবন্দি হয়ে রয়েছেন। দুর্গম এলাকায় ত্রাণ পৌঁছানোর কোনও ব্যবস্থা নেই। এত প্রশাসনের উপর ক্ষোভ বাড়ছে।

এ দিন বংশীহারি ব্লকের এলাহাবাদ অঞ্চলের বন্যার্তরা বিডিও অফিসে গিয়ে খাবার চেয়ে বিক্ষোভ দেখান। সে সময় অফিস গুদাম থেকে ট্রাক্টরে চাল ও চিঁড়ের বস্তা তোলা হচ্ছিল। বানভাসিরা সমস্ত চাল চিঁড়ের বস্তা লুঠ করে নিয়ে যান।

বন্যার জেরে রেললাইনে ধস নেমেছে। যার জেরে রেল পরিষেবা ব্যাহত। নিজস্ব চিত্র।

জেলায় পর্যাপ্ত সংখ্যক নৌকা না থাকায় বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিতে অসুবিধা হচ্ছে প্রশাসনের। প্রায় ছ’ফুট জলের তলায় চলে যাওয়া বালুরঘাট শহরের একাংশ এবং চকভৃগু, জলঘর, বোয়ালদার, ডাঙা ও ভাটপাড়া অঞ্চলের দুর্গম এলাকা। এর ফলে ওই সব এলাকার বন্যার্তদের কাছে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে পৌঁছতে পারছে না স্বেচ্ছাসেবক সংস্থাগুলিও। অভিযোগ, প্রশাসনের কাছে স্পিডবোট চেয়ে পায়নি তারা।

আরও পড়ুন

‘আমি মরে গেলে কষ্ট পাবে?’ মাকে জিজ্ঞেস করেছিল কিশোর মনোজ

বালুরঘাটের আরএসপি বিধায়ক বিশ্বনাথ চৌধুরী বলেন, “জেলার প্রতিটি ব্লকের সঙ্গে বালুরঘাটের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। বাইরের জেলা থেকেও সড়কপথে ট্রাকে করে আনাজ-সহ রান্নার গ্যাস নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়া এখানে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।”

বালুরঘাটের মতোই শোচনীয় অবস্থা মালদহের। জেলার ফুলহার, মহানন্দা, পূর্ণভবা ও টাঙন নদীর জল ক্রমশই বাড়ছে। মহানন্দার জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। এ দিন চাঁচলের ৮১ নম্বর জাতীয় সড়কে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। মহানন্দার বাঁধ সংস্কারের দাবিতে সরব হন তাঁরা। প্রশাসন সূত্রে খবর, বন্যার কবলে পড়েছেন জেলার প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ মানুষ। মালদহের ২৩টি গ্রাম জলবন্দি। এখানে মোট ২৭টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে।

বন্যার কবলে পড়ে বিপর্যস্ত রেল ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতা ও অসমগামী সমস্ত ট্রেন বন্ধ রয়েছে। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর জল উঠে পড়ায় উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গ, শিলিগুড়ি ও কলকাতার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। একই অবস্থা রেল পরিষেবারও।

আরও পড়ুন

আত্মহত্যা, না কি ধাক্কা? বিমানসেবিকার অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে ধন্দে পুলিশ

শিয়ালদা থেকে উত্তরবঙ্গগামী তিস্তা-তোর্সা এক্সপ্রেস, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস এবং কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেসকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাতিল করা হয়েছে। বাতিল হয়েছে হাওড়া থেকে অসমগামী সরাইঘাট, কামরুপ-কামাক্ষ্যা এক্সপ্রেসের মতো একাধিক ট্রেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE