লালগড়ে ধরা পড়ে এই হানাদার। ফাইল চিত্র।
একুশের আগে কি বাঘ ধরা পড়বে! আপাতত এই প্রশ্নেই কাঁটা বন দফতরের কর্তারা।
লালগড়ে বাঘের ছবি ক্যামেরা-বন্দি হওয়ার পরে পনেরো দিন হতে চলল। অথচ বাঘ ধরা পড়ল না। আগামী ২১ মার্চ পশ্চিম মেদিনীপুর সফরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বছর দুয়েক আগে জেলায় এসে জঙ্গলমহলে হাতি ঠেকাতে ‘ব্যর্থ’ বন দফতরকে ভর্ৎসনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিরক্ত হয়ে বলেছিলেন, ‘‘দফতর রেখে লাভ কী!’’ ফলে, বাঘ ধরতে নারায় ফের মুখ্যমন্ত্রীর ধমক শুনতে হতে পারে বলে আশঙ্কা বনকর্তাদের। জেলার এক বনকর্তার স্বীকারোক্তি, “বাঘের ব্যাপারটা নিয়ে ভয়েই আছি। ফের যদি মুখ্যমন্ত্রী বকাঝকা করেন।” গোয়ালতোড়ের এক বনকর্মীও বলছেন, “হাতি নিয়েই এত সমস্যা। সেখানে এখন আবার বাঘ এসে জুটেছে। জ্বালাতনের অন্ত নেই।”
প্রশাসন সূত্রে খবর, দু’দিনের পশ্চিম মেদিনীপুর সফরে আগামী ২১ মার্চ আসবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতো প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত যা ঠিক রয়েছে তাতে ২১ মার্চ হেলিকপ্টারে জেলায় আসবেন মমতা। ওই দিন ডেবরায় প্রশাসনিক সভা করবেন তিনি। রাতে মেদিনীপুর সার্কিট হাউসে থাকবেন। ২২ মার্চ প্রশাসনিক বৈঠক করবেন মেদিনীপুর পুলিশ লাইনে। বৈঠকে বিভিন্ন দফতরের কাজকর্মের পর্যালোচনা হবে। সেই তালিকায় বন দফতরও রয়েছে।
সেই জানুয়ারির শেষ দিক থেকে জঙ্গলমহলে বাঘের পায়ের ছাপ মিলতে শুরু করেছে। লালগড়, গোয়ালতোড়, ধেড়ুয়া, এমনকী মেদিনীপুর শহরের উপকণ্ঠে মুড়াকাটাতেও বাঘের পায়ের ছাপ মিলেছে। সেই মতো বিভিন্ন জায়গায় সাতটি ট্র্যাপ ক্যামেরা লাগানো হয়েছে, পাতা হয়ে ছাগলের টোপ দেওয়া চারটি খাঁচা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে বাঘের খোঁজে জঙ্গলে ড্রোনও উড়ছে। কিন্তু বাঘ আর ধরা পড়ছে না। উল্টে গোয়ালতোড়ের জঙ্গলে এক ব্যক্তি বাঘের আক্রমণে জখম হয়েছেন বলে দাবি উঠেছে, বাঘ ধরতে গিয়ে বিশেষ গাড়িতে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়ে দুই বনকর্মীরও।
বনকর্তাদের একাংশ মনেপ্রাণে তাই চাইছেন, একুশের আগেই বাঘটা ধরা পড়ে যাক। তাহলে অন্তত মুখ্যমন্ত্রীর ধমকের হাত থেকে রেহাই মিলতে পারে। জেলার এক বনকর্তার কথায়, “এ বার প্রশাসনিক বৈঠকে বাঘের কথা নিশ্চিত ভাবেই উঠবে। জল কতদূর গড়ায় সেটাই দেখার!”
অবশ্য এত দ্রুত বাঘ-বন্দির সম্ভাবনা কম বলে জানাচ্ছেন সুন্দরবন থেকে আসা বিশেষ দলের (ট্র্যাঙ্কুলাইজেশন টিম) এক সদস্য। লালগড়ের জঙ্গলে বসে তিনি বলছিলেন, “বাঘটা শুধু ঘোরাঘুরি করছে। জানি না কবে ও ফাঁদে পা দেবে। এটুকু বলতে পারি, এই বাঘকে ধরা শুধু কঠিন নয়, বেশ কঠিন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy