লোকসভার পরে বিধানসভা নির্বাচনেও ভরাডুবি হয়েছে। সংগঠনের জোর ছিল কোচবিহার বা পুরুলিয়ার মতো যে সব জেলায়, সেখানে হাল সঙ্গিন। সাম্প্রতিক লোকসভা উপনির্বাচনে কোচবিহারে তৃতীয় স্থানে নেমে যেতে হয়েছে তাদের। অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদে এ বার দলের প্রয়াত নেতার উপরেই ভরসা করতে চাইছে ফরওয়ার্ড ব্লক!
তাঁর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী ফ ব-র রেকর্ড সময়ের রাজ্য সম্পাদক অশোক ঘোষকে সমাহিত করা হয়েছিল পুরুলিয়ার সুইসায়। যেখানে নেতাজির স্মৃতিতে গড়ে তোলা আশ্রমকে ঘিরে প্রথম জীবনে অনেক কাজ করেছিলেন অশোকবাবু। তাঁর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সেই সুইসাতেই অশোকবাবুর মূর্তি ও স্মারক বসাতে চলেছে ফ ব। আগামী ৩ মার্চ সেই অনুষ্ঠানকে ঘিরে সুইসায় সমাবেশের পরিকল্পনাও করেছে এই বাম শরিক দল। তাদের লক্ষ্য, অশোকবাবুর নাম সামনে রেখে দীর্ঘ দিন পরে পুরুলিয়ায় বড়সড় জমায়েত করে সংগঠনকে চাঙ্গা করার চেষ্টা করা। যাতে আগামী বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনে অন্তত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জায়গায় থাকে দলটা!
পুরুলিয়া-বাঁকুড়া তো বটেই, পাশের ঝাড়খণ্ড থেকেও ৩ তারিখ লোকজন নিয়ে আসার চেষ্টায় আছে ফ ব। পুরুলিয়া লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের কিছু এলাকায় অশোকবাবু যে হেতু রাজনৈতিক জীবনে কাজ করেছিলেন, তাই তাঁর স্মৃতির কথা বলে সেখানে প্রচার চালাতে পারছে তারা। সংগঠনকে পুনর্গঠন করার জন্য দলের রাজ্য কাউন্সিল অধিবেশন এখনও বকেয়া রয়েছে। পুরুলিয়ায় তেমন সাড়া পাওয়া গেলে সংগঠন ঢেলে সাজার ব্যাপারে কিছুটা উৎসাহ পাবেন ঝিমিয়ে থাকা দলের নেতৃত্ব।
রাজনৈতিক সৌজন্য মেনে নবতিপর অশোকবাবুর শেষকৃত্যে রাষ্ট্রীয় মর্যাদার ব্যবস্থা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য পুলিশের সশস্ত্র বাহিনী গান স্যালুট দিয়েছিল সে দিন। দীর্ঘ দিন ধরে ফ ব দলটা অশোকবাবুর নামের সঙ্গেই অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িয়ে ছিল। তাঁর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী তাই চোখে পড়ার মতো করেই পালন করতে চান এই বাম শরিক দলের নেতৃত্ব। ফ ব-র সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাসের কথায়, ‘‘অশোকদা’র অভাব তো অপূরণীয়। বাংলা-বিহার সংযুক্তিকরণের চেষ্টার বিরুদ্ধে বা অধিবাসীদের জন্য জঙ্গলের অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে পুরুলিয়ায় অশোকদা’র আন্দোলন এখনও মানুষ মনে রেখেছেন। প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে সেখানেই তাঁকে আমরা স্মরণ করতে চাই। নতুন আন্দোলনের অঙ্গীকার করতে চাই।’’
এই স্মরণ অনুষ্ঠানের মোড়কে সংগঠনকে অক্সিজেন জোগানোই যে তাঁদের মূল লক্ষ্য, দলীয় নেতৃত্বের প্রস্তুতিতেই তার ইঙ্গিত মিলছে। দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘পুরুলিয়া বা কোচবিহারে আমাদের ভেঙে পড়া সংগঠন সিপিএম এসে চাগিয়ে দেবে না! সিপিএমের নিজেদেরই এখন হাল খারাপ। ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা তাই নিজেদেরই করতে হবে। পুরুলিয়ায় এ বার সেটাই করতে চাইছি।’’ প্রসঙ্গত, একক শক্তি যাচাই করতে ১৭ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় সমাবেশ করছে আর এক বাম শরিক আরএসপি-ও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy