প্রতীকী ছবি।
রাতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে, ছেলেমেয়েদের খুনের হুমকি দিয়ে এক বধূকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল বীরভূমের সাঁইথিয়ায়। ধর্ষণের পরে মহিলার যৌনাঙ্গে মদের বোতল ঢুকিয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। গুরুতর আহত ওই মহিলা সাঁইথিয়া হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। জেলার পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার জানান, মূল অভিযুক্ত তারক ভাস্করকে সোমবার গ্রেফতার করা হয়েছে। তার দুই সঙ্গীর খোঁজ চলছে। নির্যাতিতার ডাক্তারি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বছর আঠাশের ওই বধূর স্বামী কর্মসূত্রে কাশ্মীরে থাকেন। ন’ বছরের ছেলে এবং চোদ্দো বছরের মেয়েকে সাঁইথিয়ায় নিয়ে থাকেন ওই মহিলা। পেশায় তিনি পরিচারিকা। পুলিশ সূত্রের খবর, বছর চারেক আগে তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে পাড়ারই বিবাহিত যুবক তারকের। তারক একটি চালকলের শ্রমিক। বধূটির বক্তব্য, তারকের সঙ্গে সম্পর্ক থেকে তিনি বেরিয়ে আসতে চেষ্টা করাতেই বিপত্তি। তাঁর কথায়, ‘‘রাগে গত শুক্রবার রাতে পুরনো বাসস্ট্যান্ড এলাকার একটা ফাঁকা জায়গায় তারক আমাকে ধর্ষণ করে।’’ বধূটির দাবি, ‘‘পুরনো ঘনিষ্ঠতা আর ছেলেমেয়ের কথা ভেবে সে কথা তখন পুলিশকে জানাইনি। তবে, ওকে শায়েস্তা করতে বলেছিলাম এলাকার কিছু ছেলেকে।’’
তদন্তে পুলিশ জেনেছে, বধূটির পরিচিতেরা তারককে শনিবার অল্পবিস্তর মারধর করে। তাতে আরও খেপে ওঠে তারক। ‘নির্যাতিতা’র কথায়, ‘‘শনিবার সকালে কাজে যাওয়ার পথে রাস্তা আটকে তারক আমাকে শাসায়। বলে, ‘ধর্ষণ করেছি। এ বার গণধর্ষণ করব’!’’ বধূটির দাবি, তারক বাস্তবে হামলা করবে—এমনটা ভাবতে পারেননি তিনি ।
পুলিশের কাছে বধূটি অভিযোগ করেছেন, রবিবার রাত দেড়টা নাগাদ তাঁর বাড়ির টিনের দরজা ভেঙে দুই বন্ধুকে নিয়ে ঢোকে তারক। ছেলেমেয়েকে খুনের হুমকি দিয়ে তাঁকে নিয়ে যায় অন্য একটি ঘরে। পরে ছেলেমেয়েদের পাশের ঘরে আটকে রেখে তিন জন চড়াও হয় তাঁর উপরে। পুলিশ বধূটিকে হাসপাতালে ভর্তি করায়। ডাক্তারেরা জানিয়েছেন, ওই বধূর অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। তাঁর ছেলেমেয়েদের আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
নির্যাতনের নিরিখে পাঁচ বছর আগে দিল্লির ‘নির্ভয়া-কাণ্ড’ নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা দেশ। সেখানে গণধর্ষণের পরেও বাড়তি অত্যাচার করা হয়েছিল ‘নির্ভয়া’কে। মাস দু’য়েক আগে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে একই ধরনের আক্রমণের শিকার হন এক বৃদ্ধা। সাঁইথিয়ার বধূটির উপরে অত্যাচারও প্রায় সেই পর্যায়ের বলে ঠেকেছে অনেকের কাছে।
মূল অভিযুক্ত তারকের ভাই, রাজু ভাস্কর বলেন, ‘‘ওই বধূর সঙ্গে সম্প্রতি অন্য এক জনের ঘনিষ্ঠতা হয়। দাদা তা নিয়ে প্রশ্ন করেছিল। দাদাকে ফাঁসাতে এখন মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy