আশ্বাস: শিবিরে থাকা দলীয় কর্মীদের সঙ্গে কথা বলছেন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। নিজস্ব চিত্র
গভীর রাতে জানালার কাঁচ ভেঙে পেট্রোল বোমা ফেলা হয়েছিল বাড়িতে। তিন বছরের ছেলেকে আঁকড়ে রাতেই বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পড়শির বাড়িতে আশ্রয় নেন। আগুনে ছাই হয়ে গিয়েছে বাড়ি। থাকার জায়গা নেই। ছেলেকে নিয়ে নেমে এসেছেন শিলিগুড়ির ত্রাণশিবিরে। সোমবার তিনি অভিযোগ করলেন, ‘‘আমার স্বামী তৃণমূল সমর্থক। মন্ত্রিসভার বৈঠকের দিন রাতেই ওঁকে হুমকি দিয়ে এলাকা ছাড়া করা হয়েছিল। আমাদেরও থাকতে দেবে না বলে বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে।’’
বেশ কিছু পরিবার-সহ পাহাড়ের বাসিন্দারা যাঁরা হুমকি, হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে শিলিগুড়িতে নেমেছেন তাঁদের থাকার জন্য ত্রাণ শিবির চালু করেছে তৃণমূল। শিলিগুড়ির খালপাড়ার একটি ভবনে সকলকে রাখার ব্যবস্থা হয়েছে। সোমবার সকালে রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী তথা দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের সভাপতি গৌতম দেব ওই ভবনে গিয়ে আশ্রিতদের সঙ্গে কথা বলেন। মন্ত্রী জানিয়েছেন, সোমবার পর্যন্ত ৩১ জন রয়েছেন শিবিরে। আশ্রিতরা সকলেই তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক বলে দাবি করেছেন গৌতমবাবু। দার্জিলিং পাহাড় তৃণমূলের সভাপতি রাজেন মুখিয়াও এ দিন শিলিগুড়িতে এসে আশ্রিতদের সঙ্গে কথা বলেন।
বিরোধী দলের সমর্থক হলেই যে পাহাড়ে হামলা চলছে, সাধারণ বাসিন্দাদের দলে দলে পাহাড় ছাড়া তারই প্রমাণ বলে দাবি গৌতমবাবুর। তাঁর অভিযোগ, ‘‘পাহাড়ে যে স্বৈরতন্ত্র চলছে সে ঘটনাই এর থেকে প্রমাণ হয়। জাতীয় পতাকা সামনে রেখে অগণতান্ত্রিক ভাবে আন্দোলন চলছে।’’
সূত্রের খবর ত্রাণ শিবির তৈরি করে মোর্চার ওপরেই চাপ বাড়াতে চাইছে তৃণমূল। ইতিমধ্যে তৃণমূল বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল পাহাড়ের পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য সরকারের ওপর চাপ তৈরি করতে চাইছে। বাহিনী প্রত্যাহার করে আলোচনায় বসার দাবিও জানিয়েছেন। তবে এখনই পাহাড়ে বাহিনী তুলে নিলে হিতে বিপরীত হতে পারে এবং মোর্চা যে বিরোধীদের ওপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে তাও মোর্চা বিরোধীদের ভয়ে পাহাড় ছাড়ার ঘটনা প্রমাণ করছে বলে তৃণমূলের দাবি। পাহাড়ে যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই ত্রাণ শিবিরই তার প্রমাণ বলে গৌতমবাবুও অভিযোগ করেছেন।
মোর্চা প্রধান বিমল গুরুঙ্গের খাস তালুক সিংমারি, টুকভার-সহ লেবঙের বিভিন্ন এলাকা থেকে বাসিন্দারা শিবিরে এসেছেন। শিবিরে ১০ জন মহিলা এবং ৩ শিশু রয়েছে। আগামী ২২ জুন শিলিগুড়িতে সর্বদল বৈঠক হচ্ছে। তার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। আগামীকাল শিলিগুড়িতে কয়েকটি দফতরের সচিবরা আসছেন। বৈঠকের দু’দিন আগে গৌতমবাবুর আর্জি, ‘‘যারা পাহাড়ে অশান্তি চালাচ্ছেন তাদের এখনও বলছি, আলোচনায় আসুন। কারণ পাহাড়ে গুন্ডামি বরদাস্ত করা হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy