মৃণাল সেনের স্ত্রী, অভিনেত্রী গীতা সেন চলে গেলেন। মাস দেড়েক আগে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে বাড়িতেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
মৃণাল সেনের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-বন্ধু মাত্রেই জানেন, গীতা প্রসঙ্গে বলতে গেলে মৃণাল প্রায়ই বলতেন ‘এক সোম আমাকে জীবন দিয়েছে, আর এক সোম দিয়েছে প্রতিষ্ঠা’।
অর্থাৎ ‘ভুবন সোম’ তাঁকে যেমন প্রতিষ্ঠা দিয়েছে, তেমনই গীতা সোম (বিয়ের আগের পদবী) তাঁর জীবন!
দীর্ঘ পঁয়ষট্টি বছরের বিবাহিত জীবন। আইপিটিএ-র দলে তখন ঋত্বিক ঘটক, বিজন ভট্টাচার্য, তাপস সেনেরা। সেই নাটকের সূত্রেই প্রাথমিক পরিচয় উত্তরপাড়ার গীতার সঙ্গে মৃণালের। উৎপল দত্তের ‘লিটল থিয়েটার গ্রুপে’র নাটকে অভিনয় করতেন গীতা। তার পর তিনি যখন ‘দুধারা’ ছবিতে যখন অভিনয় করতে যান, তখন মৃণালও সবে সবে ছবির জগতে পা রেখেছেন। ‘দুধারা’র গল্পকার মৃণালই। সেই সূত্রে আরও গভীর হয় সম্পর্ক।
মৃণাল সেনের একমাত্র পুত্র কুণাল। থাকেন শিকাগোতে। এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকার চিফ টেকনোলজি অফিসার তিনি। সোমবার বললেন, ‘‘মা যখন ‘দুধারা’য় অভিনয় করছিলেন তখন ওঁকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব পড়ত বাবার। শ্যুটিং শেষে মাকে উত্তরপাড়ায় দিতে যেতেন বাবা।’’
পরিচয় ঘনিষ্ঠতা...তার পর একে একে জীবন যে ভাবে গড়িয়ে যায়। ঋত্বিক ঘটকের ‘নাগরিক’, মৃণালের ‘কলকাতা ৭১’, ‘কোরাস’, ‘একদিন প্রতিদিন’, ‘আকালের সন্ধানে’, ‘খারিজ’, ‘খণ্ডহর’, ‘মহাপৃথিবী’ এবং শ্যাম বেনেগালের ‘আরোহণ’-এ গীতার অভিনয় চিরকাল মনে থাকবে।
প্রসঙ্গত গীতার পিসতুতো ভাই ছিলেন অনুপকুমার। সে দিক দিয়ে দেখতে গেলে ক্রমান্বয়ে নয়, বরং শেষ থেকেই যেন পরপর যাওয়া। দিদিকে রেখে যেমন চলে যান অনুপকুমার, তেমনই তিরানব্বইয়ের মৃণালকে রেখে চলে গেলেন ছিয়াশির গীতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy