অস্ত্রোপচারের আগে দেহে বিঁধে থাকা সূচ। —ফাইল চিত্র।
চিকিত্সকদের সব রকম প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বাঁচানো গেল না পুরুলিয়ার সেই শিশুকন্যাটিকে। শেষ পর্যন্ত মৃত্যুই হল তার। শুক্রবার ভোর ৩টে নাগাদ শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে।
চিকিত্সকেরা সন্দেহ করছেন নিউমোনিয়ার কারণেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, বুকে প্রচন্ড সংক্রমণ ছিল। অস্ত্রোপচারের পর সূচগুলো তার শরীর থেকে বের করা হয়েছিল। বুধবার রাত থেকেই শ্বাসকষ্ট শুরু হয় শিশুটির। তা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য নেবুলাইজেশনেরও ব্যবস্থা করা হয়, অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও অবস্থার কোনও রকম উন্নতি না হওয়ায় বৃহস্পতিবারে অ্যান্টিবায়োটিক পরিবর্তন করা হয়। শিশুটি চিকিত্সায় কোনও রকম সাড়া না দেওয়ায় উদ্বগে ছিলেন চিকিত্সকরা। অবশেষে এ দিন ভোরে মৃত্যু হয় শিশুটির। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, ময়নাতদন্তের পর শিশুটিকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: ১৫ দিনেই পাহাড় ছাড়লেন রাজ কানোজিয়া
গত মঙ্গলবার পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে এক মহিলা তাঁর সাড়ে তিন বছরের শিশুকন্যাকে জ্বর, সর্দি-কাশির উপসর্গ নিয়ে ভর্তি করান। শিশুটিকে পরীক্ষা করতে গিয়ে চিকিত্সকরা আঁতকে ওঠেন। দেখা যায়, শিশুটির শরীরের ভিতরে বিভিন্ন জায়গায় বেশ কয়েকটি সূচ রয়েছে। সেখান থেকে রেফার করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। সূচ কী ভাবে বের করা হবে তা নিয়ে আলোচনা করতে এসএসকেএম হাসপাতালের সব ক’টি বিভাগের প্রধানরা একটি বৈঠক করেন। সেখানেই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
গত ১৮ জুলাই শিশুটির অস্ত্রোপচার করেন চিকিত্সকরা। মোট সাতটি সূচ অস্ত্রোপচার করে বের করা হয়। সূচগুলির মধ্যে তিনটি লিভারে, দু’টি অন্ত্রে, একটি যোনিতে এবং একটি অগ্ন্যাশয়ে আটকে ছিল। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছিল, সাধারণ কাপড় সেলাইয়ের মতো সূক্ষ্ম নয় সূচগুলি। বরং বস্তা সেলাইয়ের সূচের মতো মোটা ও লম্বা। সূচগুলিতে মরচেও ধরে গিয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চিকিত্সকরা আরও জানান, সবচেয়ে বেশি সূচ (৩টি) বেঁধানো ছিল যকৃতে। সুচগুলি ইঞ্চি চারেক লম্বা। বেশ কিছু দিন আগে বাচ্চাটির শরীরে ঢোকানো হয় ওই সূচগুলো। বিভিন্ন অঙ্গে বিঁধে থাকলেও সূচগুলো শরীরের ভিতরে কোনও রক্তক্ষরণ ঘটায়নি।
ওই দিনই এসএসকেএম হাসপাতালের অধিকর্তা অজয় রায় বলেন, ‘‘অস্ত্রোপচার সফল। তবে বিপদমুক্ত হতে আরও ৭২ ঘণ্টা সময় দরকার।’’ তিনি জানান, শিশুটিকে ‘পেডিয়াট্রিক ইনটেন্সিভ কেয়ার ইউনিট’ (পিকু)-এ বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাঁচানো গেল না শিশুকন্যাটিকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy